টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। আবারও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন, চতুর্থবারের মতো। আগের নির্বাচনেও ৩৬ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল তার নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে। এবারও ঘোষিত হয়েছে ৩৬ দফা নির্বাচনি ইশতেহার। ইশতেহারে ফুটবলের উন্নয়নে নানামুখী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত হতে পারলে দেশের ফুটবলকে আরও এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন কাজী সালাউদ্দিন।
রবিবার স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত ইশতেহার ঘোষণার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাফুফে সভাপতি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন বর্তমান মেয়াদের ৭৫ ভাগ কাজ হয়েছে, ‘২০১৬ সালের নির্বাচনি ইশতেহারের ৭০-৭৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। ওই ইশতেহার আমার দেওয়া ছিল না। ওই সময় একটা বিভ্রান্তি চলছিল। ইশতেহার ঘোষণা করা যে সভায় (মিটি), তাতে আমি ছিলাম না। সেটা দিয়েছিলেন তরফদার রুহুল আমিন (সেই সময়ের প্রধান নির্বাচনি সমন্বয়ক)। ২৫ শতাংশ কাজ না হওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। তবে এখানে যা বলা হয়েছে, প্রায় তিনমাস রিসার্চ করেই আপনাদের দেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন হবে। অর্থের সংস্থানও আছে।’
তখন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলা। যদিও সালাউদ্দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘এখানে আপনাদের একটা বিভ্রান্তি (কনফিউশন) আছে। বিশ্বকাপ খেলবো বলিনি। আমি বলেছি, আমরা বিশ্বকাপ খেলার চেষ্টা করবো। একটা টার্গেট নিয়ে নামতে হবে তো। আমি যদি মক্কায় যেতে চাই, তাহলে মক্কার রাস্তাতেই হাঁটতে হবে। আমরা কাজ শুরু করেছি বাস্তবিকভাবে।’
ফিফা র্যাঙ্কিং নিয়ে তার কথা, ‘আমরা যখন এসেছিলাম তখন র্যাঙ্কিং ছিল ১৮০। এখন ১৮৭। দেখুন ফ্রান্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু ওরাও র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষদল নয়। ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচগুলো গুরুত্বপূর্ণ। যদি বেশি খেলেন, ভালো করলে এগোনোর সুযোগ থাকে। আমাদের আর্থিক সংকট ছিল, যে কারণে আমরা প্রীতি ম্যাচগুলো খেলতে পারিনি।’
গত ১২ বছরে সেভাবে কোনও তারকা ফুটবলার উঠে আসেনি, যার খেলা দেখতে দর্শক মাঠে ছুটে যাবেন বিশেষ আগ্রহ নিয়ে। কেন এমন হলো? এর পেছনে বাফুফে সভাপতি গণমাধ্যমের দায়ও কিছুটা দেখেন, ‘তারকা খেলোয়াড় না হওয়ার অভিযোগের সঙ্গে আমি একমত নই। যারা ২৫ বছর আগে ফুটবল খেলেছে, তাদের ফুটবল নিয়ে কোনো কার্যক্রম নেই, আপনারা আগের সেই ফুটবলারদের নিয়ে পড়ে আছেন, টক-শোতে নিয়ে আসেন। বর্তমান খেলোয়াড়দের নিয়ে গত কয়েকমাস ধরে নিউজ করছেন। জামাল ভূঁইয়া, মামুনুলদের নিয়ে করছেন। ওদের নিয়ে নিয়মিত নিউজ করলে তারকা তৈরি হতো।’
মাঠে দর্শক না আসা প্রসঙ্গে সালাউদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘আগে মানুষ মাঠে খেলা দেখতে আসতো। এখন যানজটের (ট্রাফিকের) কারণে আসে না। আমাদের সময়ও আমরা কাতার-জাপানের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছি। এছাড়া জাতীয় দলের বিপক্ষে সেভাবে ম্যাচও খেলা হতো কম। এই যেমন দক্ষিণ কোরিয়া দলের বিপক্ষে খেলেছিলাম। সেটা আদতে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় দল। এখনকার আমাদের জাতীয় দল সত্যিকার জাতীয় দলের বিপক্ষে খেলে থাকে।’