নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার সব শক্তি নিয়ে চেষ্টা করলেও ২৮ তারিখের সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। আওয়ামী লীগের পরাজয় গত মাসের ২৮ তারিখে একবার হয়েছে। ওই সমাবেশে ১০-১৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়। এবার আমরা বলছি, এর থেকে বড় সমাবেশ করবো। দুনিয়ায় তাক লেগে যাবে– এতগুলো মানুষ সরকারকে চায় না।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়: বাংলাদেশ কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা ২৮ তারিখে সমাবেশ ডেকেছি, আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা বলছে, তারা অবরোধ করতে দেবে না, ঘেরাও করতে দেবে না। আমরা কী বলেছি, আমরা ওইদিন অবরোধ করবো? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমীগর বলেছেন, আমরা ২৮ তারিখ অবরোধ দেবো না। ২৮ তারিখে আমরা কোথাও বসেও পরবো না। কিন্তু ২৮ তারিখে সারা দেশ থেকে লোক আসবে। এই আন্দোলন কেবল ঢাকায় নয়, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।’
জনগণের মধ্যে এখন আর ভয় নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার ভয় দেখিয়ে ১৫ বছর শাসন করেছে। মানুষের ভয় ভেঙে গেছে। মানুষ একবার যখন ঘুরে দাঁড়াবে, তখন সরকার পালানোর পথ পাবে না।’
২৮ তারিখে রাজপথ দখল করে সভা করবেন হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকেও প্রেসক্লাবের সামনে রাজপথ দখল করে সভা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে পারবে? পারবে না। কারণ আগে লড়াই হয়েছে সরকারি দল আর বিরোধী দলের মধ্যে। এবারের লড়াই এই সরকারের দুর্নীতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তাদের এসব দুর্নীতি অন্যায় দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে গেছে।’
মান্না বলেন, ‘মানুষ এই সরকারকে চায় না। আমরা (বিরোধী দল) যদি আন্দোলন নাও করতাম, তবুও মানুষ বলতো, এর থেকে বাঁচতে চাই। দেশে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেশি, আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। আইনশৃঙ্খলা শুধু আমাদের জন্য, আর যতকিছু অন্যায়, অত্যাচার, লুটপাট এগুলো করছে ক্ষমতাসীন দল। অতএব তারা ক্ষমতা থেকে যেতে চায় না, ভয় পায়। এখন যদি ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হয়, তাদের বিচার করা হবে। মানুষের ওপর তারা যে অন্যায় করেছে, মানুষ যদি এর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করে, তাহলে তারা দাঁড়াবে কোথায়?
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেন, ‘সরকারকে খুশি করার জন্য সব আদালত যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিচার কাজ চলে। অর্থাৎ আগামী এক মাসের মধ্যে নির্বাচনী মনোনয়ন পত্র দাখিলের আগে বিরোধী দলীয় সব সম্ভাব্য প্রার্থীকে সাজা দিয়ে ফেলতো হবে।’
বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘এখন জনগণের বিদ্রোহের, আন্দোলনের, গণঅভ্যুত্থানের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়। আর ছাড় দেওয়া হবে না। এবার জনগণ ক্ষেপে উঠেছে। ওইদিন (২৮ অক্টোবর) দেখবেন মহাসমাবেশ নয়, জনগণের জনপ্লাবন তৈরি হয়েছে।’
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন ফোরামের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান শামীম।