টেস্ট খেলুড়ে সবগুলো দেশেই এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হয়। তবে ইন্ডিয়ার প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মানের সাথে পাল্লা দেওয়ার মতো কিছুই নেই। এই লিগে খেলার স্বপ্ন থাকে সব ক্রিকেটারের। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে অল্প কয়েকজন আইপিএলে খেলার সুযোগ পেলেও অনাপত্তিপত্রর জন্য যেতে পারেন না তারা। এই যেমন চলতি মৌসুমে শরিফুল ইসলাম লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বিসিবি অনাপত্তিপত্র দেয়নি বলে যেতে পারেননি। তাতে আফসোস ঝরেছে শরিফুল ইসলামের!
বড় বড় দেশগুলো থেকে প্রচুর ক্রিকেটার আইপিএল খেলার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশ থেকে খুব কম সংখ্যক ক্রিকেটারই এই সুযোগ পেয়ে থাকেন। এবার মাত্র মোস্তাফিজই আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তবে শরিফুলেরও সুযোগ এসেছিল। লখনউ সুপার জায়ান্টস বাংলাদেশের পেসারকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু জাতীয় দলের ব্যস্ত সূচি এবং ইনজুরির কথা বিবেচনা করে শরিফুলকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া থেকে বিরত থাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যার কারণে আইপিএল খেলা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দারুণ ছন্দে থাকা এই পেসার।
গত কিছুদিন ধরেই মিরপুরে আলোচনা আইপিএলের অনাপত্তিপত্র নিয়ে। মোস্তাফিজের অনাপত্তিপত্র বাড়ানো নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে সম্প্রতি। এই আলোচনার মধ্যেই শরিফুলের বিষয়টি সামনে আসে। বৃহস্পতিবার শেখ জামালকে উড়িয়ে দিয়ে আবাহনীর দারুণ জয় এনে দেওয়ার নায়ক শরিফুল। এদিন ম্যাচ শেষে আইপিএল থেকে প্রস্তাব আসার পুরনো স্মৃতি মনে করান এই পেসার। আইপিএলের দল লখনউ পুরো মৌসুমের জন্যই শরিফুলকে চেয়েছিল। কিন্তু বিসিবি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনাপত্তিপত্র দিতে চাইলেও লখনউ তাতে রাজি হয়নি। শরিফুল বলেছেন, ‘লখনউ থেকে এসএমএস দিয়েছিল। তারা আমাকে চাচ্ছিল, কিন্তু এনওসির সময়টা খুব কম ছিল, যার জন্য তারা আর রেসপন্স করেনি। যদি ফুল এনওসিটা বিসিবি দিতো, তাহলে হতো। কিন্তু আমাদের যেহেতু জিম্বাবুয়ে সিরিজ আছে, সেটা চিন্তা করে এনওসিটা ওভাবে দেওয়া হয়েছিল।’
এই মৌসুমে আইপিএল খেলতে না পারলেও হতাশ নন শরিফুল। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে স্বপ্ন দেখেন আইপিএল মাতানোর, ‘ইচ্ছে তো আছে। সুস্থ থাকলে যেভাবে যাচ্ছে, তেমনটা হলে ইনশাআল্লাহ একদিন আইপিএল খেলবো। যদি তখন কোনো খেলা না থাকে। আশা থাকবে ইচ্ছেও আছে, হয়তো সুযোগ পেলে ভালো কিছু করবো।’
চলতি আসরে আইপিএলে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে খেলছেন মোস্তাফিজুর রহমান। চেন্নাইয়ের হয়ে দারুণ পারফর্ম করছেন তিনি। তার সাথে নিয়মিতই খেলা নিয়ে শরিফুল আলাপ করছেন। মোস্তাফিজ তার সাফল্যের রহস্যও শরিফুলের কাছে শেয়ার করেছেন, ‘অবশ্যই তার সঙ্গে প্রায় দিনই কথা হয়। সে কল দেয়, আমিও কল দিই। জাস্ট উনি বলে যে ওখানে চাপ কম, তার জন্য হয়তোবা বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাচ্ছে।’
শরিফুলের নিজেরও এই মুহূর্তে দারুণ সময় কাটছে। জাতীয় দলের জার্সিতে দেশের সেরা বোলার এখন তিনিই। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটে সমান তালে পারফর্ম করে যাচ্ছেন এই তরুণ। তারপরও নিজেকে নাম্বার ওয়ান ভাবতে চান না, ‘নাম্বার ওয়ান পেসার বললে ভুল হবে। আমরা যতগুলো পেসার আছি দেশের, সবাই নাম্বার ওয়ান। যে যখন খেলে, যার যখন সময় আসে সেই পারফর্ম করে। সো আমি মনে করি যে যারা ম্যাচ খেলি সবাই নাম্বার ওয়ান।’
প্রিমিয়ার লিগে বড় দলের বিপক্ষে খেলা সব সময়ই চাপের। সেক্ষেত্রে দলটা যদি হয় আবাহনী, তাহলে তো কথাই নেই। আবাহনীর জার্সিতে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে শরিফুল বলেছেন, ‘চাপ বলতে কিছু না এখানে। হয়তো সবার চাওয়াটা বেশি, আবার ওভাবে না হলেও কিছু করার নেই। আমি আমার দিক থেকে চেষ্টা করবো, প্রতিটি খেলোয়াড়ই যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করবে, হয়তো একদিন সাফল্য আসবে একদিন আসবে না, সো এটা নিয়ে থাকতে হবে।’