‘বাংলাদেশে অনেক সংবাদপত্র থাকা সত্ত্বেও কেউ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বাংলাদেশে এখন ‘অলিখিত বাকশাল চলছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুক্রবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির মিডিয়া সেল আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের কালো দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘৭৫ সালে যখন বাকশাল সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়, সে সময় সরকারের সমালোচনার পথ রুদ্ধ করতে সরকারি দুটো পত্রিকা বাদে বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। আর আজ বাংলাদেশে চলছে অলিখিত বাকশাল। ফলে অনেক সংবাদপত্র থাকা সত্ত্বেও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘বাকশাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র রহিত করা, একটি একদলীয় শাসন কায়েম করা। তার খড়্গ পড়েছিল সংবাদপত্রের ওপরেও। অনেক সাংবাদিক তখন বেকার হয়েছিলেন, ফুটপাতে ব্যবসা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এরপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। তৈরি করেন প্রেস ক্লাব, প্রেস কাউন্সিল, প্রেস ইন্সটিটিউট। তারই ধারাবাহিকাতায় দেশে আজ এতো মিডিয়া। কিন্তু বাংলাদেশে এখন অলিখিত বাকশাল চলছে, ফলে মিডিয়া থাকলেও তারা সংবাদ করতে পারছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ করায় এক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। কেবল গত ১৪ বছরেই ৫৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাগর-রুনী হত্যার পুলিশী প্রতিবেদন ১০০ বার পিছিয়েছে। এসবের কারণে সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।’
মোশাররফ বলেন, ‘সরকারের যারা সিন্ডিকেট রয়েছে, তারা নির্ভয়ে দুর্নীতি করতে পারছে। দেশে দ্রব্যমূল্য আজ লাগামছাড়া। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। জ্বালানির অভাবে লোডশেডিং বেড়েছে। ব্যাংকগুলো আজ দেউলিয়া, ডলার-পাউন্ডের সংকট। আইন করে বিদ্যুতের ওপর ইনডেমনিটি বসিয়েছে। অথচ কমার্শিয়াল সেক্টরের ওপর ইনডেমনিটি বসানোর কোনও নিয়ম নেই। এসবই সীমাহীন দুর্নীতির ফল।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তার মানে এর আগে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি? আমরা ২৭ দফা দাবি দিয়েছি, ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। সব স্বাধীনতার এখন মূল লক্ষ্য এই সরকারের বিদায় এবং তাদের হটাতে গণঅভ্যুত্থানের কোনও বিকল্প নেই।’
বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।