এক সপ্তাহ আগে মুশফিকুর রহিম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে থেকে বিদায় নিয়েছেন। তারপর মাহমুদউল্লাহও বুধবার রাতে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতি টেনেছেন। সাবেক হয়ে যাওয়া অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সুজন বলেছেন, ‘ওদের (মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ) অভিজ্ঞতা কেউ নিতে পারবে না। আপনি মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতা কিনতে পারবেন না। ওরা শুরুতে বড় তারকা ছিল তা না, তিলে তিলে নিজেদের গড়ে তুলেছে। হয়তো ওদের বদলি শতভাগ পাবেন, তাও সত্যি কথা না। ওদের শূন্যস্থান হঠাৎ করে পূরণ না হলেও আমি মনে করি যথেষ্ট ভালো খেলোয়াড় আছে, যারা কি না এই জায়গা অবশ্যই নিতে পারবে।’
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর আগেও জাতীয় দল থেকে অনেক ক্রিকেটার অবসর নিয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগের অবসরই হয়েছে মাঠের বাইরে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু মুশফিক-তামিম-মাহমুদউল্লাহদের মতো ক্রিকেটাররা মাঠ থেকেই অবসর নেওয়ার দাবি রাখেন মনে করেন সুজন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় নিয়ে এসেছিল ওরা। আমি মনে করি মাঠ থেকে অবসর নেওয়া ওদের প্রাপ্য। আমি মনে করি যারা ওদের সমর্থক, যারা ওদেরকে ভালোবেসেছে এতদিন, তারাও একটা বড় করতালির মধ্যে ওদের মাঠ থেকে বিদায় দেওয়ার দাবি রাখে। আমরা যারা সমর্থক ছিলাম, আমরা যারা ওদের ক্রিকেটকে ভালোবাসি, সেই সুযোগটা আমাদের হয়তো হলো না। কেন ওরা মাঠ থেকে অবসর নিলো না, ওরাই ভালো বলতে পারবে।’
সুজন আরও বলেছেন, ‘খেলাটা ছাড়ার সময়ও যদি মাঠ থেকে বিদায় হয়, জিনিসটা আরও দর্শনীয় হয়। ছাড়াটা আসলেও কষ্টের, যেটা আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। কিন্তু অবশ্যই ওদের ক্যারিয়ারের যে সময়, দুজনেই বুদ্ধিদ্বীপ্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হয়তো ওরা চাইলে আরও কিছুদিন খেলতে পারতো। সেটা কতটা বুদ্ধিদ্বীপ্ত হতো আমি জানি না। মাঠ থেকে বিদায় নিলে হয়তো আরেকটু ভালো হতো। মাহমুদউল্লাহ অবসর নিতো, গ্যালারি ভরা দর্শক থাকতো, মানুষের হাততালিতে বিদায় নিতো সেটা ওর জন্য বড় পাওয়া হতো। আমি জানি না ওরা কেন মাঠ থেকে অবসর নিতে চায় না। হলে ভালো হতো।’
সুজন মনে করেন ক্রিকেটারদের উচিত অবসরের বিষয়টি বোর্ডে আগেই জানিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ এটা বলে, তখন একটা আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার ব্যবস্থা করতে পারে। বোর্ড কি কাউকে জোর করতে পারে আপনি অবসর নেন? ও যদি বলে করতো যে পরের সিরিজে অবসর নেবো। তাহলে বিসিবি প্রস্তুতি নিতে পারে। ওরা যদি না বলে, বিসিবি কীভাবে ব্যবস্থা করবে।’
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সুজন আরও বলেছেন, ‘আমি যখন অবসর নেই, আমার পুরো পরিবার মাঠে ছিল। আমার বাবা, চা, ভাই-বোন, আমার পরিবার, স্ত্রী। আমি বগুড়ায় অবসর নিয়েছিলাম। তারা ঢাকা থেকে ওখানে গিয়েছিল। সবাই মাঠে ছিল। আমি খুবই গর্বিত ছিলাম আমার পুরো পরিবার শেষ খেলা দেখতে এসেছিল। এটা তো একটা ব্যাপার থাকেই না, যে আমি মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছি। বোর্ডে তখন যারা ছিল, আমাকে ওই সম্মানটা দিয়েছিল।’