X
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
২১ আষাঢ় ১৪৩২

তানজানিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টকে কেন ‘মা সামিয়া’ বলা হচ্ছে?

বিদেশ ডেস্ক
২১ মার্চ ২০২১, ১১:৩৭আপডেট : ২১ মার্চ ২০২১, ১১:৩৭
image

২০১৫ সালে  ‘চামা চা মাপিনডুজি’ (সিসিএম) দলের অনেক শীর্ষ নেতাকে পেছনে ফেলে তানজানিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্যে মনোনীত হন সামিয়া সুলুহু হাসান। এতে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তাকেই ঘোষণা করতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যু সংবাদ। সংবিধান অনুসারে তার কাঁধেই বর্তেছে সরকারের চলতি মেয়াদের বাকি সময়ের দায়িত্ব। গতবছর দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত হওয়া প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান এই মুহূর্তে কেবল তানজানিয়ারই নন, বরং আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র নারী রাষ্ট্রপ্রধান। ভালোবেসে দেশবাসী তাকে নাম দিয়েছে ‘মা সামিয়া’।

উল্লেখ্য, আফ্রিকায় আরেকজন নারী প্রেসিডেন্ট আছেন বটে। তিনি ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট সাহলে-ওয়ার্ক জাউদি। তবে তার পদ অলঙ্কারিক। সরকারি কাঠামোতে বা দেশের নীতি নির্ধারণে তার বিশেষ কোনও ভূমিকা নেই। তবে সামিয়াকে শীর্ষ অবস্থানে থেকে পালন করতে হবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব। বিবিসি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, নারী হয়ে দায়িত্বভার  নেওয়ার জন্যে নয়, বরং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বশীল আচরণের কারণেই 'মা সামিয়া' সম্বোধনের সম্মান মিলেছে তার।

মাগুফুলির সহযোগী (রানিংমেট) হিসেবে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে তানজানিয়ার ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান সামিয়া। গত বছর এক  ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসে মাগুফুলি-সামিয়া জুটি। ৬১ বছর বয়সীকে সামিয়াকে দক্ষ-নেতৃত্বগুণসম্পন্ন মানুষ মনে করেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সাবেক সহকর্মী ও সাংসদ জানুয়ারি মাকাম্বা। তিনি বলেন, ‘আমি খুব কাছে থেকে তার নৈতিকতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও স্থিরতা দেখেছি। তিনি একজন দক্ষ নেতা।’

মাকাম্বা অবশ্য মনে করেন, রাজনৈতিক দক্ষতার মাপকাঠিতে তানজানিয়াতে এখনও তার যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি। বিবিসি বলছে, সামিয়া প্রেসিডেন্ট পদের ভার নেওয়ার পর সরকারের নীতি কেমন হবে তা এখনও অনেকের কাছে অস্পষ্ট। করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে মাগুফুলির ভূমিকায় অনেকেই হতাশ ছিলেন। এখন সামিয়া  আগের নেতৃত্বের পদাঙ্ক  অনুসরণ করবেন নাকি নতুন নীতি গ্রহণ করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।  

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমনিতে সদ্য প্রয়াত মাগুফুলির প্রতি আনুগত্য থাকলেও নিজের মত প্রকাশে কখনই পিছপা হননি সামিয়া। ২০০৫ সালে জানজিবারের মন্ত্রিসভায় থাকাকালে তরুণ মায়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত আসার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তবে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় মাগুফুলি একই ধরনে নিষেধাজ্ঞা  জারি করতে চাইলে সামিয়া এর বিরোধিতা করেছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

২০১৭ সালে ঘাতকের আক্রমণের শিকার হন তানজানিয়ার সেই সময়ের বিরোধী দলীয় নেতা টুনডু লিসু। পুরো দেশ তখন সরকারি দলের দিকেই আঙ্গুল তুলেছিল। ওই সময় কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির এক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া টুনডু লিসুকে দেখতে গিয়ে পুরো দেশে আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন সামিয়া। 

মন্ত্রী ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে অনেকদিন ধরে থাকার পরও সামিয়ার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। ১৯৬০ সালে জানজিবারে জন্ম হয় এই নারী নেতার। মুজাম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন জনপ্রশাসন নিয়ে। পরে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। সামিয়ার স্বামী হাফিদ আমির একজন কৃষি বিশেষজ্ঞ। তাদের বিয়ে হয় ১৯৭৮ সালে। তবে সামিয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এই দুজনকে কখনোই একসঙ্গে ক্যামেরার ফ্রেমে পাওয়া যায়নি। তাদের চার সন্তানের মধ্যে মানু হাফিদ আমির মায়ের পদচিহ্ন অনুসরণ করে এখন জানজিবার হাউজের সদস্য।

/বিএ/
সম্পর্কিত
কঙ্গোতে হামলাকারী এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত রুয়ান্ডা: জাতিসংঘ
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে পদদলিত হয়ে ২৯ শিক্ষার্থী নিহত
মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিমান বাহিনীর ১২৫ সদস্য
সর্বশেষ খবর
জয়ের পর মনিকা চাকমা বললেন, ‘আজ অনেক ভালো লাগছে’
জয়ের পর মনিকা চাকমা বললেন, ‘আজ অনেক ভালো লাগছে’
ঢাকায় উদযাপিত হলো উল্টো রথযাত্রার শোভাযাত্রা
ঢাকায় উদযাপিত হলো উল্টো রথযাত্রার শোভাযাত্রা
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে এই ৪ খাবার
বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে এই ৪ খাবার
সর্বাধিক পঠিত
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড: মাহফুজ আলম
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড: মাহফুজ আলম
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ