বেসরকারি বড় বড় হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স নবায়ন না করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্ট বলেছেন, বারডেমের মতো বেশ কিছু বড় বড় হাসপাতালেরও লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। তাহলে এখন এসব কীভাবে চলবে?
বৈধ বেসরকারি হাসপাতালের তালিকা প্রকাশ ও রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটের শুনানিতে বুধবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি তারিক উল হাকিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব প্রশ্ন তোলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
শুনানিকালে আইনজীবী ইশরাত হাসান আদালতকে বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে লাইসেন্স আছে মাত্র এক-তৃতীয়াংশের। মোট বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ১৭ হাজার ২৪৪টি, এরমধ্যে লাইসেন্স আছে ৫ হাজার হাসপাতালের। কোন ৫ হাজার হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে নেই। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনা সংক্রান্ত আইনে লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক করা আছে। অথচ এরপরও লাইসেন্স ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল চলছে। সরকার কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য অনেক হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিও করে ফেলেছে। রিজেন্ট হাসপাতালের মতো অনেক হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকারেরও দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।’
এ সময় আদালত বলেন, ‘এগুলো তো হচ্ছেই। এগুলো নিয়ে তদন্ত হচ্ছে— মামলাসহ অনেক কিছুই হচ্ছে।’
জবাবে রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান আদালতকে বলেন, ‘আমরা রিট পিটিশনের মাধ্যমে বৈধ বেসরকারি হাসপাতালের তালিকা চাচ্ছি। এই তালিকা ওয়েবসাইটে আপলোড করলে আমরা বৈধ হাসপাতাল সম্পর্কে জানতে পারবো।’
রিটকারী আইনজীবীর শুনানিকালে আদালত প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘বারডেমের মতো বেশ কিছু বড় বড় হাসপাতালেরও লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। তাহলে এখন এসব কীভাবে চলবে?’
এরপর আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৯ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ১৯ জুলাই এসব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ পাঠান। তবে সে নোটিশের জবাব না পেয়ে এই রিট দায়ের করা হয়।
গত ২৬ জুলাই বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া করোনা টেস্টের শিকার ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ, তাদের কাছ থেকে টেস্টের নামে নেওয়া টাকা ফেরত এবং প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্তকে অন্তর্বর্তীকালীন ২৫ হাজার টাকা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করা হয়। রিটে বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায় বন্ধে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
পাশাপাশি রিট আবেদনে দেশের সব বৈধ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের তালিকা প্রকাশ এবং প্রতিটি থানায় স্বাস্থ্য মনিটরিং কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ রিট দায়ের করেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়।