X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
গণঅধিকার পরিষদের আবেদন নাকচ

সরকার ও ইসির পতন ঘটিয়ে নিবন্ধন নেবো: নুর

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ জুলাই ২০২৩, ১৬:৫৫আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১৭:২৮

সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পতন ঘটিয়ে নিবন্ধন নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অঙ্গীকার জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক (একাংশ) নুরুল হক নুর। দলটির নিবন্ধন আবেদন নাকচ হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে রবিবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভায় গণঅধিকার পরিষদের নিবন্ধন আবেদন নাকচ হয়।

পরে দলটির আহ্বায়ক নুরুল হক নুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

নুর বলেন, ‘‘দলগুলোর নিবন্ধনে যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক একজন উপসচিব ও অতিরিক্ত জেলা জজ। যিনি আইন-কানুন সম্পর্কে ভালো বোঝেন। তার সঙ্গে কথা বলে দেখুন তিনি কী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের কপিও আমাদের হাতে রয়েছে। তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে লিখে দিয়েছেন— ‘গণঅধিকারে কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তারা নিবন্ধনের যোগ্য, এটা তদন্ত কমিটি লিখেছে।’ কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকার ও এজেন্সির পরামর্শে আমাদের নিবন্ধন দেয়নি। নিবন্ধন দেয়নি ভালো, তবে আমরা এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পতন ঘটিয়েই আগামী নির্বাচনের আগে নিবন্ধনও নেবো এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ের আপডেট চিঠি নিয়ে এখানে সশরীরে হাজির হয়েছি। এর আগে সাধারণত আমরা চিঠি নিয়ে সশরীরে এখানে আসিনি। আমরা মনে করেছি যে নিবন্ধনের কার্যক্রমটা যেহেতু চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং মাঠ পর্যায়ে তাদের (ইসির) যে কর্মকর্তারা আছেন, তারা বিভিন্ন এজেন্সি দ্বারা প্রভাবিত। আমরা আমাদের কার্যক্রম লিখিতভাবে ডকুমেন্টসহ তাদের কাছে উপস্থাপন করেছি।’

নুর বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর আমরা নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ পেয়েছি। সিইসির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তার কথাবার্তায় একটু অসহায়ত্বের ছাপ ফুটে উঠেছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে ভালো কিছু করার চিন্তাভাবনা করলেও এই পরিবেশ-পরিস্থিতির জন্য করতে পারছেন না। তার হাত-পা বাঁধা। আমরা তার কথাবার্তা ও কার্যক্রমে বুঝতে পেরেছি।’

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘যে দুটি দলকে তারা আজকে নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত করলো, এ দুটি দলের কার্যক্রম মাঠে কতদিন আপনারা  দেখেছেন? এদের হেড অফিস কোথায় আপনারা কেউ দেখেছেন? আমি তাদের বলেছি, গুগলে সার্চ দিয়ে দেখেন, তাদের দলের কার্যক্রম সম্পর্কে মূল ধারার গণমাধ্যমে কোনও সংবাদ পান কিনা। তাহলে এরা কোথা থেকে নিবন্ধন পেলো, কারা এদের বানালো। শেখ হাসিনা সরকার বানিয়েছে, এই ১৪ দল থেকে যেন আগামীতে ২০ দল হতে পারে এবং বিএনপিকে টেক্কা দিতে পারে। তাই এজেন্সির পরামর্শে নির্বাচন কমিশন এই দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে সরকারের আজ্ঞাবহ এবং তারা যে দলদাস ভূমিকায় অবতীর্ণ—সেটি তারা প্রকাশ করেছে। আমরা বারবার বলেছি, এই মেরুদণ্ডহীন দলদাস কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যে কারণে বিরোধী দলগুলো একদফা দাবিতে আন্দোলন করছে। আমাদের ঘোষণা পরিষ্কার—নিবন্ধন ও নির্বাচনে সময়ক্ষেপণ করে মূল ফোকাস থেকে দূরে সরে যেতে চাই না। বর্তমানে একদফা আন্দোলন চলছে। একদফা হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা দালালি করছে, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, আপনাদের অধীনে আগামীতে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হবে, নতুন সরকার গঠন হবে, দালালির পুরস্কার আপনারা পাবেন। জনগণ আপনাদের রাস্তাঘাটে দেখলে থুতু মারবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমাদের নিবন্ধন না পাওয়া দলীয় কোন্দলের কোনও বিষয় না। প্রত্যেকটা দলের কিছু নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম থাকে এবং আমরা সেটা কমিশনকে সাংগঠনিকভাবে অবহিত করেছি। যেসব দল মাঠে অ্যাক্টিভ আছে, সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় আছে, তাদের নিবন্ধন দেয়নি। নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের শর্ত ছিল ২২টি জেলায় কমিটি থাকতে হবে। আমাদের অলরেডি ৫৩টি জেলায় কমিটি আছে। ইসির শর্ত ছিল ১০০ উপজেলায় কমিটি, কিন্তু আমাদের দুই শতাধিক উপজেলা কমিটি আছে। তাহলে আমাদের দুর্বলতা কোথায়? তারপরও আমাদের নিবন্ধন দেওয়া হলো না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচন চলাকালে গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সমঝোতা করার জন্য ডেকে ছিল। মিটিং করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতাদেরসহ। যদি আমরা নির্বাচনে যাই এবং তাদের সঙ্গে যদি একমত পোষণ করি, তাহলে দলের নিবন্ধনও দেওয়া হবে ও আগামী নির্বাচনে কিছু সিট দিয়ে এমপিও বানানো হবে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করেছি যে আজকে যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে, নির্বাচন ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের ক্ষমতায় রেখে দেশ ও জাতির সর্বনাশ আমরা করতে পারবো না। দলীয় সরকারের অধীনে গণঅধিকার পরিষদ কোনও নির্বাচনে যাবে না।’

নিবন্ধন ফিরে পেতে আদালতে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের নিয়ন্ত্রিত ক্যাঙ্গারু কোর্টে মানুষ ন্যায়বিচার পায় না। ওখানে মানুষ অবিচারের শিকার হয়। আমরা রাজপথের আন্দোলনে সরকারের পতন করে এবং নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করেই দাবি আদায়ের চেষ্টা করবো এবং দলের নিবন্ধন নেবো।’

/ইএইচএস/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
এমপি আবদুল হাফিজ মল্লিককে ইসিতে তলব
কী পরিমাণ ভোট পড়লো চার ঘণ্টায়?
ভোটে প্রভাব বিস্তাব করবেন না, মন্ত্রী-এমপিদের ইসি
সর্বশেষ খবর
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?