X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১
পাইলট প্রকল্প হচ্ছে যশোর ও সিলেটে

ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

হিটলার এ. হালিম
২৩ জানুয়ারি ২০১৬, ১২:০২আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০১৬, ১৪:১৭

ইন্টারনেট

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন অধিদফতরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সহায়ক হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইন্টারনেট সেবার (সংযোগ) আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাইলট প্রকল্পটি যশোর এবং সিলেটে চালু করা হতে পারে।

তবে এই উদ্যোগ কোন মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে তা চূড়ান্ত না হলেও এরই মধ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের দরজা আরও খুলে যাবে। তারা বিশ্বের শিক্ষার সঙ্গে তুলনা করতে পারবে। তবে তারা এটাও বলছেন, এই সংযোগ এবং সেবা হতে হবে বিনামূল্যে। তবেই উদ্যোগের শতভাগ সুফল মিলবে।

জানা যায়, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সমন্বয় সাধন করে কাজ করবে। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা আমাদের বিভাগ থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব দেব। সরকার কাদের দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তা সবার প্রস্তাবের ওপরই নির্ভর করছে।

প্রসঙ্গত, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষের পরে স্কুলে আসছে ইন্টারনেট। এই ইন্টারনেট দিয়ে তারা অনলাইন থেকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট দেখতে পারবে, কপি করে নিতে পারবে এবং সংশোধনীও দিতে পারবে।

এছাড়াও আজকাল দেশের দুর্গম এলাকায় অনলাইনের মাধ্যমে অসংখ্য অনলাইন স্কুল গড়ে তোলা হয়েছে। এসব স্কুলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়াশোনা করানো হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।   

সংশ্লিষ্ট নথি ঘেঁটে দেখে গেছে, বিশাল এই কর্মযজ্ঞের সিদ্ধান্ত এবং পদ্ধতি গ্রহণের জন্য গত বছর একাধিক বৈঠক করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। সেসব বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অধিদফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ, গত ১৯ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত আরও একটি বৈঠক হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন সরবরাহ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। তাতে স্কুলের শিক্ষক এবং স্টাফদের জন্য কমিউনিকেশন প্যাকেজ পৃথক করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনতে কতগুলো প্রস্তাবও পেশ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের অবকাঠামো, ভৌগোলিক অবস্থান এবং শিক্ষার্থী সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে তিনটি গ্রুপে ভাগ করে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা হতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী হলে ক, ৫০০ থেকে হাজারের নিচে শিক্ষার্থী হলে খ এবং ৫০০-এর নিচে হলে শিক্ষার্থীদের গ গ্রুপে ভাগ করেও সেবা দেওয়া হতে পারে।

প্রস্তাবে গ্রুপভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান এবং ব্যান্ডউইথের চাহিদার ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা হতে পারে। প্রকল্পটি পাইলটিং করার জন্য সিলেট এবং যশোরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংযোগ স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামত দেওয়া  হয়। এই দুই জেলায় পাইলটিংয়ের ফলের ওপর ভিত্তি করে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

এছাড়াও গত বছরের নভেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের সভাপতিত্বে প্রস্তাবদানকারী মোবাইল ফোন অপারেটরের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা দেশের সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ব্রডব্যান্ড (উচ্চগতি) ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন বলে জানা গেছে।

তবে এ প্রকল্পের টাকা কে দেবে- ব্যবহারকারী (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) নাকি মন্ত্রণালয়, উদ্দেশ্যটা কি হবে, ব্যান্ডউইথের দাম কে দেবে, কোন কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমঝোতা স্মারক প্রয়োজন আছে কি-নেই এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি না বেসরকারি - কোন ক্রাইটেরিয়া হবে তা এখনও পরিস্কার হয়নি।

বিশিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেট হলো শিক্ষার বাহন। সনাতন পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে ইন্টারনেট সংযুক্ত হওয়ার কোনও বিকল্প নেই। ইন্টারনেটকে আমাদের শিক্ষার উপকরণ ভাবতে হবে। মনে করতে হবে, আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে যেমন বই-খাতাপত্র তুলে দেই, তেমনি করে ইন্টারনেটও আমরা তুলে দিচ্ছি। এর ফলে সে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরিতে যেতে পারবে। ভালো ভালো রেফারেন্স বই পড়তে পারবে। সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে।

যেসব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পায় সেসব শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা বিনামূ্ল্যে যা পাবে তার থেকে হাজারগুণে ফেরত দেবে।

তিনি আরও  বলেন, ইন্টারনেটে মূল সমস্যা হলো সহজে পাওয়া যায় না এবং পেলেও তার দাম বেশি। এ দুটোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য খুবই সময়োপযোগী। শিগগিরই এর সুফল পাওয়া যাবে।

 /এমএসএম/

আপ-এসটি

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ