জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকার দাবি না মানলে জনতার আদালত বানিয়ে দলটির বিচার নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে পাড়া-মহল্লায় ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ বানাতে এনসিপি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি ঢাকা মহানগর শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে।
এদিন বিকাল ৩টায় কর্মসূচি শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সমাবেশে ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মনিরা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা।
এছাড়াও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তর অঞ্চল) সারজিস আলম বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে নাহিদ বলেন, অবিলম্বে নৌকাকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। গণহত্যার বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে। এক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একই দিনে আইন পরিষদ ও গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ৯ মাস পরও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জন্য রাজপথ নামতে হচ্ছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা। সরকারের কাছে আমরা বিচার ও সংস্কারের কথা বলেছি। কিন্তু সরকার দৃশ্যমান কোনও কার্যক্রম দেখাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। কোনও রাজনৈতিক দল নয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার শহীদদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারেনি। অথচ তারা শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আসামিদের ছেড়ে দিয়েছে। তাদের ছাড়িয়ে নিতে কোনও কোনও দলের নেতারা অর্থবাণিজ্য করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রতীক বাতিল না করায় নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ করে তিনি জানতে চান, কমিশন কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।
সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ৭২-এর সংবিধান বাংলাদেশকে ভারতের তাঁবেদার বানিয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে সংকুচিত করেছে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও অপশাসন উপহার দিয়েছে তারা। বিগত ১৭ বছরে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন করেছে। পিলখানা, শাপলা চত্বর ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। তারা দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না।
নাহিদ বলেন, জনগণ এনপিপির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। মানবিক বাংলাদেশ গড়তে দ্রুত সময়ে জনগণের দরজায় পৌঁছে যাবে এ দলের নেতাকর্মীরা।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, যুগ্ম সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসাইন, সাইফ মোস্তাফিজ, কেন্দ্রীয় সংগঠক মোস্তাক আহমেদ শিশির, মনসুর আবদুল্লাহ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এস এম শাহরিয়ার, আতাউল্লাহ, সাইফুল্লাহ হায়দার, অ্যাডভোকেট আমির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ উদ্দিন, যুগ্ম সদস্য সচিব লুৎফর রহমান, তাহসীন রিয়াদ, জয়নাল আবেদীন শিশির আলাউদ্দিন, মাহিন সরকার, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, ডা. তাসনুভা জাবিন, মশিউর রহমান, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু, উত্তর অঞ্চল সংগঠক মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ফরহাদ সোহেল প্রমুখ।