X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
২০ বৈশাখ ১৪৩২

কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট, নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:০৫আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৭

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে আজ। আত্মপ্রকাশের দিনে দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তফ্রন্ট।

বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

নতুন জোটে থাকা দলগুলো হলো– বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল প্রতীক)।

সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। সম্ভাবনা আছে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কয়েকটা দিন বিলম্ব হতে পারে, নাও হতে পারে। যদি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন বিলম্ব হয়, তাহলে বাকি তারিখগুলোও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। আমাদের জোট যুক্তফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেবো। এর জন্য আমরা একটি বড় ঝুঁকি নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড়-ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’

যুক্তফ্রন্ট কী আশঙ্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আশঙ্কার উত্তর হলো, সরকার ওয়াদা করেছে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনকে জাতির সামনে এবং বিশ্বের সামনে গ্রহণযোগ্য করবে। আমরা এতদিন দাবি করেছিলাম, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবো না। তার উত্তর, দাবি আদায়ে সফল না হয়ে বিকল্প পন্থায় নির্বাচনে অবদান রাখার সুযোগ নিচ্ছি।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা ছিল কল্যাণ পার্টির। এখন যেহেতু কল্যাণ পার্টি নির্বাচনে যাচ্ছে তাহলে কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা নেই– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে সেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি আসছে না। ফলে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যা আছে তার মধ্যে আমি অংশ নেবো, নাকি সব কিছু থেকে বিরত থাকবো। আমি প্রথম বিকল্পটা বেছে নিয়েছি।’

যুক্তফ্রন্ট কয়টি আসনে নির্বাচন করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা এখনও স্থির করিনি। তবে আমাদের ১০০টি আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি রয়েছে।’

আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘আশা করি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হবে। অতিরিক্ত আশা করি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। এর নিশ্চয়তা আমার পক্ষে দেওয়া কোনোদিনও সম্ভব নয়। কারণ, যদি না হয় আমিও একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি হবো এবং সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে ‘আত্মহত্যা’ করা। অতীতে এমন মন্তব্য করেছিলেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এখন নির্বাচনে যাওয়ার মাধ্যমে ‘আত্মহত্যা’র সিদ্ধান্ত নিলেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা কষ্ট করে রাজনীতিটাকে টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের টিকে থাকার একটা সীমা আছে। সেই সীমা আমরা ধরে রেখেছি। কিন্তু আমার এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অক্ষমতা হচ্ছে, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আর পেরে উঠছি না। এটা একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে ২৮ অক্টোবরের পর। আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমি নিশ্চুপ থাকবো নাকি একটা বিকল্প পন্থা অবলম্বন করবো। আমি বিকল্প পন্থা নিলাম। কারণ, আমি যে কথাগুলো বলার চেষ্টা করি, সেটা সংসদে বলবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখান থেকে বের হওয়ার পর বা বিদ্যমান অবস্থাতেই ৫০০ কমেন্ট আসবে– বিশ্বাসঘাতক, দালাল, বেচা হয়ে গেছে। মেজর জেনারেল ইবরাহিম বা বীর প্রতীক ইবরাহিম বেচা যাওয়ার পাত্র নয়। এর জন্য আপনাদের কাছে আবেদন করবো, ধৈর্য ধরুন, দেখেন কখন কী হয়, কী করি।’

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি আহ্বান রাখবো উভয়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য পরিবেশে সংলাপের ব্যবস্থা করুন। জাতির মঙ্গলের জন্য সংলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। আমি কখনোই বলবো না বিএনপি তুমি নির্বাচনে আসো, কখনও বলবো না এসো না।’

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কোনও চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি পরশু দিন হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। এই প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া এই মুহূর্তে আমার পক্ষে সমীচীন না। এটা উহ্য রাখতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারুকুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব তফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এতদিন বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছিল।

 

 

/এএজে/আরকে/এমওএফ/
সম্পর্কিত
দেশের ইতিহাসে ‘শ্রেষ্ঠ নির্বাচন’ হবে, আনফ্রেলকে আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
নির্বাচনে অংশ নিতে ৮০-৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে বিএনপি: দুদু
ডিসেম্বরকে টার্গেট করেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি: ইসি আনোয়ারুল
সর্বশেষ খবর
পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
নিজের বিভাগের উন্নতি না করে বোর্ডে আসার প্রয়োজন নেই: তামিম 
নিজের বিভাগের উন্নতি না করে বোর্ডে আসার প্রয়োজন নেই: তামিম 
গাজীপুরে পুড়ে গেছে ২৫ ঝুটগুদামের মালামাল
গাজীপুরে পুড়ে গেছে ২৫ ঝুটগুদামের মালামাল
অর্থ উপদেষ্টা ইতালি গেছেন
অর্থ উপদেষ্টা ইতালি গেছেন
সর্বাধিক পঠিত
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘সাময়িক’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার
‘সাময়িক’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার