X
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩
১৬ চৈত্র ১৪২৯

আত্মহত্যা কেন মহাপাপ?

মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩০আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩০

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জান্নাতের বিনিময়ে ইমানদারদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন। (সুরা: ত‌ওবা, আয়াত নং-১১১)।

তাই মানুষ নিজের সম্পদ ও জীবনের মালিক নয়। মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা। তাই মানুষের উচিত আল্লাহর হুকুম মতো নিজের জীবন ও সম্পদ পরিচালনা করা। জীবন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত।

এ কারণে হত্যা ও আত্মহত্যা হারাম ও মহাপাপ। আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেন, তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করো না। (সুরা:বাকারা, আয়াত নং-১৯৫)।

পত্র-পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী আত্মহত্যার প্রবণতা তরুণ-তরুণীদের মাঝে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। হতাশা, ক্ষোভ, রাগ ও জিদের বশীভূত হয়ে তারা আত্মহত্যা করছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। প্রকৃত ইমানদার কোনও দিন হতাশ হয় না। আল্লাহর রহমত ও দোয়ার প্রত্যাশী থাকে।

প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেছেন। আল্লাহ পাক বলেছেন, তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সুরা: বাকারা, আয়াত নং-১৫৩)।

দুনিয়ার হতাশা থেকে মুক্তির জন্য আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়। যারা পরকাল বিশ্বাসী তারা কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না। পরকালে আত্মহত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি হবে।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, যে যেভাবে আত্মহত্যা করবে, তার শাস্তি সব সময় সেভাবে হতে থাকবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করে তাকে দোজখের মধ্যে এভাবেই লোহার মাধ্যমে অনবরত নিজেকে হত্যা করার শাস্তি প্রদান করা হবে। যে বিষ পান করে তাকে অনবরত বিষ পান এবং যে পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করে তাকে এভাবেই দোজখে অনবরত শাস্তি প্রদান করা হবে। (বুখারি শরিফ, হাদিস নং-৫৭৭৮)।

নিয়মিত ধর্মীয় বিষয়াদি পালন করলে যেমন নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও দান-সদকার কারণে হতাশা কেটে যায়। পরকালের শাস্তির ভাবনা অন্তরে জাগ্রত হয়। প্রকৃত ইমানদার কোনোদিন আত্মহত্যা করতে পারে না।

মিশকাত শরিফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ মিরকাতুল মাফাতিহ-এর লেখক আল্লামা মোল্লা আলি কারি রহ. হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,যদি কেউ আত্মহত্যাকে বৈধ মনে করে করে থাকে, তাহলে চিরদিন সে জাহান্নামে থাকবে। যদি হতাশা বা অন্য কোনও কারণে না বুঝে আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে সে হারাম ও মহাপাপ করেছে। সে অন্যান্য গুনাহগারদের মতো জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার পর একদিন জান্নাতে যাবে।

আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা, সামাজিক সচেতনতা, মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক, একজন মুসলিম অন্যজনের খোঁজখবর নেওয়া এবং মানুষের মনের কথা জানা ও জানানোর মাধ্যমে আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

লেখক: মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও খতিব, পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদ, গুলিস্তান, ঢাকা

[email protected]

/এসটিএস /এফএ/
সম্পর্কিত
রোজার নিয়ত কী, কীভাবে করবেন?
রমজানে যেসব হাফেজ তারাবি পড়াবেন না, তাদের করণীয় কী
‘সকল হজযাত্রীকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে’
সর্বশেষ খবর
আমাদের জনশক্তি মধ্যপ্রাচ্যকে দাঁড় করিয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
আমাদের জনশক্তি মধ্যপ্রাচ্যকে দাঁড় করিয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পুলিশের পোশাক পরে অনন্ত বললেন, ‘টুইস্ট আছে’
পুলিশের পোশাক পরে অনন্ত বললেন, ‘টুইস্ট আছে’
১৭ বছর পেরিয়ে বাংলাভিশন এবং ‘সুইট কিস’
১৭ বছর পেরিয়ে বাংলাভিশন এবং ‘সুইট কিস’
বাংলাদেশের প্রথম মাদ্রাসা কোনটি?
বাংলাদেশের প্রথম মাদ্রাসা কোনটি?
সর্বাধিক পঠিত
প্রথম আলোর কার্যালয় ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার
প্রথম আলোর কার্যালয় ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার
মামুনুর রশীদের মন্তব্যে একাত্ম হয়ে শিল্পী সংঘের প্রতিবাদ
মামুনুর রশীদের মন্তব্যে একাত্ম হয়ে শিল্পী সংঘের প্রতিবাদ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা
বাখমুতে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করলেন ওয়াগনার প্রধান
বাখমুতে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করলেন ওয়াগনার প্রধান
উত্তরার পথে পথে পত্রিকা বিক্রি করছিলেন অভিনেত্রী!
উত্তরার পথে পথে পত্রিকা বিক্রি করছিলেন অভিনেত্রী!