ছোটবেলায় কিংবদন্তি বক্সার মোহাম্মদ আলীকে আটলান্টা অলিম্পিক গেমসের মশাল জ্বালতে দেখেছিলেন টিভি পর্দায়। প্রায় ২২ বছর আগের কথা আজও তার স্মৃতিতে উজ্জ্বল। তখন থেকেই কোনও গেমসের মশাল প্রজ্বালনের স্বপ্ন আসিফ হোসেন খানের। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী শুটারের। দেশের আইকনিক ক্রীড়াবিদ হিসেবে শনিবার জাতীয় যুব গেমসের মশাল জ্বালবেন আসিফ। সম্মানটা পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মশাল প্রজ্বালনের মহড়ার সময় শৈশবে ফিরে গেলেন আসিফ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বললেন, ‘বক্সার মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তাকে দেখেছি অলিম্পিক গেমসে মশাল জ্বালাতে। সেই স্মৃতি এখনও আমার মনে উজ্জ্বল। আজ রিহার্সেলের সময় সেদিনের কথা মনে পড়ছিল। তিনি মশাল জ্বালিয়েছিলেন অলিম্পিকে, সারা বিশ্বের মানুষের জন্য। আমি সেই পর্যায়ে না হলেও দেশের জন্য জ্বালাবো। এটা ভাবতেই কেমন জানি লাগছে।’
আসিফ এখন বিকেএসপির কোচ হিসেবে নতুনদের দীক্ষা দিচ্ছেন। দুই হাজার ৬৬০ জন ক্রীড়াবিদের আইকন হিসেবে মশাল জ্বালানোর সম্মান পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত, ‘আমি এখন খেলার মধ্যে নেই, কোচিং নিয়ে ব্যস্ত আছি। ভাবতেও পারিনি আমাকে যুব গেমসের মশাল জ্বালানোর আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই সম্মানে আমি অভিভূত!’
২০০২ সালে বাংলাদেশ গেমস দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই মার্চপাস্টে অভিষেক আসিফের। তখন তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। ১০ বছরের ক্যারিয়ারে কমনওয়েলথ গেমস ছাড়াও এসএ গেমস, সাফ শুটিং এবং ইন্দো-বাংলা গেমসে স্বর্ণপদক জিতেছেন তিনি। মশাল আর জাতীয় পতাকা বহনের অভিজ্ঞতা হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে কোনও গেমসে মশাল প্রজ্বালনের অভিজ্ঞতা নেই। শনিবারের জন্য তাই তিনি উন্মুখ, ‘খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর এমন অনুভূতি আর হয়নি। এটা আমার জন্য অপ্রত্যাশিত বলা যায়। মশাল বহন করেছি, কিন্তু কখনও জ্বালাইনি। ভাবতেই অবাক লাগছে, দেশের প্রধানমন্ত্রী আর হাজারো ক্রীড়াবিদের সামনে আমার মাধ্যমে গেমসের মশাল জ্বলে উঠবে।’
অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বয়সী ক্রীড়াবিদরা অংশ নিচ্ছে জাতীয় যুব গেমসে। ভবিষ্যত তারকাদের প্রতি আসিফের পরামর্শ, ‘২০০২ বাংলাদেশ গেমস দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু। তখনই শীর্ষে ওঠার, দেশের জন্য কিছু করার সংকল্প ছিল। বর্তমান তরুণ খেলোয়াড়রা চেষ্টা করলে অনেক ওপরে উঠতে পারবে, দেশকে কিছু দিতে পারবে। যুব গেমস নিজেদের মেলে ধরার প্ল্যাটফর্ম তাদের জন্য।’