দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলার হরতাল শুরু হয়েছে। দেশজুড়ে চলা এই হরতালের শুরুতে রাজধানীতে এখন পর্যন্ত কোনও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। রাজধানীর শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দিনের শুরুতে যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। সোমবার (২৮ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে এই কর্মসূচি পালন শুরু করে বাম দলগুলো।
এরআগে ২০১৯ সালের ৭ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছিল বাম গণতান্ত্রিক জোট। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে আর কোনও হরতাল ডাকা হয়নি। প্রায় দুই বছর পর আবারও হরতালের ডাক দিয়েছে বামজোট।
হরতালের দিন সকালে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা গেছে। তবে পল্টন, শাহবাগসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বামজোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এদিন সকালে পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৬টার দিকে হরতালের সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে মিছিল বের করেছেন। মিছিলটি মতিঝিল, গুলিস্তান, বিজয়নগর ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়। এছাড়া পল্টন মোড়ে বেরিকেট দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় হরতাল সমর্থকরা। এসময় গাড়ি না পেয়ে অনেককে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা যায়।
বাম জোটের হরতালকে কেন্দ্র করে পুলিশসহ সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা পল্টন মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।
পল্টন মোড়ে অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ থেকে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করছি। মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে।’ এই কর্মসূচিতে কোনও ধরনের উসকানি না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে টিএসসি থেকে মিছিল বের করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা। শাহবাগ মোড়ে পৌঁছে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে।
প্রগতিশীল ছাত্রজোট মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের পিকেটিং বা সহিংসতা লক্ষ্য করা যায়নি।
এসময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সড়কের পাশে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত তারা কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গাড়ি শাহবাগ মোড়ে পৌঁছালে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা গাড়ি আটকে দিয়ে সামনে বসে পড়েন। পরে গাড়িটি রুট পরিবর্তন করে অন্য দিক দিয়ে চলে যায়। সোয়া ৭টার দিকে মোড়ে আগুন জ্বালায় হরতালের সমর্থকরা।
হরতালের সমর্থনে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা সিটি কলেজ-গুলিস্তান ও সদরঘাট-সিটি কলেজ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। তবে পার্শ্ব রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল অব্যাহত থাকে। তবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিটি কলেজ-গুলিস্তান রুটের পার্শ্ব রাস্তাও বন্ধ করে দিলে ওই রুটে যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে, সকাল ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে হরতাল সমর্থকদের কারোরই অবস্থান লক্ষ্য করা যায়নি।