লক্ষ্য ছিল ৩৬৮ রান। জিততে হলে বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে সফল হওয়ার রেকর্ড গড়তে হতো পাকিস্তানকে। পারেনি তারা, তবে লড়াই করেছে। বেঙ্গালুরুতে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড গড়া ওপেনিং জুটির অবদান বৃথা যায়নি। পাকিস্তানকে ৩০৫ রানে অলআউট করে ৬২ রানে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩৪৫ রানের লক্ষ্য অতিক্রম করেছিল পাকিস্তান, সেটা ছিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া তার চেয়েও বড় লক্ষ্য দেয়। ইমাম উল হক ও আব্দুল্লাহ শফিকের উদ্বোধনী জুটি হতাশ করেনি। দুজনে আলাদা হন স্কোরবোর্ডে ১৩৪ রান যোগ করে।
শফিক ৬১ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ৬৪ রান করে ২২তম ওভারের প্রথম বলে উইকেট হারান। মার্কাস স্টয়নিস পাকিস্তানের প্রথম উইকেট তুলে নেন। এই পেসার তার পরের ওভারে আরেক ওপেনার ইমামকেও থামান। ৭১ বলে ১০ চারে ৭০ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পাকিস্তানি ব্যাটার। অধিনায়ক বাবর আজম আবার ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ১৮ রানে বিদায় নেন তিনি অ্যাডাম জাম্পার বলে।
১৭৫ রানে ৩ উইকেট হারালেও রান রেট ছিল আশা জাগানিয়া। সৌদ শাকিলকে নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। তাদের জুটি অস্ট্রেলিয়ার ঘাম ছুটাচ্ছিল। ৫৭ রানে তাদের বিচ্ছিন্ন করে স্বস্তি ফেরান প্যাট কামিন্স। শাকিল ৩০ রান করে অজি অধিনায়কের শিকার হন।
নতুন ব্যাটার ইফতিখার আহমেদকে নিয়ে তারপর হাল ধরেন রিজওয়ান। জাম্পা তাদের বিচ্ছিন্ন করেন। ইফতিখার তিন ছয়ে ২৬ রান করে এলবিডব্লিউ হন।
শেষ ১০ ওভারে ৯৬ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল ৫ উইকেট। কোণঠাসা পাকিস্তান আর পেরে ওঠেনি। বিশেষ করে ৪১তম ওভারে রিজওয়ান আউট হওয়ার পর ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইনআপ। ৪০ বলে ৪৬ রান করেন উইকেটকিপার ব্যাটার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
জাম্পার স্পিন এবং পেসারদের তোপে পড়ে ৩১ রানের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট তারা। ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার জাম্পা। স্টয়নিস ও কামিন্স দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে পাকিস্তানের কাছে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের ব্যাটিং আগ্রাসনে দুর্দান্ত শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। দুজনের জুটি ভাঙে ২৫৯ রানে। ম্যাচ শেষে পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবরও স্বীকার করলেন, এই জুটির কাছেই হারতে হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, ‘প্রথম ৩৪ ওভারে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের মাশুল আমাদের দিতে হয়েছে। আমরা ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলেছি এবং এই ধরনের ব্যাটার ঘুরে দাঁড়ায়। শেষ ১৫ ওভারের বোলিং ছিল প্রশংসনীয়।’
পঞ্চম ওভারে মিড অনে উসামা মীরের হাতে জীবন পাওয়া ওয়ার্নার ইনিংস সেরা ১৬৩ রান করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। তার সঙ্গে মার্শ করেন ১২১ রান। এরপর সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল স্টয়নিসের ২১ রানের। ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৭ রান করে তারা।
প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত অস্ট্রেলিয়ার শ্রীলঙ্কার পর পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবে যোগ দিলো। আর টানা দুই হারে বড় ধাক্কা খেলেন বাবররা।