X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শেষটা মোটেও ভালো হলো না

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু
০৬ জুলাই ২০১৯, ১৫:২১আপডেট : ০৬ জুলাই ২০১৯, ১৭:৫৬

শেষটা মোটেও ভালো হলো না প্রত্যাশা ছিল শেষটা দারুণ হবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের দল সেই প্রত্যাশা পূরণের অবস্থানে ছিলও। শুধু দরকার ছিল সাকিব আল হাসানকে যোগ্য সমর্থন দেওয়া। কিন্তু হলো না। লর্ডসের ম্যাচ ‍হেরে যাওয়ায় শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের।

বলতে গেলে সাকিব একাই এই টুর্নামেন্টে খেলেছেন। তার সঙ্গে বোলিংয়ে মোস্তাফিজুর রহমানও যথেষ্ট লড়াই করেছেন। যখনই সুযোগ পেয়েছেন, নীরবে দারুণ পারফরম্যান্স দিয়ে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর বাইরে পাকিস্তানের ম্যাচে দরকার ছিল গোটা দলের সম্মিলিত পারফরম্যান্স, সেটা তামিম ইকবালের কাছে খুবই ‍প্রত্যাশা ছিল। যদিও আবারও ব্যর্থ এই ওপেনার। এই টুর্নামেন্টে যেভাবে ব্যাট করেছেন, তাতে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। মুশফিকুর রহিমের কাছে ধারাবাহিক ফর্ম প্রত্যাশা ছিল। তার সঙ্গে সৌম্য সরকারের কাছ থেকে বিধ্বংসী একটি ইনিংস পাওনা ছিল। কিন্তু তার কিছুই পাওয়া গেল না। একমাত্র সাকিবের পারফরম্যান্সটাই অনবদ্য রয়ে গেল। তাতেই হয়তো আমরা ২০০ রান পেরোতে পারলাম।

আগের ম্যাচগুলোতে আমরা ৩০০ প্লাস রান তাড়া করেছি। হারলেও লড়াকু মনোভাব ছিল শেষ পর্যন্ত। কিন্তু এই ম্যাচে লড়াই করার আগেই আমরা মুখ থুবড়ে পড়ে যাই। ৩১৬ রান তাড়া করতে গিয়ে অনেক আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিলাম। উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতা গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিল। ভালো শুরু দিতে না পারায় অনেক ম্যাচেই আমরা পেছনে পড়ে গেছি।

পাকিস্তানের দেওয়া লক্ষ্য টপকানো সম্ভব হবে কিনা, সেটা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই সংশয় ছিল। কারণ লর্ডসের উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল বরাবরই ধুঁকেছে। তাই টস জেতাটা পাকিস্তানের জন্য ছিল বড় প্লাস পয়েন্ট। যেটা বাংলাদেশকে অনেকটা পেছনে ফেলে দেয়। লর্ডসের উইকেট শুরুতে যতটা মন্থর থাকে, সেটা আরও ধীর হয়ে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে। এরপরও বাংলাদেশের এতটা খারাপ ব্যাটিং প্রত্যাশা করিনি। এজন্য কৃতিত্ব দিতেই হবে পাকিস্তান পেসার শাহীন আফ্রিদিকে। তিনি যে দারুণ বোলিং করেছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। যখনই বোলিংয়ে এসেছেন, উইকেট তুলে নিয়ে বাকি বোলারদের ওপর চাপ কমিয়েছেন।

নতুন বলে মোস্তাফিজের কাছ থেকে সফলতা প্রত্যাশা করেছিলাম। শেষ দিকের সফলতা দলকে ঠিক ততটা কার্যকরী সাফল্য দিতে পারে না, যতটা শুরুতে দেয়। এরপরও তার প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। দারুণ বোলিংয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লিখেছেন তিনি। তার আগে ‍আলো ছড়িয়েছেন সাইফউদ্দিন, শুরুতেই সাফল্য এনে দিয়েছিলেন ফখর জামানকে ফিরিয়ে। তবে তার নেওয়া বাবর আজমের উইকেটটিকে আমি এগিয়ে রাখব। এই বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা বল ছিল এটি।

এরপরও বলবো বোলিংয়ে আমরা মোটেও উজ্জ্বল ছিলাম না। বিশ্বকাপে আসলে আমরা এক বোলার কম নিয়ে খেলেছি, কারণ মাশরাফি সেভাবে অবদান রাখতে পারেননি। পরিস্থিতির বিচারে পাকিস্তানের বিপক্ষে সৌম্য সরকারকে ব্যবহার করা যেত। ভারতের বিপক্ষেও দারুণ বোলিং করা সৌম্যকে বল করতে না দেখে অবাক হয়েছি।

পাকিস্তানের ব্যাটিং সফলতার পেছনে বাংলাদেশে বাজে ফিল্ডিং দায়ী। বাবর আজম একাধিক ‘জীবন’ পেয়েছেন। আমরা তার ক্যাচ ছেড়েছি। তাছাড়া এই ধরনের ম্যাচে রান আউটের সুযোগ যেখানে কোনোভাবেই মিস করা উচিত নয়, সেখানে আমরা শুরুতেই ‍বেশ কয়েকবার সুযোগ নষ্ট করেছি। ফিল্ডিং মোটেও ভালো ছিল না। সব মিলিয়ে কেন জানি মনে হয়েছে, বাংলাদেশ তাদের শেষ ম্যাচ খেলার আগেই বাড়ি ফেরার ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিল। কারণ ম্যাচের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব বোধ করেছি।

অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি সবসময় দলের কাছ থেকে যেভাবে সমর্থন পেয়েছেন, সেটা ব্যাট-বল কিংবা ফিল্ডিংয়ে, সেটা পাননি এই ম্যাচে। তিনি নিজে যেমন অবদান রাখতে পারেননি, তেমনি দলের কাছ থেকেও তেমন কিছু পাননি।

সাত নম্বরে থেকে আমরা টুর্নামেন্ট শেষ করলাম। কিন্তু পাকিস্তানকে হারালে পারলে পাঁচ নম্বরে থাকতে পারতাম। সেমিফাইনাল খেলতে না পারলেও সেই প্রাপ্তিও কম হতো না। কিন্তু শুরুর পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারিনি। আর তার কারণ হতে পারে খেলোয়াড়দের ক্লান্তি। আমার কাছে ক্রিকেটারদের বেশ পরিশ্রান্ত মনে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজের পারফরম্যান্স অবশ্যই উপকার করেছে, কিন্তু এতদিন ধরে দেশের বাইরে থেকে টুর্নামেন্ট খেলায় কিছুটা হলেও ক্লান্তির ‍ছাপ পড়েছিল দলে।

সব মিলিয়ে আমি বলব না বাংলাদেশ দল খুব একটা খারাপ করেছে। বেশ কিছু ম্যাচে আমরা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। তবে দলীয়ভাবে জ্বলে ওঠা হয়নি গোটা আসরে। সাকিবের ‍পারফরম্যান্স বাদ দিলেই ভেসে উঠবে অন্য ছবি। তার উজ্জ্বল পারফরম্যান্সেই মোটামুটি একটা ভালো অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করতে পেরেছে বাংলাদেশ।

/কেআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা