নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ শ্রমিকের নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ ছয় আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অপর দুই আসামি চেয়ারম্যানের দুই ছেলে তাওসিফ ইব্রাহিম ও তানজিম ইব্রাহিমকে জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৪ জুলাই) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান জানান, আগুনে ৫২ শ্রমিক পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় হাসেম ফুড বেভারেজের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম, সহ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিব বিন হাসেম (সজীব), পরিচালক তারেক ইব্রাহিম সতেজ, পরিচালক তাওসিফ ইব্রাহিম শীতল, পরিচালক তানজিম ইব্রাহিম, কোম্পানির সিইও শাহান শাহ আজাদ, ডিজিএম মামুনুর রশিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ আট আসামিকে আদালতে হাজির করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে দুই আসামি তাওসিফ ইব্রাহিম শীতল, পরিচালক তানজিম ইব্রাহিমকে জামিন দেন এবং বাকি ছয় আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই সময় কারখানা ভবনটিতে প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের দীর্ঘ সময় লাগে। আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে কারখানার ভেতরের লাশ বের করে আনতে থাকেন উদ্ধারকর্মীরা। এ সময় ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, আগুনে নিহত তিন জনের লাশসহ মোট ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়। কারখানায় আগুনের ঘটনায় আরও অনেক শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
