বাজে ফিল্ডিংয়ে খেসারত দিলো বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ভালো শুরুর পর শেষ ৫ ওভারে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ড তুলতে পারে মাত্র ১২৬ রান। অল্প পুঁজি নিয়ে ঠিক যেভাবে লড়াইয়ের দরকার ছিল, সেটি করতে পারেনি নিগার সুলতানার দল।
তারপরও দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বেশ কিছু ক্যাচ মিসের সঙ্গে বাজে ফিল্ডিংয়ে হারতে হয়েছে নিগার সুলতানার দলকে। ফলে ১০ বল আগেই নীলাক্ষী ডি সিলভা ও হর্ষিতা সামারাবিক্রমার অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটিতে ৭ উইকেট জয়লাভ করে শ্রীলঙ্কা।
গত অক্টোবরে সিলেটে অনুষ্ঠিত এয়িশা কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিগার সুলতানা দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিজ্ঞাই করেছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে এশিয়া কাপ হারের বদলা নেবেন! কিন্তু কথা রাখতে পারলো না নিগার ও তার দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারেই শুরু হলো নিগারদের বিশ্বকাপ যাত্রা।
রবিবার রাতে কেপটাউনের সাহারা পার্কে ১২৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার মারুফা আক্তার। ১৭ বলে ১৫ রান করে চামারী আউট হতেই দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। পরপর দুই বলে বিশমি গুনারত্নে (১) ও অনুষ্কা সঞ্জীওয়ানি (০) রানে ফেরান মারুফা।
এরপর চতুর্থ উইকেটে নীলাক্ষী ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে ওপেনার হর্ষিতা সামারাবিক্রমার ৭৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটি গড়েন। এই জুটির ওপর ভর করে অনায়াসেই ম্যাচ জেতে লঙ্কানরা।
হর্ষিতা সামারাবিক্রমার ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রানের ইনিংস। ৫০ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান লঙ্কান এই ওপেনার। তার যোগ্য সঙ্গ দেওয়া নীলাক্ষীর ব্যাট থেকে আসে ৩৮ বলে ৪১ রান।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মারুফা। ২৩ রানে তার শিকার ৩ উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ২ উইকেটে ৪৮ রান। মিডল অর্ডারে নিগার সুলতানা-লতা মণ্ডলদের ব্যাট দিচ্ছিল ভরসা। কিন্তু হঠাৎই ঘটে ছন্দপতন। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট, তাতে স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে মাত্র ২৬ রান। লঙ্কান স্পিনার ওশাদি রানাসিংহে এক ওভারে নিগার-লতা ফিরে যাওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশ।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রানের ইনিংস খেলেন সোবহানা মোস্তারি। ৩২ বলে ৫টি চারে তিনি এই রান করেন। ৩৪ বলে ২৮ রান করে আউট হন অধিনায়ক নিগার। একই ওভারে ফেরেন ১৩ বলে ১১ রান করা লতা। দুজনের জুটি থেকে ৩৩ বলে ২৪ রান আসে। এই জুটি ভাঙার পরেই বাংলাদেশ ছন্দ হারিয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
লঙ্কান বোলারদের মধ্যে অফস্পিনার ওশাদি রানাসিংহে ২৩ রানে নেন তিন উইকেট। অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু ১৯ রানে নেন দুই উইকেট। নোকা রানাবীরা নেন একটি উইকেট।