X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

রমজান মাসকে যেভাবে স্বাগত জানাতেন রাসুল (সা.)

বেলায়েত হুসাইন
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:০০আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:০০

পবিত্র রমজান মাস রাসুল (সা.)-এর কাছে এতটাই প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, তিনি এই মাস পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে খুব বেশি প্রার্থনা করতেন। রজব থেকেই তিনি রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া এবং রমজান সংক্রান্ত আমল পরিপালনের বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করে দিতেন।

একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবায়ে কেরামকে পরপর তিনবার প্রশ্ন করলেন– ‘কোন জিনিস তোমাদের স্বাগত জানাবে এবং তোমরা কোন জিনিসকে স্বাগত জানাতে যাচ্ছ?’

এর উত্তরে হজরত ওমর (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কোনও ওহি অবতীর্ণ হবে?’ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন, ‘না’। ওমর বললেন, ‘কোনও শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হতে যাচ্ছে?’ রাসুল (সা.) এবারও উত্তর দিলেন, ‘না’। তখন ওমর (রা.) বললেন, ‘তাহলে কী?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ-তায়ালা রমজানের প্রথম রাতে কিবলাবাসী সকলকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস : ১৫০২)

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রজব মাসের চাঁদ উদিত হলে রাসুল (সা.) এই দোয়া পড়তেন। দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ হলো– ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দিন এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (আল মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৩৯৩৯)

হজরত উসামা বিন জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি বললাম– হে আল্লাহর রাসুল, শাবান মাসে আপনি যে পরিমাণ রোজা রাখেন, অন্য মাসে তো আমি তা দেখি না। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী এই মাসটি এমন যে– এ মাসে মানুষ উদাসীন থাকে, অথচ এই মাসে বিশ্বপ্রতিপালকের কাছে আমলগুলো পেশ করা হয়। আর আমি চাই আমার আমল আমি রোজা রাখা অবস্থায় পেশ করা হোক।’ (মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল, হাদিস : ২১৮০১)

উম্মুল মুমিনিন হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) বর্ণনা করেন যে– ‘তিনি কখনও আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে পরপর দুই মাস রোজা রাখতে দেখেননি, তবে তিনি শাবান মাসে বেশি পরিমাণে রোজা (নফল) রাখতেন। তাঁর এই রোজা রমজানের রোজার সঙ্গে মিলে যেতো।’ (নাসাঈ, হাদিস : ২১৭৫)

শাবান মাস রমজানের প্রস্তুতির সময়। এজন্য শাবানে ওই সব আমল বেশি পরিমাণে করা, যেগুলো রমজানে করতে হবে। যেমন– রোজা রাখা, নফল নামাজ পড়া ও পবিত্র কোরআনে কারিম তিলাওয়াত করা ইত্যাদি।

আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি তার গ্রন্থ লাতায়েফুল মাআরেফে লিখেছেন, ‘শাবান মাসে রোজা রাখা ও কোরআন তিলাওয়াতের পরিমাণ এজন্য বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে রমজানের বরকত ও রহমত পরিপূর্ণরূপে হাসিল করার প্রস্তুতি হয়ে যায় এবং মন রহমানের আনুগত্যের ওপর সন্তুষ্ট ও সুস্থির হয়ে যায়।’

হজরত আনাস (রা.) রমজানের আগের মাস শাবানে সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর আমলের বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘শাবান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুসলমানেরা পবিত্র কোরআনের প্রতি ঝুঁকে পড়তো এবং নিজেদের মাল-সম্পদের জাকাত প্রদান করতো, যাতে গরিব-মিসকিনরা রমজান মাসটি স্বাচ্ছন্দ্যে ও সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারে।’ (লাতায়েফুল মাআরেফ : ২৫৮)

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী; শিক্ষক, মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ, ঢাকা।

/এসটিএস/এমএস/
সম্পর্কিত
ঈদুল ফিতরে করণীয়
চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ বৃহস্পতিবার
রমজানে নবীজির রাতের আমল
সর্বশেষ খবর
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না