তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশ সাইবার টুলস ও সাইবার সলিউশনে গ্রাহক দেশ হিসেবে থাকতে চায় না। সরকার-একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রি যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সাইবার টুলস ও সাইবার সলিউশনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে কাজ করছে। এ লক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইন্ডাস্ট্রিকে সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার নির্দেশনায় সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিকস ও মাইক্রো প্রসেসিং ডিজাইনে ৪টি ডোমেইনে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আইসিটি বিভাগ।
রবিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকার মিরপুরে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) আইসিটি বিভাগের নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাইবার নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে দেশের প্রথম সাইবার রেঞ্জ ল্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এমআইএসটির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সাইবার স্পেস, রাষ্ট্রীয় ডিজিটাল কাঠামো, সামরিক-বেসামরিক, সরকারি-বেসরকারি, আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এমআইএসটিতে সব সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন সাইবার রেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে দেশে সাইবার স্পেস, ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার বড় ছিল না। ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং লক্ষ্যগুলো পূরণ হয়েছে, তখন সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ দেশের জন্য গুরুত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে দেশে প্রথমবারের মত কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত সাইবার রেঞ্জ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা সেক্টরে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে তিনি জানান। নিয়মিত সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই, এটা সব সময়ের যুদ্ধ। তাই ২০১৯ সালে এমআইএসটিতে আমরা একটি সাইবার রেঞ্জ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি।
পলক বলেন, বিশ্বে ২০২১ সালে ৩৫ লাখ সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টের চাহিদা ছিল। এসব এক্সপার্টের চাহিদা পূরণে আইসিটি বিভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে থাকবে। এজন্য সিএসই’র পাশাপাশি কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন সিকিউরিটি বিষয় চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই সুযোগটা কাজে লাগালে আমাদের বৈদেশিক আয় ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে বেগ পেতে হবে না। আমি তখনই আনন্দিত ও সন্তুষ্ট হবো যখন আমি দেখবো এমআইএসটি থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা সারা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেবে। ওয়াল অফ ফেমে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের নাম স্থান পাবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী এমআইএসটির সাইবার রেঞ্জ ল্যাবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর আগে প্রতিমন্ত্রী ডাটা অ্যানালেটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিকস এবং সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে এমআইএসটির কমান্ড্যান্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।