ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে খুলনা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গরুবোঝাই যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। এতে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে তিন কিলোমিটার এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট। ফলে দুই দিনে এলাকায় গাড়ির মধ্যেই ছয়টি গরু মারা গেছে।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) ম্যানেজার আব্দুল মমিন। ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীবাহী বাস পারাপার হওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। গরুবোঝাই ট্রাককে প্রাধান্য দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। বিশ্বরোডের খায়েরপট্টি এলাকা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এর মধ্যে দুই কিলোমিটার রাস্তায় পাশাপাশি দুইটি করে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় গরু নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডায় বিশ্রাম করানো হচ্ছে। আবার গাড়িতেই গরুর মুখে পানি দিয়ে তাদের তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। গাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের অভিযোগ, তাদের পার না করে শুধু গরুবোঝাই ট্রাক পার করছে।
যশোর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিজ এলাকা থেকে কয়েকজনের গরু নিয়ে এসেছি। বিক্রি করে তাদের টাকা দেবো। কিন্তু গরুর যেই অবস্থা মনে হয়, দুইটা বাঁচানো দায় হয়ে যাবে। দেশে গিয়ে কী জবাব দেবো? রাত ১টায় এই ঘাট এলাকায় এসেছি। দুপুর ২টা হলেও এখনও পার হতে পারিনি।’
খুলনা থেকে আসা সানাউল্লাহ্ ব্যাপারী জানান, ‘গতকাল রাত ১২টায় এলাকা থেকে গরু নিয়ে ঘাটে এসেছি। চট্টগ্রাম যাবো, ঘাটের যে অবস্থা জানি না কখন পার হতে পারি। যদি আজ পার না হতে পারি, তাহলে কয়েকটি গরু বাঁচানো দায় হয়ে যাবে।’
যশোর থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল রাতে এসেছি, এখনও যেতে পারিনি। গরুর গাড়ি আগে যেতে দিচ্ছে। যদি এখন না যেতে পারি, তাহলে পণ্য পচন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। এ ঘাটে আরও কিছু ফেরি দেওয়া দরকার।’
বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার আব্দুল মমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ঘাটে ছয়টি ফেরি চালু রয়েছে। গত দুই দিন ধরে গাড়ির চাপ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রতিদিন ৪২০ থেকে ৪৫০টি গাড়ি ফেরির মধ্যমে পার করতে পারি। গতকাল ছয়টি গরু মারা গেছে। গরু বোঝাই ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের ফেরি চলাচল করছে। আশা রাখি, আজই একটা নতুন ফেরি যোগ হবে।’