X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইসির সংলাপে মামুনুল হকের মুক্তি দাবি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ জুলাই ২০২২, ১৬:৩৮আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, ১৮:৪৭

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি চাইলো বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ অবশ্যই দরকার। কিন্তু আমাদের নেতারা জেলে রয়েছেন। তারা জেলে থাকলে সংলাপে অংশ নেবেন কী করে। নির্বাচনে কীভাবে অংশ নেবেন। মামুনুল হকসহ সব আলেমের মুক্তির জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

লিখিত বক্তব্যেও মামুনুল হকসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির জন্য ইসির সহযোগিতা চেয়েছে দলটি।

মাওলানা মামুনুল হক বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব। গত বছরের ১৮ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে তাকে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতের তান্ডবের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তার কথিত স্ত্রী জান্নাতের দায়েরকৃত ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও অন্তত ২০টির মতো মামলা হয়েছে।

২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ মামলা করেন জান্নাত আরা ঝর্ণা। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

মামুনুল হকের মুক্তিতে সহযোগিতা চেয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়— দুঃখজনক বিষয় হলো, আমাদের সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ অনেক নেতা দ্বীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তাই অতিদ্রুত তাদের মুক্তির জন্য আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এ দাবির জবাবে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আপনাদের অনেক মনোকষ্ট আছে। এটা আমরা স্বীকার করি। এ বিষয়ে আপনাদের প্রতি আমাদের সহানভূতি রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের করণীয় কিছু আছে কিনা এই মুহূর্তে চট করে কিছু বলতে পারছি না। রাজনীতি এমক একটি বিষয় কেউ জেলে থাকে, কেউ বাইরে থাকে, এটা হয়। এক্ষেত্রে আপনাদের স্বোচ্চার হতে হবে। আপনারা যদি মনে করে থাকেন, আপনাদের নেতাদের বেআইনিভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাহলে আপনাদের সোচ্চার হয়ে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে, তাদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যেন সুযোগ দেওয়া হয়।’

ইসিতে উপস্থাপিত দলটির প্রস্তাবনা ও সুপারিশগুলো হলো—

১. নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কমিশনকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

২. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দিন থেকে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষমতা ইসির হাতে রাখা এবং নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচনের ৭ দিন আগে থেকে নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা পর পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা।

৩. নির্বাচনে যেভাবে অর্থের প্রভাব খাটিয়ে ভোটারদের বিপথগামী ও চরিত্র নষ্ট করা হয়ে থাকে, তাতে কোনও সৎ ও যোগ্য লোকের নির্বাচন করা খুবই কঠিন। আর এ অপতৎপরতা বন্ধ করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। অতীতে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় উল্লেখযোগ্য কোনও সফলতা অর্জিত হয়নি। নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব চলছেই। এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব হলো— নির্বাচন কমিশনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে সব প্রার্থীর পক্ষ থেকে সার্বিক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা। একই পোস্টারে সব প্রার্থীর পরিচয় ও প্রতীক এবং একই মঞ্চে সব প্রার্থীর বক্তৃতার ব্যবস্থা করা। জামানতের সঙ্গে এসব খরচের টাকা প্রার্থী বা দল থেকে নেওয়া যেতে পারে।

৪. নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।

৫. আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য যে কোনও প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৬. ধর্ম ও দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব-বিরোধী কোনও দলকে নিবন্ধন না দেওয়া।

৭. রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিংবা বিরোধপূর্ণ কোনও আইন ও শর্ত আরোপ না করা।

৮. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পূর্বে সংসদ ভেঙে দেওয়া।

৯. নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা নেওয়ার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

১০. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারকৃত সব কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়া। নতুন কোনও রাজনৈতিক মামলা না দেওয়া। কোনও প্রার্থী ও তার কর্মীদের অযথা হয়রানি না করা।

১১. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে করা।

১২. অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

১৩.নিরপেক্ষভাবে ভোটের সংবাদ প্রচারে বা সরাসরি সম্প্রচারে মিডিয়ার ওপর কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি না করা।

১৪. প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা (সিল মারার স্থান ব্যতীত)।

১৫. প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

/ইএইচএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
উপজেলা নির্বাচনমন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডিসি ও এসপিদের
উপজেলা নির্বাচনে নেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
সর্বশেষ খবর
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা