X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘানিচক্র

গৌরাঙ্গ হালদার
০৭ মে ২০২১, ০৮:০০আপডেট : ০৭ মে ২০২১, ০৮:০০

ছেড়ে আসতে মন চাইছিল না। কিন্তু উপায় কি। এ শহরে রাত হলেই গেট বন্ধের হুমকি নামে। ঢাকায় থাকা আসলে কারাবাসের ফ্রি সংস্করণ। অবশ্য সবার জন্য নয়। যাই হোক, দেরি করার উপায় নেই তাই গলি ছেড়ে মেইন রোডে এসে দাঁড়ালাম। বাসের দরজা বন্ধ। প্যাসেঞ্জারের চাপে লেগুনাগুলোর চোখে তখন আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। দুপাশে দুটো প্রোপেলার থাকলে ওদের আর পেত কে। তো পরের উপায় কী? এই খালি বলে ডাক দিলে আপনার সামনে হাজির হবে রিকশা। আমাকে ডাকতে হলো না। পাশেই ছিল। প্রায় চোখে না পড়ার মতো এক রিকশাওয়ালার চোখে চোখ পড়ে গেল। রিকশাওয়ালা চোখের ইশারাতেই জানতে চাইলেন কোথাও যাব কি না। মানে আমার রিকশা দরকার আছে কি না। শ্যামলী বাসস্ট্যান্ড? ‘ওডেন।’ উঠলাম। যাত্রী আমি একা হলেও সন্দেহের ভার তখন আমাকে চেপে ধরেছে। দূরত্ব খুব বেশি নয়, কিন্তু উনি যেতে পারবেন তো?
না, রিকশাওয়ালা এই শহরে নতুন নন। লোকটির দেহের কথা বলছি। কারণ রিকশা চলে গায়ের জোরে। সটান করে মাপলে দেহটির উচ্চতা ফুট চারেকের বেশি হবে না। ওজন আন্দাজ ৩৫ কেজি। তার ওপর পিঠের উপরে বড় একটা কুঁজ। লিকলিকে দুটো হাত। আর তার পা দুখানির কথা কী বলব, সে নয় তো কোনো চরণযুগল। সে যেন আধপোড়া দুটো চেলাকাঠ। এই চেলাকাঠের মতো দুটো পায়ের ভরে, কী করে দুই বা তিনজন লোককে তিনি টেনে নিয়ে যান! রিকশাওয়ালা বাবুল মিয়াঁর বাজখাই গলার হাঁকে আমার ভাবনায় ছেদ পড়ে।
‘ওই ব্যাডা কি চালাছ, টান’ বলে পাশের রিকশাটাকে বাবুল মিয়াঁ ওভারটেক করে গেলেন। ওমা এই লোকটা বলে কি! যাকে উদ্দেশ করে বাবুল মিয়া হাঁক ছাড়ল সে ভালো করে একটা ফুঁ দিলেই তো বাবুল মিয়াঁর পড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু পড়ে যাওয়া দূর কি বাত। রিকশার গতিটা আরেকটু বেড়ে গেল। রিকশার গতি ফুরফুরে হওয়ায় তাকে বেশ উৎফুল্ল মনে হলো। বাবুল মিয়াঁ সিটে বসে হাফ প্যাডেলে দিব্যি চালাতে লাগলেন।
শ্যামলী পৌঁছে গেলাম খুব দ্রুত। বাবুল মিয়াঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের তালে হাতের শিরাগুলো তরাক তরাক করে লাফাচ্ছিল। কিন্তু তার চোখে তখন খ্যাপ শেষ করার হাসি। হাসিই কি সব? ওর আড়ালে আর কিছু কি নেই? কী আছে আর কী নেই তার খবর নিতে সময় চাই। নগর নামের অতিকায় অজগরের পেটে আমি এক শিকার মাত্র। শিকারের কথা আর কতদূর এগোয়। বড়জোর দুকদম।
বাবুল মিয়াঁ ছিলেন যুগপৎ রথ ও রথী। আমি ছিলাম আরোহী। সময় বাঁচিয়েছে সে বিস্তর। আরাম ছিল অতুলনীয়। কিন্তু এই আরাম আয়েশের মূল কাণ্ডারি বাবুল মিয়াঁর কর্মফল কী? চোখের সামনে যা দেখলাম, তা হলো ঊর্ধ্বশ্বাস, ক্ষয় আর যৎসামান্য আয়। ঊর্ধ্বশ্বাস আর ক্ষয়ের বিনিময়ে যৎসামান্য আয়ের মাপদণ্ড কী? মাপদণ্ড সম্পর্কে জানা যায় না তা নয়। চাইলে মাপদণ্ড বাজার থেকে কেনাও যায়। এই ধারাই চলে আসছে দুনিয়াজোড়া। কাজেই এই প্রশ্ন তোলা নাকি পাথরে মাথা ঠোকার শামিল। ভবের বাজারের কেনাবেচা। আর কেনাবেচা মানেই লাভ-লোকসান। কারো লোকসান না হলে কারো লাভ কি হতে পারে? যাক গে, তত্ত্বকথায় গিয়ে কাজ নেই। কথা হলো বাবুল মিয়াঁ একইসঙ্গে আমার সময় বাঁচিয়েছেন এবং লাঘব করেছেন শ্রমের। কিন্তু নিজের ক্ষয়ের বিনিময়ে বাবুল মিয়াঁ খেয়ে বাঁচবেন। বাবুল মিয়াঁর বেঁচে থাকার এই মানে বললাম আমি। কিন্তু তার কাছে তার বেঁচে থাকার মানে কী? আজকাল সফল মানুষের গল্প বাজারে খায়। সংগ্রামী মানুষের গল্প যেন অতীতের অচল পয়সা। বাবুল মিয়াঁরা এই অচল পয়সার ধাতু গলিয়ে নতুন পয়সা বানান। বিগলন প্রক্রিয়াটা সবার সামনে ঘটে, কাজেই ফিরে দেখার তাড়া বা তাগিদ কারুর নেই। এযুগে নিজেকে দেখার বাইরে মানুষ খুব সামান্যই যেতে পারে।

২.
শিক্ষিত লোকের চাকরির বাজারে শিক্ষা অনুসারে কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তা নাই। পক্ষান্তরে পড়ালেখা না জানা লোকদের পেশা নির্বাচিত হয় কীভাবে? পছন্দ, পরিস্থিতি, প্রয়োজন নাকি নিতান্ত পেটের দায়? বাবুল মিয়াঁ ভাগ্যান্বেষণে ঢাকা আসেন নাই। এসেছেন স্রেফ পেটের জ্বালায়। অন্য কোনো পেশা না নিয়ে কেন যে রিকশা চালানো বেছে নিলেন, এই প্রশ্ন বেকুবির শামিল। ওবেলার খাবার সম্পর্কে যার নিশ্চয়তা নাই, দিনমজুরি তার বেঁচে থাকার বটম লাইন। আমার ভাবনা অন্যখানে। হাতছাড়া লোক যদি হাতের নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে তা হাতওয়ালা লোকের পক্ষে বিস্ময়কর। একইসঙ্গে তা গভীর ভাবনারও উদ্রেক করে। কীসের প্রেরণায়, কোন শক্তির জাদুবলে দুর্বল তার জীবনবাস্তবতার দুস্তর বাধা অতিক্রম করে? সে যা নয় কী করে সে তা হয়ে ওঠে? এ কি শক্তিমানের বিরুদ্ধে দুর্বলের লড়াইয়ের সাহস, নাকি আমরা যাকে দুর্বল ভাবছি সে আমাদের দেখার অক্ষমতা?
জগতসংসারে বিধাতার বিচার আজব। শক্তিমান চড়ে বসে, দুর্বল চালায়। রিকশাওয়ালা বাবুলের ভাগ্যে জুটেছে অশক্ত শরীর আর কঠিন কাজ। তারও চেয়ে কঠিন এই শহরের বাতাসে শ্বাস নেওয়া। বাতাসে কার্বনের বিষ। মলমূত্র কফ আর যাবতীয় মানববর্জ্য বিচূর্ণ ধুলো হয়ে বাতাসে ওড়ে। চারদিক থেকে ছুটে আসে বিকট শব্দের চাবুক। গলি থেকে রাজপথ সর্বত্র যন্ত্রযানের দানবিক ত্রাস। যেন অতিকায় এক মহাজাগতিক অজগর প্রচণ্ড রোষে শহরময় দাবড়ে বেড়াচ্ছে! রাস্তার ধারে সস্তার বাসি খাবার। ঘরে চেয়ে থাকা উপোসে মানুষের মুখছবি। তার ওপর রাখালবেশী পুলিশের লাঠির আদর খেয়ে এই লোকগুলো দুটি টাকা বেশি পেলে অদ্ভুত সরলভাবে হাসে। এই মানুষগুলো এত ঘা খেয়ে প্রাণ খুলে হাসে কী করে? জীবনের দুঃসহ ঘানিচক্র ঘুরানোর জ্বালা আছে। আছে দ্রোহ। কী তাকে ভুলিয়ে রাখে? রোদে, জলে, ঝড়ে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ সেই একঘেয়ে পরিবর্তনহীন জীবনের চাকা ঘুরিয়ে যায় এইসব মানুষেরা। কোনো সুদিনের স্বপ্নে, নাকি স্রেফ ক্ষুধার জ্বালায়? কোন সে প্রেরণায় জীবনের একই ধূসর বৃত্তচক্রে অবিরত আবর্তিত হয় এই সব মানুষ?

৩.
মানবসভ্যতার যাত্রাপথে চাকার উদ্ভাবন মানুষের এমন এক মৌলিক কাজ যা অগ্রগতির উৎকর্ষ সাধনে রেখেছে বিরাট ভূমিকা। কিন্তু চাকা না ঘুরালে গতি আসে না। বাবুল মিয়াঁ চাকা ঘুরিয়ে গতি উৎপাদন করেন। এই গতিশীলতা তাঁর জীবনের অবধারিত নিত্য দুর্গতি ঘোচাতে পারে না। তবু বাবুল মিয়াঁ রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে যান প্রতিদিন। না ঘুরিয়ে উপায় নেই। খোলা আকাশের নিচে প্রচণ্ড সূর্যের তাপ, বৃষ্টির মোহময়তা, বাতাসের চঞ্চলতা, কোনো কিছুই বাবুল মিয়াঁকে বেপথু করতে পারে না। তাকে থামাতে পারে না হরতাল ব্যারিকেড। গ্রামের কাদাভরা কাঁচাপথ, মফস্বলের এবড়ো-খেবড়ো সড়ক, নগর মহানগরের গলি থেকে জনপথ, সর্বত্র তাদের চাকার সজীব ঘূর্ণন। তাদের ঘণ্টির টুংটাং শব্দে স্পন্দিত হয় জীবনের জঙ্গমতা। জেগে ওঠে দৈনিকের জনপদ। বাংলার জনজীবনের কর্মমুখর সচল ছবিতে এরকম লাখো বাবুল মিয়াঁ অজস্র মানুষের গতিদাতা।
শেখেরটেক থেকে শ্যামলী আসার সময় গতির নেশায় বাবুল মিয়াঁর ঘাড়ের লোমগুলো ঘোড়ার কেশরের মতো ফুলে উঠছিল। চোখের শিরাগুলো হয়ে উঠছিল রক্তবর্ণ লাল। চোখে ছিল জয়ের নেশা। চিত্রশিল্পের ধারণা নেই আমার। কিন্তু রিকশাওয়ালা বাবুল মিয়াঁর মুষ্টিবদ্ধ হাত, শক্ত চোয়াল দেখে আমাদের মহান চিত্রশিল্পী সুলতানের চিত্রকর্ম অনুধাবন করার সূত্র পেয়ে যাই। বুঝতে পারি কেন তিনি আমাদের শ্রমজীবী মানুষের মিথলজিক্যাল পেশিবহুল ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ পটে আঁকা ছবিকে প্রশ্ন করেছিলেন যে সে শুধুই ছবি কিনা। তাঁর প্রশ্নের আড়ালে আর কী ছিল?

আড়ালের পর্দা না সরালে দরশন হয় না। শ্রম ছাড়া শ্রী হয় না বেশ পুরানো কথা। যান্ত্রিক প্রগতির উৎকর্ষে মানুষ ভুলে যাচ্ছে এই যান্ত্রিক প্রগতি তারই শ্রমের ফসল। এমন কি সে তার নিজ শ্রমেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে বিভাজন ঘটে গেছে শ্রমের। যাকে আমরা বলি কায়িক শ্রম আর মানসিক শ্রম। এই বিভাজনের প্রথাগত ধারণা এমন যে, কায়িক শ্রম সরল ও বুদ্ধিহীন শ্রম। কাজেই, তা নিম্নস্তরের মানব শ্রম আর তাই সে যেন এক মগজহীন, মাথাহীন মানুষের শ্রম। বাস্তব জীবনে এর সামাজিক প্রকাশ ঘটে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত’র বিভাজনে। অর্থনৈতিক মাপদণ্ডে এর প্রকাশ ঘটে ‘সস্তা’ শ্রম হিসেবে। বুদ্ধির কারবারিরা খুব সযত্ন কৌশলে একটি ব্যাপার বুদ্ধির র‍্যাপারে ঢেকে রাখেন। তারা এড়িয়ে যান যে এইসব তথাকথিত শিক্ষাহীন প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষের ধরটা মাথা বিহীন নয়, কাজেই তা মগজবিহীনও নয়। হাত-পা-মাথা-চোখ-কানসহ মানবশরীরের সব প্রত্যঙ্গ নিয়েই তাদের শ্রমের প্রয়োগ সম্ভব হয়। বুদ্ধির কারবারিদের ভাবখানা এমন, মাথা কাম বুদ্ধি নিজেই স্বয়ং এবং মাথা বাদে অন্যসব প্রত্যঙ্গ তার মুখাপেক্ষী। ধর থেকে আলাদা হয়েও সেসব কর্ম সম্পাদন করতে সক্ষম। আসলে ধর থেকে মাথার আলাদা হওয়া মানে তো উভেরই নিশ্চিত মৃত্যু। খণ্ডদর্শন আমাদের কোনো সমাধান দেয় না। বরং তা বিভ্রমের ধূম্রজাল তৈরি করে। এই ধূম্রজালের আড়ালে বুদ্ধির কারবারিরা তাদের কারবার ক্রমাগত ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে জগতসংসারে এক অভাবিত হুমকি হয়ে দেখা দেয়। এই হুমকি শ্রমের বিভাজন ও অর্থতন্ত্রের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠা। এই হুমকি মানবপ্রজাতি ও সমগ্র জীবকুলের অস্তিত্বের সংকট।

তা যদি কেউ তার মাথা খাটিয়ে পয়সা কড়ি আয় করে বাড়ি গাড়ি করেন তাতে কারো গা জ্বালা করবে কেন? না, গা জ্বালার কিছু নেই। কিন্তু কারো থাকা আর কারো না থাকা সম্পর্কহীন নয়। সে সম্পর্কের খতিয়ান না নিয়ে বিচার হয় না। বিনিময় বিচার না করে সামাজিক ন্যায় হয় না। আরেক রিকশাওয়ালার গল্পে ব্যাপারটা ধরা যাবে। ‘একবার এক ভদ্রলোক তার পরিচিত এক রিকশাওয়ালাকে দিনচুক্তি ভাড়া করেন। আত্মীয় সন্দর্শনে। সেটা ছিল মে-জুন মাসের প্রচণ্ড গরমের সময়। দূরত্ব ছিল প্রায় মাইল দশেকের মতো। রিকশাওয়ালা তার সওয়ারি ভদ্রলোককে নিয়ে যখন আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছুলেন, তখন তার ঊর্ধ্বশ্বাসে হিক্কা উঠে গেছে। মুখ দিয়ে কথা সরছিল না। শরীরের রক্ত তখন টগবগ করে ফুটছে। গরমে ঘেমে নেয়ে একবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা। এদিকে ভদ্রলোকের আত্মীয় স্বজন ব্যস্তসমস্ত হয়ে তাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে বললেন—আহা কত কষ্ট করে কত দূর থেকে এসেছেন, আর যা প্রচণ্ড গরম পড়েছে! আসুন এই ফ্যানটার নিচে এসে বসুন। এই নিন একটু বরফ কুচি দেওয়া লেবুর শরবত—খান, ভালো লাগবে। নির্দোষ আপ্যায়ন আর কি। রিকশাওয়ালাটি বসেছিলেন বারান্দার দাওয়ায়। সেখানে না ছিল কোনো ফ্যান না ছিল নিদেন একটা হাতপাখা। তৃষ্ণায় বুকের ছাতিটা তার ফেটে যেতে চাইছিল, কিন্তু কাছে কাউকে পাচ্ছিলেন না যে এক গ্লাস পানি চাইতে পারেন। একটু স্বস্তির আশায় রিকশাওয়ালা তার হাতের ভেজা পুটপুটে গামছাটা উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাচ্ছিলেন। অনতিদূরে এক লোক এটা দেখে বললেন—বাতাস দরকার কার আর বাতাস দেয় কারে।’

বাবুল মিয়াঁ তার নিজের বাড়িতে থেকে কাজ করতে পারলে হয়তো দিন শেষে ঘরে ফিরে বউকে একগ্লাস পানি বা একটা হাতপাখা এনে দেওয়ার জন্য বলতে পারতেন। কিন্তু ঢাকায় তিনি থাকেন একা, মেসে। তাই ওই ধরনের কোনো আদর আপ্যায়ন বা ব্যাধি বিমারিতে একটু পথ্য পাঁচন কখনো কল্পনায়ও আনেন না। দরকারও নেই। নিজের লড়াই নিজেই লড়েন। তাকে লড়ে যেতে হয়। কেননা, তিনি তার স্ত্রীর দায়িত্বশীল স্বামী। স্কুলপড়ুয়া দুই সন্তানের স্নেহশীল পিতা। অন্যদিকে তার পেশার অন্য অনেকেই যখন সংসারের দুঃসহ ঘানি টানতে না পেরে বউ পোলাপান ফেলে পালিয়ে যায়, সেখানে বাবুল মিয়াঁ স্বপ্ন দেখেন দিন বদলের। আস্থা রাখেন নিজের প্রতি। আর তার মতো কোটি মানুষের আত্মবিশ্বাস, নিরলস শ্রম আর ধৈর্যের মাঝেই এদেশের অর্থনীতির চাকা সচল।
এইসব খেটেখাওয়া মানুষের শক্তিকে না জেনে, তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ না দিয়ে, তাদের জীবন বিকাশের পথ না দিয়ে, দেশের উন্নয়ন নিয়ে যারা গলাবাজি করেন তারা আসলে এই কোটি মানুষের শ্রমশক্তির জোঁক। তাদের উন্নয়ন দর্শন বড়জোর কতিপয়ের উন্নয়ন। কতিপয়ের উন্নয়নের সাথে বহু শ্রেণিপেশার গণমানুষের উন্নতির কোনো যোগসূত্র নাই। আছে মোহময় আশ্বাসের আড়ালে যুগ যুগান্তের নিপীড়ন আর বঞ্চনার এক রক্তাক্ত আখ্যান।
সংগ্রামী মানুষ বাবুল মিয়াঁর রিকশা থেকে নামার সময় কাঁধ ছুঁয়ে দিলে তার মুখে ফুটে উঠছিল চে গেভারা’র হাসি। মনে পড়ছিল অনেক দিন আগে বন্ধুর বলা একটি কথা, ‘জীবনের পরাজয় নাই।’

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!