যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রধান শক্তির নাম শেখ ফজলুল হক মনি। শেখ মনি বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা অসম্ভব হয়ে যেতো। এটা ’৭৫-এর খুনিরা ভালোভাবেই জানতো। তাই তারা শেখ মনিকেই প্রথমে হত্যার পরিকল্পনা করে। শেখ মনি আমাদের কাছে বিশ্বস্ততারও প্রতীক, বঙ্গবন্ধুকন্যার কাছে আছে আজকের যুবলীগ।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে সংগঠনটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, শেখ ফজলুল হক মনির অনুসারী ও সহকর্মীদের ভাষায়— তিনি বাংলাদেশের বিপ্লবে ও সংগ্রামে এক অকুতোভয় নেতা ছিলেন। সন্তান হিসেবে আমি গর্ববোধ করি যে, তিনি রণাঙ্গনেও নিজে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য। মুজিব বাহিনীর শীর্ষনেতাদের মধ্যে তিনিই সবার আগে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন বলে জানা যায়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশে ঢোকার আগেই, ২৩ নভেম্বর জেনারেল উবানের নেতৃত্বে দেশের পূর্বাঞ্চলে শুরু হয় ‘অপারেশন ঈগল’। শেখ মনি বিএলএফের কয়েকজন সদস্য নিয়ে তাদের সঙ্গে ‘অপারেশন ঈগলে’ যোগ দিয়ে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। জেনারেল উবানের বর্ণনায়, ‘অদম্য সাহসের অধিকারী স্থির প্রতিজ্ঞ ছিলেন শেখ মনি।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘শেখ ফজলুল হক মনির অনুসারী এবং সংগঠনের কর্মী হিসেবে আমরাও গর্বের সঙ্গে বুক চাপিয়ে বলতে পারি— যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য সর্বোচ্চ আত্মাহুতি দিতে গর্ববোধ করবে। শেখ মনি যেভাবে উপলব্ধি করতেন যে, একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়বিচারসম্পন্ন জাতিরাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কোনও বিকল্প নেই, ঠিক একইভাবে শেখ মনির উত্তরসূরী হিসেবে আমরা আজকের যুবলীগ মনে করি— একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, উন্নয়নশীল ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার কোনও বিকল্প নেই।’
পরশ বলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, যুব রাজনীতির মহাপ্রাণ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক, লেখক ও সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি বাংলার ইতিহাসের সংগ্রাম ও সাফল্যের অসংখ্য অকাট্য দলিল রচনা করে গেছেন মাত্র ৩৫ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে। তার লেখনী থেকে একটা ধারণ করা যায় যে, তিনি বাংলাদেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক প্রগতিশীল, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা সৃষ্টির বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। সেই লক্ষ্য অর্জনে আজকের প্রেক্ষাপটে আমাদের ভিন্নি ধরনের যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।
এর আগে সোমবার সকালে বনানী কবরস্থানে শেখ ফজলে হক মনিসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।