বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রথম দিন বোলারদের দখলে। তবে স্টিভ স্মিথ ও বেউ ওয়েবস্টারের ফিফটি গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। কাগিসো রাবাদা পাঁচ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২১২ রানে থামালেও ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার দক্ষিণ আফ্রিকাও। মিচেল স্টার্কের বোলিং তোপে ৪ উইকেটে ৪৩ রানে দিন শেষ করেছে তারা। ১৬৯ রানে পিছিয়ে প্রোটিয়ারা।
টেম্বা বাভুমা টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। তারপর কাগিসো রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেনের তোপে অজিদের চাপে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সকালের সেশনের পর অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৪ উইকেটে ৬৭ রান। রাবাদা ও ইয়ানসেন দুটি করে উইকেট নেন।
সপ্তম ওভারে ৪ বলে ৪ রান দিয়ে উসমান খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনকে মাঠছাড়া করেন রাবাদা। প্রথম স্লিপে ডেভিড বেডিংহামের ক্যাচ হয়ে খাজা ডাক মারলে ১২ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙে। ৩ বল পর দলের ১৬ রানে দ্বিতীয় শিকার হন গ্রিন। ৪ রান করে এইডেন মারক্রামকে ক্যাচ দেন তিনি।
মার্নাস লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথ ইনিংস মেরামত করছিলেন। কিন্তু ৩০ রানে এই জুটি ভাঙে লাবুশেনের বিদায়ে। অজি ওপেনার ৫৬ বলে ১৭ রানে কিপার কাইল ভেরেইন্নার ক্যাচ হোন। ৪৬ রানে তিন উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
ইয়ানসেন তার দ্বিতীয় উইকেট নেন ট্রাভিস হেডকে ফিরিয়ে। গত বছরের ফাইনালে একই পরিস্থিতিতে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার মাত্র ১১ রান করে ভেরেইন্নার এক হাতের ক্যাচে বিদায় নেন।
২১ রানের জুটি ভাঙতেই প্রথম সেশন শেষ হয়, এই সময় ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ।
প্রথম সেশনে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। লাঞ্চে তারা দাপট দেখায়। স্মিথ ও ওয়েবস্টারের হাফ সেঞ্চুরিতে এই সেশনে তারা যোগ করে ১২৩ রান। অবশ্য স্মিথ টিকে থাকতে পারেননি।
চা বিরতিতে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৫ উইকেটে ১৯০ রান। ৪ উইকেটে ৬৭ রানে লাঞ্চে গিয়েছিল তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার কাগিসো রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেন দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন।
দ্বিতীয় সেশনে অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র উইকেট পান মারক্রাম। ৪২তম ওভারে ব্রেকথ্রু আনেন তিনি। ওই ওভারের শেষ বলে স্মিথের কভার ড্রাইভে ইয়ানসেন প্রথমবারে বল ধরতে পারেননি। দ্বিতীয়বারও তার হাত ফসকে যায় বল। তৃতীয়বারে বল লুফে নেন ইয়ানসেন। ১১২ বলে ১০ চারে ৬৬ রানে থামেন স্মিথ।
ওয়েবস্টারের সঙ্গে ৭৯ রানের জুটি ছিল স্মিথের। ৭৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। দলীয় ১৪৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
চা বিরতির সময় ওয়েবস্টার ৫৫ ও অ্যালেক্স ক্যারি ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মাঠে নেমে রাবাদার আগুন বোলিংয়ে এই সেশনে আর ২২ রান করে বাকি পাঁচ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার দেশের শীর্ষ টেস্ট বোলারের তালিকায় অ্যালান ডোনাল্ডকে টপকে চারে ওঠেন।
ওয়েবস্টার ৯২ বলে ১১ চারে সর্বোচ্চ ৭২ রান করে আউট হন। রাবাদা ১৫.৪ ওভারে ৫১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট পান। ইয়ানসেন নেন তিন উইকেট।
অল্প পুঁজিতেও দারুণ লড়াইয়ে ম্যাচ হাতের মুঠোয় রাখে অস্ট্রেলিয়া। স্টার্ক ইনিংসের ষষ্ঠ বলে মারক্রামকে খালি হাতে ফেরান। তার সুইংয়ে প্রোটিয়া ওপেনারের স্টাম্প ভাঙে। অজি পেসার তার পঞ্চম ওভারে রায়ান রিকেলটনকে ১৬ রানে আউট করেন।
এরপর দাঁত কামড়ে পড়ে থাকেন বাভুমা ও উইয়ান মুল্ডার। প্যাট কামিন্স ৪০ বলে ৬ রানের এই জুটি ভেঙে দেন। মুল্ডার ৪৪ বলে ৬ রান করে বোল্ড হন।
শেষ বিকালে ট্রিস্টান স্টাবসকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। জশ হ্যাজেলউডের বলে ২ রানে বোল্ড হন তিনি। বাভুমার সঙ্গে তার ৫ রানের জুটি ছিল ৪০ বলের।
৩০ রানে চার উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা দিন শেষ করেছে আরও ১৩ রান করে। ৮ রানে বেডিংহাম ও বাভুমা ৩ রানে অপরাজিত আছেন।
স্টার্ক ৭ ওভারে ১০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন।