X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

মহীসোপান নিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের বিরোধিতার ভিত্তি নেই

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৪ মে ২০২১, ১৯:৫৯আপডেট : ১৪ মে ২০২১, ২০:১৭

সাগরের মহীসোপান নির্ধারণের জন্য ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘে দাবি উত্থাপন করে বাংলাদেশ। এক মাসের মধ্যে মিয়ানমার এবং একই বছর জুনে এর বিরোধিতা করে ভারত। ২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ মামলার নিষ্পত্তি হয়। উভয় রায়ে মহীসোপানের দাবি সম্পর্কে একটি গাইডলাইনও দেওয়া হয়। পরে ওই রায়ের আলোকে বাংলাদেশ ২০২০ সালে মহীসোপান দাবির সংশোধনী দেয়। ওই সংশোধনীর বিরুদ্ধে মিয়ানমার পর্যবেক্ষণ দিয়ে জাতিসংঘে চিঠি দেয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের দাবির বিরোধিতা করে ভারত।

গত সপ্তাহে মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের বিরোধিতা নিয়ে কাজ চলছে এবং এর জবাবও দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ মনে করে, দুটো দেশেরই পর্যবেক্ষণ ও বিরোধিতার আইনগত ভিত্তি নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খোরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মিয়ানমার যে অবজারভেশন দিয়েছে সেটার জবাব দিয়েছি আমরা। তারা যে আপত্তি উত্থাপন করেছিল সেটা ভ্রান্ত এবং আইনগত ভিত্তি নেই। তাদের দাবি জাতিসংঘের ‘কন্টিনেন্টাল শেলফ গাইডলাইন’-এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’

বাংলাদেশ ২০২০ সালে যে সংশোধিত দাবি জাতিসংঘে জমা দিয়েছে সেটি ২০১২ ও ২০১৪ সালে দেওয়া আদালতের আদেশ অনুযায়ী করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে যেহেতু মহীসোপান নির্ধারণের কোনও নির্দেশনা ছিল না সেজন্য আমরা কিছুটা বেশি দাবি করেছিলাম। কিন্তু পরে তা সংশোধন করা হয়।’

মিয়ানমার ও ভারতের বিরোধিতার আইনগত ভিত্তি কেন নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। যেহেতু সীমানা নিয়ে কোনও জটিলতা নেই, তাই মহীসোপান নির্ধারণেও কোনও আপত্তি বা বিরোধিতার ভিত্তি থাকে না।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আইনগতভাবে যতটুকু মহীসোপান প্রাপ্য, সেটা থেকে নিজেদের অংশ দাবি করছে ভারত ও মিয়ানমার। এপ্রিলে জমা দেওয়া ভারতের আপত্তিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভূখণ্ডের যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে মহীসোপান নির্ধারণ করেছে তাতে ভারতের মহীসোপানের একটি অংশ দাবি করছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে যে ‘গ্রে এরিয়া’ রয়েছে সেটার বিষয়ে বাংলাদেশ কোনও তথ্য দেয়নি।

উল্লেখ্য, ‘গ্রে এরিয়া’ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে একটি ছোট অংশ যেখানকার মৎস্য সম্পদের মালিক ভারত, কিন্তু খনিজ পদার্থের মালিক বাংলাদেশ। ওই অংশের পরিমাণ প্রায় ৯০০ বর্গ কিলোমিটার।

তবে সমুদ্র সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ নিজ ভূখণ্ডের বেসলাইন নির্ধারণ করেছে এবং এ সম্পর্কিত তথ্য জাতিসংঘে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ‘গ্রে এরিয়া’ বঙ্গোপসাগরের পানির স্তম্ভের (ওয়াটার কলাম) সঙ্গে সম্পর্কিত। এর সঙ্গে মহীসোপানের সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া, ভারত যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে তাদের মহীসোপান দাবি করছে সেটার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে আপত্তি জানিয়েছিল, যা এখনও বলবৎ আছে।

 /এফএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশের ভেতর ভারতের কোস্টাল বেসলাইন
সংসদে উঠছে সংশোধিত সমুদ্র আইন
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (২ জুলাই, ২০২৫)
ক্লাব বিশ্বকাপে এমবাপ্পের অভিষেক, জুভেন্টাসকে হারিয়ে শেষ আটে রিয়াল
ক্লাব বিশ্বকাপে এমবাপ্পের অভিষেক, জুভেন্টাসকে হারিয়ে শেষ আটে রিয়াল
জুলাই নিয়ে পুলিশ সদস্যের ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
জুলাই নিয়ে পুলিশ সদস্যের ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
রংপুরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির বিশাল পদযাত্রা
রংপুরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির বিশাল পদযাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক