ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য এই ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে একটি আশার আলো, একটি প্রত্যাশা, একটি নতুন ভোর। এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যই ফ্যাসিবাদী সরকারকে বাংলার মাটি থেকে হটাবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য মাথা নোয়াতে জানে না। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মাথা নোয়াতে পারে না। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ মাথা নোয়াতে জানে না।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) এর মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের আয়োজনে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক- বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঐক্যের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এসব কথা বলেন।
বেলা ২টা থেকেই কর্মীরা আইডিইবি মিলনায়তনে আসতে শুরু করে। ৩টা বাজার আগেই পুরো হল প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে ও0ঠে। হলজুড়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সরকারবিরোধী স্লোগান। দলের নেতারা আসতে থাকে আর কর্মীদের স্লোগানও জোরালো হতে থাকে।
তবে সময় যত গড়াতে থাকে কর্মীদের স্লোগানের জোরও কমতে থাকে। একপর্যায়ে দেখা যায় অতিথিরা বক্তব্য দিচ্ছেন আর নেতাকর্মীদের কেউ চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছেন, কেউ সেলফি তুলছেন। আর পেছনের সারির বেশিরভাগ কর্মীই নিজেদের মতো করে গল্প করে চলেছেন। মঞ্চে কে বক্তব্য দিচ্ছে জানতে চাইলে তারা নামও বলতে পারেনি। যে যার মতো হলের গেইট দিয়ে বের হচ্ছে আর ঢুকছে। শুধু অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে ও শেষ হওয়ার পরই স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
সন্ধ্যা ৬টায় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মতবিনিময় সভার সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠান শেষে বের হবার পর আইডিইবি'র গেটের ভেতরে ১০-১৫ জন কর্মী নিজেদের মধ্যেই কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর নিজেরাই তা মীমাংসা করে স্থান ত্যাগ করে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক রাশেদ ইকবাল খান বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ডকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। আজ প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে দলীয় শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। তাদের শিক্ষকতার যোগ্যতা কতটুকু আছে সেটা আপনারা বলতে পারবেন। তারা (সরকার) এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে যেন কোনও মানসম্মত সুনাগরিক মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করছে।’
ঐক্যের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গীতিকার ও কবি লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদের পতন আপনাদের হাত ধরেই হবে।’
ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে যে আন্দোলনগুলো সফল হয়েছে, যে দফাগুলো তারা বিভিন্ন সময়ে দিয়েছিল, সে দফাগুলো পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা? এগুলো কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য করতে হবে বলে মন্তব্য করেন লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘এই আন্দোলনের যখন শুভ সূচনা হয়েছে তখন এর শুভ সমাপ্তি হবেই। আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে এই আন্দোলনকে বাস্তবায়ন করতে হবে। আর আমরা যদি পরাজিত হই তাহলে এই দেশ আর স্বাধীন থাকবে না। ২৮ অক্টোবর যে মহাসমাবেশ আসছে সেটা আমাদের সফল করতেই হবে। আমাদের এর জন্য রক্ত দিতে হবে। যদি আমরা তা করতে পারি তাহলে ২৮ তারিখেই এই সরকারের পতন হবে।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। এছাড়া বক্তব্য রাখেন মুফতি জাকির হোসাইনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।