সরকার এখন আরেকটা নীলনকশার নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে বলে মন্তব্য করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত 'সংবিধানের দোহাই দিয়ে একতরফা নির্বাচন সংবিধান সম্মত নয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মঞ্চের নেতারা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, 'সংবিধানের দোহাই দিয়ে এখন সরকার বলছে নির্বাচন তাদের অধীনেই হবে। আওয়ামী লীগের এখন যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাদের যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তাহলে একদিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা চালু করতে পারে। কিন্তু সরকার এখন আরেকটা নীলনকশার নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে। আর তাদের সাহায্য করছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন।'
তিনি আরও বলেন, সংবিধানকে সরকার ছেঁড়া কাগজের থেকে বেশি কিছু মনে করে না। একে কখনও ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেয় আবার কখনো বুকে তুলে চুমু খায়। আমাদের এখন আন্দোলন নিয়ে খেলা করার সুযোগ নেই। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে অনতিবিলম্বে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, 'সংবিধানে বলা হয়েছে— জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। এই সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই এই সরকারি অসাংবিধানিক, অবৈধ। সংবিধান মেনেই এই সরকারকে চলে যেতে হবে।'
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। তাদের কোনও নীতি নাই। আওয়ামী লীগের একটাই ধান্দা। তারা কোন নীতি কথা শুনবে না। কারণ তারা সকল নীতি বর্জন করেছে, ব্যাংকগুলো খালি করেছে। আগামীতে নির্বাচনে গুন্ডা-হোন্ডা সবই যাবে, তারপর বিদেশিদের দেখাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।'
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, 'যে রায়ের কথা বলে আওয়ামী লীগ যুক্তি দেয় সেই রায়ের বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছিল, আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্ত এবং আদালতের রায় বিকৃত করে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সমস্যাগ্রস্ত নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।'
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, 'নাগরিকদের ভোটের অধিকার সংবিধান দিয়েছে। কিন্তু সরকার তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের সংবিধানসম্মত এই অধিকার পদদলিত করছে।'
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, 'আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেনি। প্রধানমন্ত্রী তখন মিথ্যাচার করেছিলেন। আদালত এখানে ভূমিকা নিতে পারতো কিন্তু নেয়নি।' তিনি আরও বলেন, 'একতরফা কোনও নির্বাচন হতে পারে না। সিলেকশন হতে পারে। ইলেকশন মানেই অনেকগুলো পক্ষ থাকতে হবে।'