তাসকিনের শেষ ওভারের প্রথম বলের বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাইফউদ্দিন। পরের বলে নাহিদ রানার স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। পর পর দুই উইকেট নিয়ে সোজা ড্রেসিংরুমের দিকে মুখ করে দৌড়ে গেলেন তাসকিন, তার সেই বিখ্যাত স্টাইলে উড়লেন, সেই সাথে উড়লো ঢাকাও। আর তাতেই খুলনাকে ২৪ রানে হারিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো নাসির হোসেনের ঢাকা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে খুলনার দুই স্পিনার নাহিদুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে ১০৮ রানে অলআউট হয় ঢাকা। মামুলি লক্ষ্যে খেলেতে নেমে তাসকিনের গতির কাছে পরাস্ত হতে হয় খুলনাকে। মাত্র ৮৪ রানেই অলআউট হয় তারা। ফলে ২৪ রানের দুর্দান্ত জয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকলো ঢাকা ডমিনেটরস। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ঢাকা ম্যাচটি হারলেই প্লে-অফ থেকে ছিটকে যেতো! প্রথম ম্যাচে খুলনাকে হারিয়ে বিপিএল শুরু করা ঢাকা, দ্বিতীয় মুখোমুখিতেও খুলনাকে হারালো।
১০৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে খুলনার শুরুটাই হয় ভূতুরে। টপ অর্ডারে শাই হোপ, মাহমুদুল হাসান জয়, আজম খান কেউই রান করতে পারেননি। টপ অর্ডারে কেবল রান করেছেন তামিম। ২৩ বলে ৩০ রান করে নাসির হোসেনের শিকার হন তামিম ইকবাল। এরপর মিডল অর্ডারে কেবল রান পেয়েছেন ইয়াসির। খুলনার অধিনায়ক ২৪ বলে ২১ রান করে আউট হওয়ার পরও আশা ছিল লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে খুলনা। কিন্তু শুরুতে টপ অর্ডারের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়া তাসকিন শেষ ওভারে দেখালেন ঝলক। সাইফউদ্দিন ও নাহিদ রানাকে তুলে নিয়ে খুলনাকে ৮৪ রানেই থামিয়ে দেন এই পেসার।
৪ ওভারে ৯ রান খরচ করে তাসকিন ৪ উইকেট নিয়েছেন। দারুণ বোলিং করে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন এই পেসার। এছাড়া নাসির হোসেন ও আল আমিন হোসেন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ঢাকা ডমিনেটরস। কিন্তু সেই একই চিত্র। নাসুম আহমেদ ও নাহিদুল ইসলামরে স্পিন ঘূর্ণিতে বড় স্কোর গড়তে পারেননি ঢাকা। ১৯.৪ ওভারে ১০৮ রান তুলে অলআউট হয় স্বাগতিক দল। এদিন এক সৌম্য সরকার ছাড়া বাকি ব্যাটারদের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘরে রান করতে পারেননি। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ১২ ও আল আমিন হোসেন ১০ রান করেন। বিপিএলের প্রতিটি ম্যাচেই টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে ঢাকার, পরে মিডল অর্ডারের লড়াইয়ে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ হয়েছে।
মঙ্গলবার উল্টোচিত্র দেখা গেছে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে মিডল অর্ডার কোনও রানই করতে পারেননি। কেবলমাত্র টপ অর্ডারে সৌম্য সরকার রানের দেখা পেয়েছেন। আগের ৭ ম্যাচে মাত্র দুইবার দুই অঙ্কের ঘরে রান করা সৌম্য এদিন হাফ সেঞ্চুরি দেখা পেয়েছেন। ৪৫ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৭ রানের ইনিংস খেলে নাসুমের বলে বোল্ড হয়েছেন এই ওপেনার। সৌম্যর এই ইনিংসের ওপর ভর করে ঢাকা ১০৮ রান তুলতে পারে।
৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার নাহিদুল ইসলাম। ১১ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। এছাড়া সাইফউদ্দিন, নাহিদ রানা ও ওয়াহাব রিয়াজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।