X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আত্মহত্যা কেন মহাপাপ?

মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩০আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩০

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জান্নাতের বিনিময়ে ইমানদারদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন। (সুরা: ত‌ওবা, আয়াত নং-১১১)।

তাই মানুষ নিজের সম্পদ ও জীবনের মালিক নয়। মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা। তাই মানুষের উচিত আল্লাহর হুকুম মতো নিজের জীবন ও সম্পদ পরিচালনা করা। জীবন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত।

এ কারণে হত্যা ও আত্মহত্যা হারাম ও মহাপাপ। আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেন, তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করো না। (সুরা:বাকারা, আয়াত নং-১৯৫)।

পত্র-পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী আত্মহত্যার প্রবণতা তরুণ-তরুণীদের মাঝে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। হতাশা, ক্ষোভ, রাগ ও জিদের বশীভূত হয়ে তারা আত্মহত্যা করছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। প্রকৃত ইমানদার কোনও দিন হতাশ হয় না। আল্লাহর রহমত ও দোয়ার প্রত্যাশী থাকে।

প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেছেন। আল্লাহ পাক বলেছেন, তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সুরা: বাকারা, আয়াত নং-১৫৩)।

দুনিয়ার হতাশা থেকে মুক্তির জন্য আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়। যারা পরকাল বিশ্বাসী তারা কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না। পরকালে আত্মহত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি হবে।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, যে যেভাবে আত্মহত্যা করবে, তার শাস্তি সব সময় সেভাবে হতে থাকবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করে তাকে দোজখের মধ্যে এভাবেই লোহার মাধ্যমে অনবরত নিজেকে হত্যা করার শাস্তি প্রদান করা হবে। যে বিষ পান করে তাকে অনবরত বিষ পান এবং যে পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করে তাকে এভাবেই দোজখে অনবরত শাস্তি প্রদান করা হবে। (বুখারি শরিফ, হাদিস নং-৫৭৭৮)।

নিয়মিত ধর্মীয় বিষয়াদি পালন করলে যেমন নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও দান-সদকার কারণে হতাশা কেটে যায়। পরকালের শাস্তির ভাবনা অন্তরে জাগ্রত হয়। প্রকৃত ইমানদার কোনোদিন আত্মহত্যা করতে পারে না।

মিশকাত শরিফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ মিরকাতুল মাফাতিহ-এর লেখক আল্লামা মোল্লা আলি কারি রহ. হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,যদি কেউ আত্মহত্যাকে বৈধ মনে করে করে থাকে, তাহলে চিরদিন সে জাহান্নামে থাকবে। যদি হতাশা বা অন্য কোনও কারণে না বুঝে আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে সে হারাম ও মহাপাপ করেছে। সে অন্যান্য গুনাহগারদের মতো জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার পর একদিন জান্নাতে যাবে।

আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা, সামাজিক সচেতনতা, মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক, একজন মুসলিম অন্যজনের খোঁজখবর নেওয়া এবং মানুষের মনের কথা জানা ও জানানোর মাধ্যমে আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

লেখক: মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও খতিব, পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদ, গুলিস্তান, ঢাকা

[email protected]

/এসটিএস /এফএ/
সম্পর্কিত
হজ কার ওপর ফরজ এবং এর কী ফজিলত
ইসলামিক অলিম্পিয়াড অত্যন্ত তাৎপর্যবহ: ধর্ম উপদেষ্টা
সমাজ পরিবর্তনে ইসলামি সাহিত্যের নির্দেশনা কাজ করে: ধর্ম উপদেষ্টা
সর্বশেষ খবর
রূপগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
রূপগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
আটক আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ছাত্রদল নেতাকর্মীর
আটক আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ছাত্রদল নেতাকর্মীর
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে অস্বস্তিতে ভারত
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে অস্বস্তিতে ভারত
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
সর্বাধিক পঠিত
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
বিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগবিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেফতার
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেফতার