গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক লাকী আক্তারকে গ্রেফতারসহ পাঁচ দফা দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এই ঘোষণা দেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। এ সময় তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ‘জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স’।
শরীফ ওসমান হাদি বলেন, ‘আজ চূড়ান্ত সময় এসেছে শাহবাগীমুক্ত ইনসাফ বাংলাদেশ বিনির্মাণের। এ জন্য ঈদের দিন পর্যন্ত যদি কর্মসূচি পালন করতে আমরা প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ’১৪-১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে এই ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। বিচার চাই না ফাঁসি চাই বলে হাজার হাজার আয়নাঘর কায়েম করা হয়। রোজা ভাঙিয়ে আমার বোনকে ধর্ষণ করা হয়। বাংলাদেশে বেগম জিয়ার বিনা চিকিৎসায় হাত বাঁকা করে ফেলা হয়েছে। আল্লামা সাঈদীকে মেডিক্যালে চিকিৎসার নামে এখানে এনে হত্যা করা হয়। মোশতাককে জেলের মধ্যে হত্যা করা হয়। মাইকেল চাকমার জীবন শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশেষ হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে আমাদের ভাই-বোনদের কলিজা ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়। সেই টার্মকে বৈধতাই শুধু নয় অপরিহার্য জরুরত হিসেবে প্রমাণ করেছে এই শাহবাগ।’
ইনকিলাব মঞ্চ গত ছয় মাসে ৫০ এর বেশি রাজপথের প্রোগ্রাম করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা প্রোগ্রামে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড দেয়। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে স্লোগান দিয়েছি। একজন পুলিশের গায়েও হাত দেওয়ার প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, ‘যমুনার সামনে ১৪৪ ধারা জারি আছে। আমরা সেই আইনকে সম্মান করে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে প্রোগ্রাম করেছি। আইনকে যদি আমরা শ্রদ্ধা না করি তাহলে রাষ্ট্র চলবে কীভাবে।’
ইনকিলাব মঞ্চের পাঁচ দফা দাবি হলো– ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে কেউ মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করলে তাকেও সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে; বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দায়িত্বরত নিরস্ত্র পুলিশের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে; অবিলম্বে লাকী আক্তার ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে ২০১৩ সালের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র উন্মোচন করতে হবে; জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা ও পিলখানা গণহত্যার স্বাধীন বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশের বাধা ও লাঠিপেটার শিকার হন ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের সদস্যরা। এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মোট ৯ দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার সময় পুলিশের বাধায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।