মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামী তিন দিন এই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আজ দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, পাবনা, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবারের পূর্বাভাসেও ভারী বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে ২৭০ মিলিমিটার। এছাড়া টেকনাফে ১১১, সিলেটে ৭৪, নেত্রকোনায় ৭০, চট্টগ্রামে ৫৯, ফেনীতে ৪৫, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৪০, কক্সবাজারের আমবাগান ও ময়মনসিংহে ৩২, কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ২৭, পটুয়াখালীতে ২৫, নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে ১৯, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১৭, ঢাকা ও ফরিদপুরে ১৬, চাঁদপুরে ১৩, রাঙামাটি ও কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১২, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১০, টাঙ্গাইলে ৮, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ৭, ভোলায় ৪, মানিকগঞ্জের আরিচা, রাজশাহী ও শ্রীমঙ্গলে ৩, বগুড়া ও মাদারীপুরে ২, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, বান্দরবান, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও ঈশ্বরদীতে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।