‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরি তেরা, বিছানা বিছাইয়া দিলাম শাইল ধানের নেড়া, দামান বও দামান বও’ আলোচিত সিলেটের এই আঞ্চলিক গানের সঙ্গে মিল রেখে এবার গরুর নাম রাখা হয়েছে ‘নয়া দামান’। ৩০ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের কালো রংয়ের গরুটি কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।
অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসাশিক্ষক আবুল কাশেম প্রায় চার বছর ধরে গরুটি লালন-পালন করছেন নিজ বাড়ির খামারে। আদরে বড় হওয়া ‘নয়া দামান’ নামের গরুটি উত্তরাঞ্চলের সেরা বলে দাবি মালিকের। এটির দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। বিশাল আকারের গরুটি দেখতে প্রতিদিন আবুল কাশেমের বাড়িতে ভিড় করছেন ক্রেতাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তবে করোনা মহামারিতে পশুর হাট বন্ধ থাকায় গরুটি বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে খামারির।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের কিশামত সর্বানন্দ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসাশিক্ষক আবুল কাশেম ২৫ বছর ধরে বাড়িতে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন।
এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য তিনি খামারে প্রস্তুত করেছেন ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরু। প্রায় চার বছর বয়সী গরুটির উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট ও লম্বা ৯ ফুট। ওজন প্রায় ৩০ মণ।
আবুল কাশেম জানান, প্রায় দেড় লাখ টাকায় তিন বছর আগে স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষকের কাছ থেকে গরুটি কিনেছেন। এরপর থেকে নিজ খামারে গরুটি লালন-পালন করেন। গরুটির খাবারের তালিকায় প্রতিদিন থাকছে, চাল, ডাল, ভুসি, ঘাস ও কলাসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। গরুটির প্রতিদিন খাবার বাবদ প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ হয়। গরুটি গাইবান্ধা জেলা তথা উত্তরাঞ্চলের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় বলে দাবি করেন আবুল কাশেম।
এদিকে ‘নয়া দামান’ গরুটি দেখতে প্রতিদিন আবুল কাশেমের বাড়িতে ভিড় করছেন আশপাশ এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। তারা বলছেন, এর আগে এত বড় গরু চোখে পড়েনি তাদের।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল ওয়াহাব জানান, মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া ছাড়াই গরুটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে। প্রথম থেকেই তিনি গরুটির চিকিৎসা করে আসছেন তিনি। খামারি গরুটির ভালো দাম পাবেন বলে আমার প্রত্যাশা।
ঈদের আগে গরুটি হাটে নয়; অনলাইনে বিক্রি করতে চান আবুল কাশেম মাস্টার। অনেক ক্রেতা গরুটি কিনতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে এখন পর্যন্ত একজন ক্রেতা গরুটির দাম আট লাখ টাকা বলেছেন বলে জানান আবুল কাশেম।