মিরপুরে শেষ টি-টোয়েন্টির উইকেটটি ছিল পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক। যার পুরো ফায়দা তুলে নিতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। অবশ্য তাদের শুরুটা যেমন বিধ্বংসী ছিল, তাতে হাইস্কোরিং ম্যাচের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। মাঝ দিকে বাংলাদেশ রাশ টেনে ধরার পরেও কিউইরা ১৬২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পেরেছে। টস জিতে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে করেছে ১৬১ রান।
শুরুতে ফিন অ্যালেন ২৪ বলে ৪১ রানে ফিরে গেলে শ্লথ হয়ে পড়েছিল কিউইদের রানের চাকা। কিন্তু অধিনায়ক টম ল্যাথাম একপ্রান্ত আগলে শেষটা করেছেন আগ্রাসী ভঙ্গিমায়। তার অপরাজিত ৫০ রানেই সমৃদ্ধ হয়েছে কিউইদের স্কোরবোর্ড।
পঞ্চম ম্যাচটি খেলা হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন উইকেটে। তার প্রমাণও মেলে শুরুর দিকে। যেখানে মন্থর উইকেটে শুরুতে স্পিন আক্রমণ দেখা যেতো, আজ শুরুতে বোলিংয়ে আসেন পেসার তাসকিন আহমেদ। গতির সঙ্গে সুইংও দেখা গেছে তার বোলিংয়ে। তবে ব্যাটিং সহায়ক হওয়ায় এর ফায়দাও তুলে নিতে দেখা গেছে কিউইদের। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দারুণ সূচনা করেছেন দুই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ও ফিন অ্যালেন। পাওয়ার প্লের আগেই ৫৮ রান তুলে ফেলে এই জুটি। সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ছিলেন পেসার শরিফুল। চতুর্থ ওভারে দিয়েছেন ১৯ রান।
ষষ্ঠ ওভারে এই শরিফুলই সাজঘরে পাঠিয়েছেন দুই ওপেনারকে। তার বলে ৫.৪ ওভারে লিডিং এজ হয়ে তালুবন্দি হন রবীন্দ্র। ১২ বলে তিনি করেন ১৭ রান। এক বল পর ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হন অ্যালেন। কিউই ওপেনার ২৪ বলে ফেরেন ৪১ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছয়। তবে ১.১ ওভারে নাসুমের ঘূর্ণিতে পুল শটে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। ডিপ মিডউইকেটে থাকা শামীম ফেলে দিয়েছেন তার ক্যাচ।
দুই ওপেনারের সাজঘরে ফেরায় ছন্দপতন হয় কিউইদের। পতন হয় আরেকটি উইকেটের। আগের ম্যাচে নির্ভরতার প্রতীক ছিলেন উইল ইয়াং। কিন্তু এ ম্যাচে বেশি কিছু করতে পারলেন না। খণ্ডকালীন স্পিনার আফিফ তাকে খেলতে প্রলুব্ধ করেছিলেন। ফলাফল গ্লাভসবন্দি হয়ে ইয়াং ফিরেছেন ৬ রানে।
পরে ল্যাথামের সঙ্গী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সিরিজে বাজে ফর্মে থাকা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। একটি ছক্কাও মেরেছেন। কিন্তু নাসুমের ঘূর্ণি ফাঁদে এই ম্যাচে তাকে ফিরতে হয়েছে ৮ রানে।
হঠাৎ ছন্দপতনে কিউইদের ধীরে চলো নীতি অনুসরণে বাধ্য করে বাংলাদেশের বোলাররা। রাশ টেনে ধরে কিউইদের। ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলস মিলে শ্লথ গতিতে রান তুলতে থাকেন। ৩৫ রান যোগ করা এই জুটি ভেঙেছেন তাসকিন। ইয়র্কার লেংথের বলে নিকোলসকে ২১ রানে গ্লাভসবন্দি করেছেন তাসকিন।
বাকিটা পথ অবশ্য কোল ম্যাকনকি ও ল্যাথাম মিলেই পার করেছেন। দুজন চাহিদা মতো রান তোলায় কিউইদের স্কোরবোর্ড শেষ দিকে ফুলে উঠে। ৫ উইকেটে করতে পারে ১৬১ রান। ৩৭ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন ল্যাথাম। তাতে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়। ম্যাকনকি ১০ বলে অপরাজিত ছিলেন ১৭ রানে।
বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ছিলেন শরিফুল। ২ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৮ রান! তাসকিনও ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন একটি। নাসুম ৩ ওভারে ২৫ রানে একটি, আফিফও সমসংখ্যক ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট।
ম্যাচের শুরুর আগে অবশ্য প্রয়াত আম্পায়ার নাদির শাহর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেছে দুই দল। ম্যাচের সময় ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা মাঠে নামেন কালো ফিতা পরে।
ফুসফুসের ক্যান্সারে শুক্রবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ৫৭ বছর বয়সে মারা গেছেন সাবেক এই আম্পায়ার। তিনি বাংলাদেশের আইসিসি প্যানেল আম্পায়ার ছিলেন।