প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস-২) গাজী হাফিজুর রহমান এবং উপ-প্রেস সচিব (ডিপিএস) হাসান জাহিদ তুষারের অব্যাহতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘কর্তব্য পালনে বিচ্যুতির’ কারণে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।
বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মতো দেখতে সুশীল মনে করাদের ব্যাপারে সরকার নিজ উদ্যোগে কোনও খোঁজ-খবর নেবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ লোকের নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। সেটি নিয়ে আগে সাংবাদিকরা কি রিপোর্ট করেছে? ব্যবস্থা নেওয়ার পর আপনারা এখন পাচ্ছেন।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই অভিযোগ আছে কিনা আমি জানি না। নিশ্চয়ই তাদের কোনও বিচ্যুতি ঘটেছে দায়িত্ব পালনে।
বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দরকার সরকারের কাছে শেষ, সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে—বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনার প্রশ্নটা সঠিক হয়নি, তারা বলেছে বেনজীর, আজিজ আহমেদরা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কোহিনূর—এরা কাদের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, দুর্নীতি-লুটপাটের গহ্বর হাওয়া ভবন এটা কার সৃষ্টি? এই প্রশ্নের জবাব চাই।
তিনি বলেন, প্রশ্ন করেছে, আমিও পাল্টা প্রশ্ন করছি, রকিবুল হুদা সাবেক আইজিপি ছিলেন, চট্টগ্রামে ২৪ জানুয়ারি আমাদের নেত্রীর সভায় তাকে টার্গেট করে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল, হামলা করা হয়েছিল। আশরাফুল হুদার দুর্নীতি সবাই জানেন। আশরাফুল হুদা তারা সৃষ্টি করেছেন, তারা কি বিচার করেছেন? বেনজীর আওয়ামী লীগ আমলে আমাদের আইজিপি ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তার ব্যাপারটা... এখন এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা তো একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করতে পারি না। ব্যাপারটা যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন দুদক তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে নিশ্চয়ই মামলা করবে। যে যতটা অপরাধ-অপকর্ম করেছে ততটা শাস্তি পেতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি আমলে তাদের কোন নেতা, কোন সরকারি বা পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ইম্পিউনিটি কালচার (দায়মুক্তির সংস্কৃতি) গড়ে তুলেছিল জানা আছে। তাদের কি কারও ব্রিচ (বাদ দেওয়া) হয়েছিল? শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে, সে কারণে তিনি আজকে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। যখনই যেটা প্রকাশ পাচ্ছে... সেই করোনার সময় ফেক হসপিটাল করে যারা অপকর্ম করেছে তাদের কিন্তু আমাদের নেত্রী ক্ষমা করেননি। আজও অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পেতেই হবে। এখানে কোনও ছাড় নেই।
আওয়ামী লীগের কোনও দায় আছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বেনজীরের কথা বলি, বেনজীরের যে ক্যারিয়ার, তার যে পারসোনালিটি, তাকে তো বাইরে থেকে আপনারা কেউ এমন ভাবেননি—এখন যা শোনা যাচ্ছে। এটা কেউই ভাবেনি। আজিজ আহমেদ অত্যন্ত বিচক্ষণ অফিসার। খুব পড়াশোনা জানা অফিসার। তার কিছু ডিগ্রি আছে যেটা অন্য সেনাপ্রধানদেরও নাকি নেই। এখন আসলে যোগ্যতার জন্যই সেনাপ্রধান করা হয়েছে। এখন তিনি যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তদন্ত হচ্ছে। দুর্নীতির তথ্য পেলে সেটারও তদন্ত হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, আমি এটুকু বলতে পারি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: