ঢাকার বসুন্ধরা কিংসে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সাফ নারীদের অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। চার দেশের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের দৃষ্টি শিরোপায়।
বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার্ সিনিয়রদের দলের অধিনায়ক হলেও শুধু বয়সের সীমারেখায় খেলতে পারেন অনূর্ধ্ব-২০ দলে। দক্ষিণ এশিয়ার বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের শিরোপাও নিজেদের কাছে রাখতে চাইছেন এই ডিফেন্ডার। সংবাদ সম্মেলনে এসেও তেমনটাই জানালেন তিনি।
এবারের সাফে অংশ নিচ্ছে না অন্যতম ফেভারিট ভারত। ভারতীয় অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ না করার পেছনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কারণ জানানো হয়নি।
এবারের নারী সাফে অংশ নেবে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হবে খেলা। সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দলটি হবে চ্যাম্পিয়ন।
১১ জুলাই উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার।
মিয়ানমারে সর্বশেষ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের এই দল থেকে বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পেয়েছেন ৮ ফুটবলার- আফঈদা খন্দকার, মোসাম্মৎ সাগরিকা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, স্বর্ণা রানী মণ্ডল, জয়নব বিবি রিতা, মিলি আক্তার ও উমহেলা মারমা।
নতুন কিছু প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছে বর্তমান অনূর্ধ্ব-২০ দলে। এদের মধ্যে নবিরন খাতুন, সুরমা জান্নাত, কানন রানী বাহাদুর, অয়ন্ত বালা মাহাতো, পূজা দাস অন্যতম।
প্রথমবারের মতো বয়সভিত্তিক দলের দায়িত্বে কোচ পিটার বাটলার। এই টুর্নামেন্ট নিয়েও দারুণ আশাবাদী তিনি। বাফুফে ভবনে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘এই মেয়েরা সবাই দায়িত্ববান। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে দুর্দান্ত খেলেছে। তাদেরই বেশির ভাগ এখানে খেলবে। ৭ জন ফুটবলার এই দলে খেলার যোগ্য। মেয়েরা প্রস্তুত। গত কিছু দিন ওরা দারুণ অনুশীলন করেছে। আশা করি এখানে আমরা ভালো কিছুই উপহার দেবো।’
এরপর তিনি যোগ করেন, ‘আমরা হয়তো এই টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ, কিন্তু আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে।’
তিনি বলেন, ‘মেয়েরা গত কয়েক মাস ট্যাকটিক্যালি ও ডিসিপ্লিনের জায়গায় দারুণ উন্নতি করেছে, যা তাদের শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ করে দেবে।’
আফঈদা, সাগরিকাদের ওপর দারুণ আস্থা রয়েছে বাটলারের। তার কথা, ‘আমাদের মেয়েদের ফুটবল খেলার ধরন সত্যি প্রচুর লোককে বিস্মিত করেছে। এদের ওপর আমার গভীর আস্থা রয়েছে, যেটা এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সফল হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’
প্রতিপক্ষ সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই বাটলারের, ‘আমি নেপাল, ভুটানের খেলা খুব বেশি দেখিনি। তবে প্রতিপক্ষকে সমীহ করছি। পরিস্থিতি অনুসারে আমরা কৌশল পরিবর্তন করবো ম্যাচে।’
এশিয়ান কাপে বাংলাদেশকে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার কৃতিত্ব পুরোটাই দিয়েছেন নারী ফুটবলারদের, ‘আমাদের পথ ছিল উত্থান পতনের। কিন্তু মেয়েরা না থাকলে আজ এই জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হতো না।’
অধিনায়ক আফঈদা সাফল্য পেয়েছেন এশিয়ান কাপে। ২০২৩ সালেও অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাটিতেও শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে চান, ‘এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাই করার পর আমরা যদিও এই দলের সঙ্গে অনুশীলন করার বেশি সময় পাইনি। যে কয়দিন অনুশীলন করেছি, কোচ আমাদের যেভাবে বলেছেন সেভাবে অনুশীলনের চেষ্টা করেছি। ২০২৩ সালে এই টুর্নামেন্টে আমরা চ্যাম্পিয়ন। এখানে ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কাউকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। ওরাও ভালো খেলে। তবে আমরাও ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেতে চাই। যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি আমরাই।’