X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভয় নেই, মন্ত্রী বলেছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে!

বিভুরঞ্জন সরকার
০৯ মে ২০১৬, ১২:২৪আপডেট : ০৯ মে ২০১৬, ১২:২৯

বিভুরঞ্জন সরকারআমার মা থাকেন পঞ্চগড়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে। মার বয়স এখন নব্বইয়ের কাছাকাছি। শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল, তবে সচল আছেন। বাড়ির বাইরে খুব একটা বের হন না, কিন্তু বাড়ির মধ্যে চলাফেরা করেন। টুকটাক কাজকর্মও করেন। টেলিভিশন দেখেন, দেখেন ভারতীয় বিভিন্ন বাংলা চ্যানেলে মেগা সিরিয়াল। এছাড়া, বাংলাদেশের দুই-একটি টিভি চ্যানেলে সন্ধ্যার খবর অবশ্যই দেখেন। হত্যা, খুনের খবরগুলো দেখেন আর বিচলিতবোধ করেন। আমাকে ফোন করেন, আমরা ভালো আছি কিনা জানতে চান। বলেন, বাবারে সাবধানে থাকিস, ভালো থাকিস। যা দিনকাল পড়েছে। কী যে সব হচ্ছে! মানুষ যে কেন এমন খুনোখুনি করছে। এত খুনখারাবির খবর দেখে আর ভালো লাগে না।
মাকে অভয় দিয়ে বলি, ভয়ের কিছু নেই। দেশে যা হচ্ছে তার সবই খারাপ নয়। ভালো অনেক কিছুই হচ্ছে। তবে খারাপ খবর যেভাবে প্রচার হয়, ভালো খবর সেভাবে হয় না বলে মনে হয় দেশে বুঝি শুধু খারাপই হচ্ছে। আমার এসব কথা মাকে কতটুকু আশ্বস্ত করে বুঝতে পারি না। তিনি চুপ করে থাকেন। তারপর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, বাবারে তোরা এত দূরে থাকিস। সারাক্ষণ তোদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। তাই বলছি, সাবধানে থাকিস। জানিস তো বাবা, সাবধানের মার নেই।
মাকে আমি এটা বলি না যে, মা, যারা মারা যাচ্ছেন বা যাদের মেরে ফেলা হচ্ছে তারা কেউ অসাবধানে থাকেন না। অসাবধানতাবশত কাউকে হত্যাও করা হচ্ছে না। ঘাতকরা তাদের টার্গেট করছে, গতিবিধির ওপর নজর রাখছে এবং সুযোগ বুঝে হত্যা করছে। কেউ যদি ঘাতকদের নিশানা হয় বা ঘাতকরা যদি কাউকে হত্যা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তার পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন। ঘাতকচক্র তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই যদি গোয়েন্দা জালে জড়িয়ে পড়ে কিংবা পুলিশের হাতে ধরা তাহলেই কেবল টার্গেট হওয়া ব্যক্তির পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব। কিন্তু আমাদের দেশে খুনের পরও যেখানে খুনিদের ধরা সম্ভব হয় না, সেখানে খুনের আগে ধরার প্রশ্ন আসে কিভাবে। তবে মাকে এত সব কথা বলি না, বললে তার দুশ্চিন্তার মাত্রা বাড়বে বৈ কমবে না।
২৫ এপ্রিল রাতে ফোন করে কিছুটা বিচলিতভাবেই মা জানতে চাইলেন, ভালো আছিস বাবা। আমি বলি, হ্যাঁ, ভালোই। কালই তো তোমার সঙ্গে কথা বললাম। মা বললেন, টিভির খবর দেখে মনটা কেমন অস্থির হয়ে গেলো বলেই তোকে ফোন করলাম। সকালে গাজীপুরে একজন সাবেক কারারক্ষীকে প্রকাশ্যে গুলি করে এবং বিকেলে কলাবাগানের একটি বাসায় ঢুকে একসঙ্গে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করার খবর দেখে খুবই খারাপ লাগছে। এ কী ঘটনা! ঘরে, বাইরে কোথাও যদি মানুষ নিরাপদ না থাকে তাহলে তো আতঙ্কিত হওয়ারই কথা বাবা।
মাকে বললাম, তুমি এখন খবর দেখাটা ছেড়ে দাও। এই বয়সে তোমার দেশ-দুনিয়ার খবর না জানলেও চলবে। ভারতীয় চ্যানেলের সিরিয়াল দেখো, শাশুড়ি-বউয়ের ঝগড়াসহ পারিবারিক ক্যাচাল  দেখে সময় কাটাও। তাহলে মনে কোনও অস্থিরতা তৈরি হবে না। ভালো ঘুম হবে। আমার কথায় মা কি আহত হলেন? একটু সময় নিয়ে বললেন, একটা কথা বলব বাবা। রাখবি আমার কথাটা? আমি বললাম, বলো। মা বললেন, তুই লেখালেখিটা ছেড়ে দে। লেখালেখির জন্যই নাকি এখন অনেককে মেরে ফেলা হচ্ছে। কে জানে, তুইও কী লিখে কাকে শত্রু বানাচ্ছিস! অনেক বছর ধরেই তো লিখছিস, এখন ছেড়ে দে। সরকারি চাকরি করলে তো এতদিন অবসর জীবন কাটাতি। তোর এই লেখালেখিতে কি অবসর নেওয়ার ব্যবস্থা নেই?

আরও পড়তে পারেন: ম্যালেরিয়াতে মৃত্যু কমলেও ঝুঁকি রয়েছে!
মাকে খবর দেখতে মানা করায় তিনি যে আমাকে লেখালেখি ছাড়তে বলবেন, সেটা আমি ভাবতে পারিনি। তবে এটা বুঝলাম যে, মা বেশ আতঙ্কিত, ভীত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আতঙ্ক, ভয়, দুশ্চিন্তা কি শুধু আমার মায়ের? আমার তো মনে হচ্ছে দেশের সিংহভাগ মানুষই এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন। আগে আমাদের দেশে খুনোখুনির ঘটনা ঘটতো কালে-ভদ্রে, মূলত সহায়-সম্পত্তির বিরোধকে কেন্দ্র করে। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেও খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারপর এসেছে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে হত্যাকাণ্ড। কিন্তু আজ-কাল যে কত কারণে মানুষ খুন হচ্ছে তা বলার মতো নয়। ধর্ম মানা না মানার কারণেও এখন মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা করে মানুষকে ধর্মমুখী করার উন্মাদ খেলা আমাদের কোন পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে? নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বেঁচে থাকার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকেরই আছে। কিন্তু রাষ্ট্র এখন নাগরিকদের বেঁচে থাকার নিরাপত্তা দিতে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হচ্ছে।

গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে এ বছর ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত কতগুলো চঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড ঘটলো। প্রথমে রাজধানীর গুলশানে একজন ইতালির নাগরিককে হত্যা করার ৫ দিন পর রংপুরে নৃশংসভাবে খুন করা হয় এক জাপানের নাগরিককে। এরপর ধারাবাহিকভাবে হত্যা চেষ্টা চালানো হয় দিনাজপুরে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত একজন বিদেশি নাগরিক এবং জয়পুরহাটে একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজককে। তারা সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও খুনিদের হাত থেকে জীবন রক্ষা করতে পারেননি দিনাজপুরের এক পল্লী চিকিৎসক। বগুড়ার গ্রামে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে কয়েকজন নিরপরাধ মানুষকে। পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে খুন হয়েছেন এক হিন্দু পুরোহিত।

৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নাজিমউদ্দিন সামাদকে পুরান ঢাকার একটি গলিতে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। ২২ এপ্রিল খুন করা হয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পরমানন্দ রায় নামে এক হিন্দু সাধুকে এর একদিন পরেই রাজশাহীতে খুন হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী। ২৫ এপ্রিল সকালে গাজীপুরে অবসরকালীন ছুটিতে থাকা প্রধান কারারক্ষক রুস্তম আলীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই দিন বিকেলে রাজধানীর কলাবাগানে এক বাসায় ঢুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পটোকল অফিসার এবং ইউএসআইডিতে কর্মরত জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু, নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কে। গত ১৪ মাসে ৩৪টি হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ জন বলে একটি জাতীয় পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। পাঠক এর সঙ্গে যোগ করে নিতে পারেন। ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনাটি।

আরও পড়তে পারেন: উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে

পরপর এতোগুলো হত্যার ঘটনা এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই খুনিচক্র ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও সরকার, পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিচলই থাকতে দেখা যাচ্ছে। সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারকে বিপাকে ফেলতে একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী দেশে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে নেমেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীকে পাকড়াও করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা ও দেশকে স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব তো সরকারেরই। সরকার কি এর দায়িত্ব পালন করছে? এ ক্ষেত্রে সরকারের কোনও সাফল্য কি মানুষের চোখে ধরা পড়ছে?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ্জ্জুামান খাঁন কামাল দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে দাবি করে বলেছেন, চাপাতির কোপে নিহত মুক্তমনা ব্লগার, লেখক, প্রকাশক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ সবার হত্যাকারীদের পুলিশ শনাক্ত ও গ্রেফতার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই দাবির সঙ্গে একমত হতে পারলে আমাদের ভালো লাগত। কিন্তু সেটা আমরা হতে পারছি না। আমাদের হিসাব বলছে, দুই-একটি হত্যাকাণ্ডের পর কিছু গ্রেফতারের ঘটনা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকৃত খুনিদের যেমন গ্রেফতার করা যায়নি তেমনি কেউ গ্রেফতারও হয়নি।

পুলিশের একজন ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা ২৫ এপ্রিল রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোতে বললেন, আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশে যে মাত্রায় হত্যা-খুনের মতো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কথা সে মাত্রায় নাকি হচ্ছে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, সাড়ে তিন কোটি মানুষের একটি দেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন মানুষ সহিংসতার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। পুলিশ কর্মকর্তার এই বক্তব্য কি খুনিচক্রকে আরও উৎসাহিত করবে না? আমাদের দেশে যদি প্রতি দিন গড় হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা না বাড়ে তাহলে আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানের মানদণ্ডে আমরা যে পিছিয়ে পড়ব!

একজন মানুষ হত্যার শিকার হলে সরকার তথা পুলিশ প্রশাসনের প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত খুনি বা খুনিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো। আমাদের দেশে কি সেটা হচ্ছে? খুনি-ঘাতকদের ধরার চাইতে আমাদের বেশি আগ্রহ-কৌতূহল-তৎপরতা-মনোযোগ থাকে যে ভিক্টিম বা যে হত্যার শিকার হয়েছে তার অপরাধ খুঁজে বের করার দিকে। যেমন, তনু হত্যার পর কে বা কারা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়, তাদের খুঁজে বের করার চাইতে তনু কেমন মেয়ে ছিল, তার কতজন ছেলে বন্ধু ছিল, ছেলে বন্ধুদের কাউকে সে প্রবঞ্চিত করেছে কি না এসব নিয়েই অনেকের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে। তনু যদি চালচলনে কিংবা বন্ধু নির্বাচনে উগ্র অথবা চপলতার পরিচয়ও দিয়ে থাকে, তাহলেও তাকে হত্যা করার অধিকার কি কারও থাকতে পারে? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যা করার পরও তিনি ধর্ম বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী ছিলেন সেটা নিয়ে বিতর্ক সামনে আনা হয়েছে। তিনি যদি ধর্ম পালন নাও করেন তাহলেও তাকে হত্যা করার অধিকার কারও জন্মায় না। ‘মুক্তচিন্তার নামে ধর্মের বিরুদ্ধে লেখালেখি গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেওয়ার পর কাউকে হত্যা করে তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অপবাদ ছড়ানোটা যদি ঘাতকরা কৌশল হিসেবেই নেয় তাহলে পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াবে? অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী ব্লগার ছিলেন না। তিনি ধর্ম নিয়ে কোথাও কিছু লেখেনওনি। তার মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন জানিয়েছেন, ফেসবুকিং, সোশাল নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে আব্বু কোনও কিছু বুঝতেনই না। আমার বাবার গ্রামে একটি মসজিদ আছে। তিনি পছন্দের মিস্ত্রিদের দিয়ে সেই মসজিদে পছন্দের টাইলস্ লাগিয়েছেন। বাবা শুক্রবার নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে দাদিকে টুপি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করতেন, কোন টুপিতে বেশি ভালো লাগছে?

আরও পড়তে পারেন: মা, কেমন আছ তুমি?

অধ্যাপক সিদ্দিকীর মেয়ে বলেছেন, একটা মিথ তৈরি হয়ে গেছে, একটু গান-বাজনা করলে, একটু সেতার চর্চা করলেই লোকটা খুব খারাপ, নামাজ পড়ে না। লোকটা নাস্তিক। এই মিথ দূর করতে সবার প্রতি আহ্‌বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, তা না হলে খুনিরা উস্কানি পাবে। কারণ তারা ভাববে, আমরা তো খুন করে চলে যাব, এরপর সেটা নিয়ে বাণিজ্য হবে, অনেক বিতর্ক হবে। আর বাণিজ্য-বিতর্কের আড়ালে আসল ঘটনা চাপা পড়ে যাবে এবং সঠিক বিচার হবে না।

নিহত অধ্যাপকের কন্যা কোনো ভুল বলেননি। খুনিরা একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে আর আমরা চালিয়ে যাচ্ছি বিতর্ক। অধ্যাপক সিদ্দিকী হত্যার পর রাজশাহীর এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ধরন দেখে মনে হচ্ছে তিনি ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হাতে খুন হয়েছেন। আর জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয় হত্যার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটি অন্য রকম ঘটনা। আমরা কিছু আলামত পেয়েছি। আশা করছি, খুনিদের ধরে ফেলতে পারব।

দেশবাসীরও সেটাই আশা। খুনিরা ধরা পড়ুক। শাস্তি পাক। বন্ধ হোক এই রক্তের হোলি খেলা।

হিজড়া ও সমকামীদের অধিকার সম্পর্কিত ম্যাগাজিন ‘রূপবান’-এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নানকে যখন দুর্বৃত্তরা উপুর্যপরি কোপাচ্ছিল, তখন তার নব্বই বছর বয়সী মা সখিনা খাতুন জানতে চেয়েছিলেন আমাকে বলো আমার ছেলের অপরাধটা কী? উদ্বিগ্ন মায়ের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ঘাতকরা তার দিকেও চেয়ার ছুড়ে মারে। হায় জননী, আপনার জানা হলো না, আপনার নাড়িছেঁড়া ধনের অপরাধটা কী!

আমার জন্য উদ্বিগ্ন আমার মায়ের মুখটি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। জলে ভরে উঠছে দুচোখ। হাত অবসন্ন হয়ে আসছে? কী লিখব? কেন লিখব? চাপাতি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যারা ঘাতকের ভূমিকায় নেমেছেন, তারাও তো কোনও মায়েরই সন্তান। আরেক মায়ের কোল খালি করার সময় তারা যদি একবার নিজের মায়ের কথাটি ভাবতেন!

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ