চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সরকার কর্তৃক বন্ধ ঘোষণা করা নরসিংদীর রাষ্ট্রায়ত্ত ইউএমসি জুটমিলের অস্থায়ী শ্রমিকরা। সোমবার (৮ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিলগেটের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, অব্যাহত লোকসানের কারণে গত বছরের ৭ জুলাই নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলসহ দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। ঘোষণার পর স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ সব পাওনা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেয় মন্ত্রণালয়।
পরে ইউএমসি জুটমিলে কর্মরত স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় ছয় হাজার শ্রমিকের মধ্যে তিন হাজার স্থায়ী শ্রমিককে ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬০ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু আশ্বাস দেওয়ার পরও মিলটির প্রায় তিন হাজার অস্থায়ী শ্রমিকের চূড়ান্ত পাওনার ২১ কোটি ১৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বকেয়া এসব পাওনাসহ নয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা।
নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, শ্রমিকদের এরিয়া বিল প্রদান, ২০১৯ সালের পাঁচ সপ্তাহের বকেয়া বিল পরিশোধ, গত ৪ জানুয়ারির শ্রম ও কল্যাণ বিভাগীয় প্রধানের বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ, মৃত শ্রমিকদের মৃতদাবি বিলসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধ, মামলা করা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ, সমস্ত শ্রমিকদের চূড়ান্ত হিসাব প্রদান, ২০২০ সালের ১ জুলাই তারিখে অবসায়ন শ্রমিকদের চিঠি/সার্ভিস বই প্রদান, ওই তারিখ থেকে ঘোষিত ২০% মহার্ঘ্য ভাতার বকেয়া বিল প্রদান এবং প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে যেসব শ্রমিকদের নাম অন্যান্য সংশোধনের মাধ্যমে এফিডেভিড করে সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র ফরম পূরণ করা হয়েছে তাদের টাকা পরিশোধ করা।
ইউএমসি জুটমিলের সিবিএ সভাপতি শফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, মিল বন্ধ ঘোষণার পর বেকার হওয়া জুটমিল শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থায়ী শ্রমিকরা তাদের পাওনা পেলেও মিলটির প্রায় তিন হাজার অস্থায়ী শ্রমিক তাদের চূড়ান্ত পাওনা এখনও পরিশোধ করা হয়নি।
প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের ২১ কোটি ১৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে জানান তিনি।