X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি নির্বাচনে সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হোক, চান না প্রধানমন্ত্রী

পাভেল হায়দার চৌধুরী
২২ এপ্রিল ২০১৬, ২১:০৪আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৬, ২০:৩৩


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হবে, এমন কিছু হতে দিতে চান না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনে আর কোনও রকম অনিয়ম, ত্রুটিও দেখতে চান না তিনি। এ লক্ষ্যে নির্বাচনি মাঠে দলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়াবাড়ি না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতরার বলেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী। দলীয় নেতাকর্মীদের টেলিফোনে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সহিংসতা নয়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে। বিশৃঙ্খা-অনিয়ম হলে, অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা  নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সতর্কবার্তা পৌঁছে দেন। শুধু তাই নয়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নির্বাচন কমিশনের কাছেও বার্তা পাঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলমের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দেয়।

আরও পড়তে পারেন:  বাংলাদেশ-তাইওয়ান পতাকা তাইওয়ানের ত্রাণ ফেরত পাঠালো বাংলাদেশ

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহবুবউল আলম হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোনও রকম অনিয়ম, ক্রটি দেখতে চান না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বিশৃঙ্খলার অভিযোগ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সূত্র জানায়, গত দুই ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব সহিংসতা, কেন্দ্র দখল, ভোট কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে, তাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়বে। প্রতিপক্ষের হাতে রাজনৈতিক ইস্যু তুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এ কারণে এই পর্যায়ে, আর কোনও সহিসংসতা, ভোট কাটাকাটি ঘটনা ঘটুক, তা চান না খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া, জোটের শরিক দলগুলোর নেতারাও যে প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার সমালোচনা করছেন। 

ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারকরা বলছেন, তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক, তা চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে আরও কঠোর হতে বলা হয়েছে। আর এ কারণে শনিবার (২৩ এপ্রিল) তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে মনে করছেন শাসক দলের নীতি-নির্ধারকরা। বাকি ধাপের নির্বাচনগুলো শতভাগ সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে মনে করেন তারা। 

আওয়ামী লীগ মনে করে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের জয়-পরাজয় সরকারের জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হবে না। তাই প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনে জিতে আসার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন, নির্বাচনে প্রভাব খাটালে রাজনৈতিক বিজয় আসবে না। বরং সরকারবিরোধী আন্দোলনের ইস্যু ও সরকারের সমালোচকদের জন্য খোরাক জোগাবে। এ কারণে এ পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়তে পারেন:  ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ যেভাবে সরকারের মুঠোয় যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক

শীর্ষ কয়েকজন নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিছুটা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অতীতের চেয়ে এবারে সংখ্যা একেবারেই নগণ্য বলেও মনে করেন তারা। তারা বলেন, শনিবার অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে ইতোমধ্যেই কয়েকটি পদক্ষপ নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ৬১৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ দফার নির্বাচনে কোথাও কোনও সহিংসতা ঘটুক আপাতত তা চান না ক্ষমতাসীনরা। গত দুই ধাপে সারাদেশে প্রায় ১ হাজার ৩০০ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার মাত্রাও একেবারেই কম ছিল না। এসব সহিংসতার ঘটনায় জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। এর ফলে বাকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করে তুলতে সরকার একটি ভূমিকা নিয়েছে। 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করেন। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা করা দরকার তাই করবেন। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনা অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। বর্তমান সরকারের অধীনে সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হচ্ছে এবং হবে। সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দিতে প্রস্তুত আছি।

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
দুই রঙে ভিভোর নতুন স্মার্টফোন
দুই রঙে ভিভোর নতুন স্মার্টফোন
জিম্বাবুয়ের সিরিজের জন্য বাংলাদেশের তিন ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা
জিম্বাবুয়ের সিরিজের জন্য বাংলাদেশের তিন ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা
পটুয়াখালীর খালে ভাসছে ‘টর্পেডো’সদৃশ বস্তু, স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক 
পটুয়াখালীর খালে ভাসছে ‘টর্পেডো’সদৃশ বস্তু, স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক 
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে