মাঠে নামলেই যেন বাবর আজমের রেকর্ড! রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় প্রতিনিয়ত নিজেকে উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে যে রেকর্ডটি গড়লেন, তা ক্রিকেটবিশ্ব দেখেনি কখনও। প্রথম ব্যাটার হিসেবে দুইবার পেলেন টানা তিন সেঞ্চুরি। তার কীর্তিময় ম্যাচ দিয়ে পাকিস্তানও গড়েছে রেকর্ড। এই প্রথম ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ৩০০ রান তাড়া করে জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
বুধবার মুলতানে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৪ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরা মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচটি জয়ে রাঙিয়েছে স্বাগতিকরা। বাবরের সেঞ্চুরির পর খুশদিল শাহের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। বৃথা গেছে শাই হোপের সেঞ্চুরি। এই ওপেনারের ১২৭ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কঠিন লক্ষ্য বাবরের রেকর্ড গড়া ১০৩ রান ও খুশদিলের ২৩ বরে ৪১* রানে ৪ বল আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় স্বাগতিকরা। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ পাকিস্তান ১-০তে এগিয়ে গেছে।
দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন বাবর। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই আবার ৫০ ওভারের ক্রিকেট শুরু করলেন। মাস দুয়েক আগে অজিদের বিপক্ষে করেছিলেন টানা দুই সেঞ্চুরি- ১১৪ ও ১০৫*। এবার ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেও শতক দিয়ে শুরু করলেন ওয়ানডে সিরিজ। তাতে নতুন এক বিশ্বরেকর্ড লিখে ফেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার টানা তিন ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। যার উদাহরণ দ্বিতীয়টি নেই ওয়ানডে ক্রিকেটে।
এই সেঞ্চুরির মাইলফলক ছোঁয়ার পথে আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন বাবর। বিরাট কোহলিকে সরিয়ে অধিনায়ক হিসেবে দ্রুততম ১ হাজার রান এখন তার। ভারতের সাবেক অধিনায়কের যেখানে লেগেছিল ১৭ ইনিংস, সেখানে মাত্র ১৩ ইনিংসেই হাজার রানের দেখা পেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম সেঞ্চুরি পূরণ করে বাবর খেলেন ১০৩ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১০৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৯ বাউন্ডারিতে। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তার ও ইমাম-উল-হকের (৬৫) ব্যাটে শক্ত ভিত পেয়ে যায় পাকিস্তান। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫৯ রানের ইনিংস খেললে লক্ষ্যের আরও কাছে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু আস্কিং রেট বাড়তে থাকে দ্রুত। সমীকরণ হয়ে ওঠে কঠিন। যদিও খুশদিল ঝড়ে সেটি মিলিয়ে দিতে কোনও অসুবিধাই হয়নি পাকিস্তানের। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা এই ব্যাটারের ২৩ বলে ১ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় হার না মানা ৪১ রানে ৪ বল আগেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে স্বাগতিকরা।
এরই সঙ্গে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ে ফেলে পাকিস্তান। মুলতানের ম্যাচটির আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৯৫ রান তাড়া করে জয় ছিল আগের রেকর্ড।
বাবর ও পাকিস্তানের রেকর্ডে ঢাকা পড়ে গেছে হোপের সেঞ্চুরি। ক্যারিবিয়ান ব্যাটার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৩৪ বলে ১৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় খেলেন ১২৭ রানের ইনিংস। আরেক ওপেনার কাইল মায়ার্স (৩) ব্যর্থ হলেও ওয়ান ডাউনে নামা শামারাহ ব্রুকস খেলেন ৭০ রানের ইনিংস। এরপর রোভম্যান পাওয়েলের ২৩ বলে ৩২, নিকোলাস পুরানের ১৬ বলে ২১ ও রোমারিও শেপার্ডের ১৮ বলে ২৫ রানে ৩০০ ছাড়ায় সফরকারীদের স্কোর।
পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার হারিস রউফ। এই পেসার ১০ ওভারে ৭৭ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। শাহিন আফ্রিদি ১০ ওভারে ৫৫ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট।