X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২
ফিরে দেখা বিশ্বকাপ

২০১৪: ব্রাজিলের লজ্জা, আর্জেন্টিনার স্বপ্নভঙ্গ ও জার্মানির উল্লাস

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১১ জুন ২০১৮, ২২:৩২আপডেট : ১১ জুন ২০১৮, ২২:৩২

দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। রাশিয়ায় বসতে যাচ্ছে ফুটবল মহাযজ্ঞের ২১তম আসর। তার আগের প্রতিযোগিতাগুলো কেমন ছিল, কারাই বা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল- ফুটবল উৎসবের বানে ভেসে যাওয়ার আগে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক সেখানে-

জার্মানির শিরোপা উৎসব ফুটবল তাদের ধ্যান-জ্ঞান। ফুটবল তাদের হৃদয়ের স্পন্দন। ফুটবল তাদের কাছে শুধু খেলা নয়, জীবনের বহিঃপ্রকাশ। বলা হয় ব্রাজিলিয়ানদের জীবনে দুটি খোরাক- এক ফুটবল, দুই উৎসব। আর এই উৎসবটাই যখন ফুটবলে ভর করে আসে, তখন গোটা ব্রাজিল মিলে যায় এক মোহনায়।

লাতিন আমেরিকার এই দেশেই বসেছিল ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ। ফুটবল ফিরেছিল তার তীর্থে। আর ব্রাজিলিয়ানরা পেয়েছিল ইতিহাসের দায় শোধ করার সুযোগ। ১৯৫০ সালের যন্ত্রণা বয়ে বেড়ানো সাম্বার দেশের মানুষ দেখেছিল নতুন স্বপ্ন। সেবার ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরে শোকের দেশে পরিণত হয়েছিল ব্রাজিল। মারাকানার ২ লাখ দর্শকের সঙ্গে লাতিন দেশটির কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের্ চোখ ভিজেছিল জলে।

৬৪ বছর আগের যন্ত্রণা ভুলতে এসে উল্টো নতুন ট্র্যাজেডির শিকার তারা। সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে লজ্জার সাগরে ডোবে স্বাম্বার দেশের মানুষ। মারাকানাজো ভুলতে গিয়ে উল্টো মিনেইরো ‘ভূত’ চেপে বসে ব্রাজিলিয়ানদের ঘাড়ে।

ব্রাজিলের লজ্জার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দেখেছিল বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন। ডিয়েগো ম্যারাডোনার পর তাদের স্বপ্নপূরণের হাতিয়ার ছিলেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের পারফরম্যান্সে ভর করে ফাইনালেও ওঠে আর্জেন্টিনা। কিন্তু হলো না, শিরোপার কাছে গিয়েও ফিরতে হয় খালি হাতে। মারাকানার অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ফাইনালে আলবিসেলেস্তেদের ১-০ গোলে হারিয়ে চতুর্থবার বিশ্ব জয়ের উল্লাসে মাতে জার্মানি।

অন্য চোখে: একমাত্র দল হিসেবে বিশ্বকাপ অভিষেক হয় বসনিয়া-হার্জেগোভিনার। বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয় গোল-লাইন প্রযুক্তি।

একনজরে:

আয়োজক: ব্রাজিল

মোট দল: ৩২

ভেন্যু: ১২

চ্যাম্পিয়ন: জার্মানি

রানার্স-আপ: আর্জেন্টিনা

মোট ম্যাচ: ৬৪

মোট গোল: ১৭১

সর্বোচ্চ গোলদাতা: হামেস রোদ্রিগেস (কলম্বিয়া), ৬ গোল

সেরা খেলোয়াড়: লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা)

সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়: পল পগবা (ফ্রান্স)

সেরা গোলরক্ষক: মানুয়েল নয়ার (জার্মানি)

ফরম্যাট:

২০১০ বিশ্বকাপের ফরম্যাটেই হয় ব্রাজিলের আসর। ৩২ দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে একে অন্যের সঙ্গে। প্রত্যেক গ্রুপে থাকা ৪ দল নিজেদের মুখোমুখি হওয়ার পর পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল জায়গা করে নেয় দ্বিতীয় রাউন্ডে। এভাবে প্রত্যেক গ্রুপ থেকে আসা ২ দল নিয়ে নকআউট পর্ব শুরু হয় শেষ ষোলো দিয়ে। সেখানকার জয়ী দল কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল হয়ে জায়গা করে নেয় ফাইনালে।

গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় চ্যাম্পিয়ন স্পেন গ্রুপ পর্ব:

অঘটনের শিকার স্পেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে ব্রাজিলে নেমে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ‘লা রোহা’। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডস উড়িয়ে দেয় ভিসেন্তে দেল বোস্কের দলকে। রবিন ফন পার্সি ও আরিয়েন রবেনের জোড়া লক্ষ্যভেদে ডাচরা পায় ৫-১ গোলের জয়। দাপুটে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা নেদারল্যান্ডস ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাম লেখায় শেষ ষোলোতে। আর স্পেনকে ২-০ গোলে হারানো চিলি রানার্স-আপ হয়ে সঙ্গী হয় তাদের।

নেইমারের জোড়া লক্ষ্যভেদে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও ব্রাজিল পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়ে মেক্সিকোর সঙ্গে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে অবশ্য ক্যামেরুনকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাম লেখায় নকআউট পর্বে। এই গ্রুপ থেকে তাদের সঙ্গী হয় মেক্সিকো।

তিন ম্যাচের সবক’টি জিতে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখে কলম্বিয়া। গ্রিসকে ৩-০ গোলে, আইভরি কোস্টকে ২-১ গোলে ও জাপানকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পথে প্রত্যেক ম্যাচে লক্ষ্যভেদ করেন হামেস রোদ্রিগেস। ৩ ম্যাচে এক জয়, এক ড্র ও এক হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ হয়ে কলম্বিয়ার সঙ্গী হয় গ্রিস।

‘ডি’ গ্রুপে চমক দেখায় কোস্টারিকা। সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে কনকাকাফ অঞ্চলের দলটি। গ্রুপের অন্য সদস্য উরুগুয়ে রানার্স-আপ হিসেবে যায় পরের রাউন্ডে। তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন একসঙ্গে থাকায় ‘গ্রুপ অব ডেথ’ ছিল এই গ্রুপটাই। সেই ‘মৃতুকূপ’ পেরিয়ে ইতিহাস গড়ে কোস্টারিকা।

‘ই’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে সমস্যা হয়নি ফ্রান্সের। হন্ডুরাসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর ‘লে ব্লুরা’ ৫-২ গোলে হারায় সুইজারল্যান্ডকে। শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পরও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নরা। আর সুইজাল্যান্ড হয় রানার্স-আপ।

‘এফ’ গ্রুপে টানা তিন ম্যাচ জিতে দাপট দেখিয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। বসনিয়া-হার্জেগোভিনার বিপক্ষে লিওনেল মেসির লক্ষ্যভেদে ২-১ গোলের জয় দিয়ে লাতিন দেশটি শুরু করে বিশ্বকাপ। এরপর মেসি জাদুতে ইরানকে ১-০ গোলে ও নাইজেরিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে নাম লেখায় নকআউট পর্বে। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের সঙ্গী হয় নাইজেরিয়া।

‘জি’ গ্রুপে অঘটনের শিকার হয় পর্তুগাল। গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারেনি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোরা। তাদের হতাশ করে গ্রুপের দ্বিতীয় হয়ে পরের রাউন্ডে যায় যুক্তরাষ্ট্র। আর দাপুটে ফুটবলে গ্রুপসেরা জার্মানি।

‘এইচ’ গ্রুপে ফেভারিট হয়েই বিশ্বকাপ শুরু করে বেলজিয়াম। আলজেরিয়াকে ২-১ গোলে হারানো বেলজিয়াম টানা তিন ম্যাচ জিতে হয় গ্রুপসেরা। আর আলজেরিয়া নকআউট পর্বে যায় রানার্স-আপ হিসেবে।

শেষ ষোলো:

শেষ ষোলোতে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়ে ব্রাজিল। ১৮ মিনিটে দাভিদ লুইজের লক্ষ্যভেদে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেলেও ৩২ মিনিটে চিলিকে সমতায় ফেরান আলেক্সিস সানচেস। অতিরিক্ত সময় ও নির্ধারিত সময় ওই ১-১ গোলেই শেষ হয়, ফল নিষ্পত্তির জন্য হওয়া টাইব্রেকারে ব্রাজিল ৩-২ গোলে হারায় চিলিকে।

আর্জেন্টিনাকেও ঘাম ঝরাতে হয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল করতে ব্যর্থ আলবিসেলেস্তেরা সফল হয় ১১৮ মিনিটে গিয়ে। মেসির দারুণ পাস ধরে আর্জেন্টিনাকে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলেন আনহেল দি মারিয়া।

শেষ ষোলোর আট ম্যাচের পাঁচটিই গড়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। জার্মানিকেও যেমন আলজেরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পেয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য থাকার পর ৯২ মিনিটে জার্মানদের এগিয়ে নেন আন্ড্রে শুর্লে। এরপর ১২০ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন মেসুত ওয়েজিল। ইনজুরি টাইমে আলজেরিয়া এক গোল শোধ করলেও কোনও লাভ হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বেলজিয়ামও ২-১ গোলে জিতেছিল অতিরিক্ত সময়ে। কোস্টারিকা শেষ ষোলোর বাধা পেরিয়েছিল গ্রিসের বিপক্ষে টাইব্রেকার জিতে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর পেনাল্টি শুট-আউটে ৫-৩ গোলে জেতে কোস্টারিকা।

হামেস রোদ্রিগেসের জোড়া লক্ষ্যভেদে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে কলম্বিয়া। ফ্রান্সও একই ব্যবধানে হারায় নাইজেরিয়াকে। নেদারল্যান্ডস আবার ২-১ গোলের জয় পায় মেক্সিকোর বিপক্ষে।

কলম্বিয়ার বিপক্ষে চোটে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় নেইমারের কোয়ার্টার ফাইনাল:

টানা দুই বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে আটকা পড়েছিল আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল। ২০১৪ সালের আসরে এসে এই বৃত্ত ভাঙে লাতিন আমেরিকার দল দুটি। গনসালো হিগুয়েইনের লক্ষ্যভেদে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল। আর কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিল পায় ২-১ গোলের জয়।

থিয়াগো সিলভা ও দাভিদ লুইজের লক্ষ্যভেদে ফোর্তালেজার ম্যাচটি ব্রাজিল জিতলেও খায় বিশাল ধাক্কা। কোয়ার্টার ফাইনালের এই ম্যাচে ৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিলের প্রধান অস্ত্র নেইমার। কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার হুয়ান কামিলো জুনিগা হাঁটু দিয়ে নেইমারের পিঠের নিচের দিকে আঘাত করলে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তার।

উত্তেজনাকর কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল জার্মানি-ফ্রান্স। মারাকানার এই ম্যাচে ১৩ মিনিটে জার্মানিকে এগিয়ে নেন ম্যাট হামেলস। ওই গোলটাই সেমিফাইনালে তুলে দেয় জার্মানিকে। নেদারল্যান্ডস শেষ চার নিশ্চিত করে টাইব্রেকার জিতে। কোস্টারিকার সঙ্গে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য ড্র করে ডাচরা। এরপর টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলের জয় পায় তারা।

জার্মানির বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়ে চোখের জলে মাঠ ছাড়ছেন দাভিদ লুইজ ও থিয়াগো সিলভা সেমিফাইনাল:

অমন লজ্জার পরিস্থিতির জন্য ব্রাজিলিয়ান তো দূরে থাক, বিশ্বের কোনও ফুটবলপ্রেমীই প্রস্তুত ছিল না নিশ্চিতভাবে। চোটের কারণে নেইমার নেই, অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা আবার ছিলেন না নিষেধাজ্ঞার কারণে; দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে জার্মানির বিপক্ষে ব্যাকফুটে ছিল ব্রাজিল। তাই বলে ৭-১ গোলে লজ্জায় ডুবতে হবে স্বাগতিকদের, সেটা ঘুণাক্ষরেও ভাবার কথা নয় কারও।

১৯৫০ সালে ঘরের মাঠের ফাইনাল হারের দুঃখ ভুলতে চেয়েছিল ব্রাজিল ২০১৪ সালের আসর দিয়ে। কিন্তু মারাকানোজো মুছে ফেলতে গিয়ে উল্টো মিনেইরোর ‘ভূত’ চেয়ে ধরলো ব্রাজিলিয়ানদের। বেলো হরিজোন্তের ওই ম্যাচে জার্মানরা আক্ষরিক অর্থেই খেলেছে সেলেসাওদের নিয়ে। ১১ মিনিটে থোমাস ম্যুলারের লক্ষ্যভেদে জার্মানি এগিয়ে গেলেও টের পাওয়া যায়নি ব্রাজিলের জন্য অমন লজ্জা অপেক্ষা করছে। কিন্তু ২৩ থেকে ২৯- ছয় মিনিটের এক ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ব্রাজিলের স্বপ্ন। ২৩ মিনিটে মিরোস্লাভ ক্লোসা লক্ষ্যভেদ করে ১৬ গোল করে রোনালদোকে টপকে হলেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা। এরপর ২৪ ও ২৬ মিনিটে দুইবার জাল খুঁজে পান টোনি ক্রোস। আর ২৯ মিনিটে গোলোৎসবে নাম লেখান সামি খেদিরা। বিরতির পর আন্ড্রে শুর্লে করেন আবার জোড়া লক্ষ্যভেদ। ভেঙে পড়া ব্রাজিলের হয়ে ৯০ মিনিটে একবার বল জালে জড়ান অস্কার।

১৯৯০ সালের পর আবারও ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতার মঞ্চে ওঠে মেসিরা। আলবিসেলেস্তেদের চেয়ে এই ম্যাচে ডাচরা সুযোগ তৈরি করেছে বেশি। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি বলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় তাই শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। টাইব্রেকারে গড়ানো সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক গোলরক্ষক সের্হিয়ো রোমেরো। নেদারল্যান্ডসের প্রথম পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেওয়ার পর তৃতীয়টিও রুখে দেন তিনি। বিপরীতে আর্জেন্টিনা চার স্পট কিকের সবক’টি জালে জড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার আনন্দে মাতে।

বিশ্বকাপ জেতানো গোলের পর মারিও গোৎসের বাধভাঙা উল্লাস ফাইনাল:

দুই যুগ পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। ডিয়েগো ম্যারাডোনার পর মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নপূরণটা তখন ‘হাতছোঁয়া’ দূরত্বে। ওদিকে দুই যুগ পর বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নটা উঁকি দিচ্ছিল জার্মানদের মনেও। দুই জার্মানি এক হওয়ার পর কখনও শিরোপা জেতা হয়নি যে তাদের।

ফুটবল দেবতা জার্মানদেরই দিলেন দু’হাত ভরে। ‘সুপার-সাব’ মারিও গোৎসের গোলে চতুর্থ বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতে জার্মানি। বিপরীতে আরেকবার ফাইনালে হারের স্বপ্নভঙ্গে স্তব্দ আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ সালের ইতালির বিশ্বকাপেও আলবিসেলেস্তেরা শিরোপা হারিয়েছিল এই জার্মানদের বিপক্ষেই।

মানুয়েল নয়ারের সঙ্গে গনসালো হিগুয়েইনের ওয়ান টু ওয়ান মিস কিংবা মেসির শট সেকেন্ড বার দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় আক্ষেপের আগুনেই পুড়তে হয়েছে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। বিপরীতে পুরো ৯০ মিনিটে খুব কমই সুযোগ পাওয়া জার্মানি অতিরিক্ত সময়ের গোলে করে শিরোপা উদযাপন।

মারাকানার ফাইনালের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। অতিরিক্ত সময়েও কোনও পক্ষ গোল করতে পারছিল না, ১১২ মিনিট পর্যন্তও স্কোরলাইন ছিল ০-০। কিন্তু পরের মিনিটেই গোৎসের সেই ভলি। আন্ড্রে শুর্লের ক্রস প্রথমে বুক দিয়ে নামিয়ে বাঁ পায়ের ভলিতে বল জালে জড়িয়ে দেন ৮৮ মিনিটে বদলি হয়ে নামা গোৎসে। যাতে জার্মানি জেতে চতুর্থ শিরোপা, আর আর্জেন্টিনার স্বপ্নভঙ্গ।

/কেআর/
সম্পর্কিত
অবাধ্য সেনাদের মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে রাশিয়া: হোয়াইট হাউজ
চিলির হারে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা
বিশ্বকাপের সব উপার্জন দান করবেন এমবাপে!
সর্বশেষ খবর
দুই ভাইয়ের ‘দ্বন্দ্বে’ প্রতিশোধ নিতে মুরাদনগরের সেই ঘটনার ভিডিও ছড়ানো হয়: র‌্যাব
দুই ভাইয়ের ‘দ্বন্দ্বে’ প্রতিশোধ নিতে মুরাদনগরের সেই ঘটনার ভিডিও ছড়ানো হয়: র‌্যাব
গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবের নিশ্চয়তা চায় হামাস
গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবের নিশ্চয়তা চায় হামাস
জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬ সাংবাদিক: কেমন আছে তাদের পরিবার
জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬ সাংবাদিক: কেমন আছে তাদের পরিবার
কুমিল্লায় বিদেশি পিস্তলসহ বিএনপি নেতা গ্রেফতার
কুমিল্লায় বিদেশি পিস্তলসহ বিএনপি নেতা গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল