তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যে জড়িত ছিলেন তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ হচ্ছে, তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সবার পুনর্বাসন করেছিলেন, বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন এবং দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আরও প্রমাণ হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করার জন্য ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ আইন পাস করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান নামের যে একজন মানুষ আছে, সেটি ৭৫-এর আগে দেশের মানুষ জানতো না। জিয়াউর রহমান নিজের জীবদ্দশায় কখনও বলেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন, ঘোষক তো দূরের কথা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর হত্যাকারীরা জিয়াউর রহমানকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করেছিল। ঘটনাপ্রবাহ বলে, পাকিস্তানিদের অনুচর হিসেবে তিনি (জিয়াউর রহমান) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। না হলে তিনি কেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর যারা পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের দেশে এনে পুনর্বাসিত করলেন?
রবিবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৫ আগস্ট উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিহাসের সত্যগুলো তুলে ধরতে হলে কিছু কথা বলতেই হয়; সমস্ত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মানুষ বিএনপিতে যোগাদান করেছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই আমি বলতে চাই, তার বাবাও একজন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মানুষ ছিল। স্বাধীনতার পর অনেকদিন তার বাবার সঙ্গে তিনিও আত্মগোপনে ছিলেন। এরকম নাম ধরে ধরে আমি লজ্জা দিতে চাই না। বহু মিটিংয়ে আমি এ কথা আমি বলেছি। কিন্তু এর কোনও জবাব তারা দেয়নি। কারণ কোনও জবাব নাই। এগুলোই প্রমাণ করে জিয়াউর রহমান আসলে সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বরং পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করার জন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন। এই দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।
জামায়াতে ইসলাম এই দেশটাকে চায়নি মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই দেশের পতাকার বিরুদ্ধে, চাঁদ-তারা পতাকার পক্ষে তারা যুদ্ধ করেছিল পাকিস্তানিদের দোসর হয়ে। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া, তাদের আঁচলের তলায় ছায়া দিয়ে, তাদের সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে দেশ আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সন্নিকটে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র খেলাধুলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এগুলো কোনও কিছুই করতে পারবে না। সেজন্য আজ যারা ঘৃণার রাজনীতি, অপরাজনীতি করছে এবং বিদেশিদের কাছে ধর্না দিয়ে দেশটাকে বিদেশিদের ক্রীড়াক্ষেত্র বানানোর অপচেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের (সাংবাদিক) কথা বলার অনুরোধ জানাই। তাহলেই দেশ সঠিক পথে হাঁটবে এবং আমরা আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারবো।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনে সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সংসদ সদস্য এ.বি. তাজুল ইসলাম প্রমুখ।