বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ১১ কোটি দুই লাখ ২৭ হাজার ৮শ ২৭ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও এমডি মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি)।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদ ও মাসুদসহ আরও ৬-৭ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিসানুল হক।
সিআইডি জানায়, রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কে. সি এস লিমিটেড, রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেডের নামে সাহেদ-মাসুদসহ আরও ৬-৭ জন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মামলাটির বাদী হয়েছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম(ফিন্যান্সশিয়াল ক্রাইম)। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত আসামিরা ১১ কোটি দুই লক্ষ সাতাশ হাজার আটশত সাতানব্বই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
মোহাম্মদ সাহেদের অর্জিত সম্পদের প্রধান উৎস প্রতারণা ও জালিয়াতি বলে জানিয়েছে সিআইডি। প্রতারণার মাধ্যমে করা আয় লেনদেনের সুবিধার্থে সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কে. সি. এস লিমিটেড ও অন্যান্য অস্তিত্ববিহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩ টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেছে। এই ব্যাংক হিসাবগুলো খোলার সময় ফরমে সাহেদ নিজেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এমডি মাসুদ পারভেজ মোহাম্মদ সাহেদের পক্ষে হিসাবসমূহ প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করেছে, যা সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন পর্যালোচনা করে সিআইডি জানায়, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নগদ টাকা জমা করা হয়েছে। মোহাম্মদ সাহেদ ও তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ৪৩ টি ব্যাংক হিসাবে সর্বমোট জমা ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং তার মধ্যে উত্তোলন নব্বই কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে তার হিসাবগুলোর বর্তমান স্থিতির পরিমাণ ২ দুই কোটি ৪ লাখ টাকা যার মধ্যে ৮০ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা ৩ তিন কোটি ৯৮ লাখ টাকা, মোট উত্তোলনকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং বর্তমান স্থিতি ৫ হাজার টাকা।
‘প্রতারণা’ ও ‘জালিয়াতি’ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২(শ) (৫) ও (৬) ধারা অনুযায়ী সম্পৃক্ত অপরাধ। এসকল অপরাধের অভিযোগে মোহাম্মদ সাহেদ ও সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩০ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।