X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

লড়াই, সংগ্রাম ও সাফল্যের নাম শেখ হাসিনা

এমরান হোসাইন শেখ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০০আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৩২

লড়াই, সংগ্রাম ও সাফল্যের নাম শেখ হাসিনা। দেশের প্রাচীনতম সংগঠন আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেন ১৯৮১ সালে। পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দলটি যোগ্য নেতৃত্বের সংকটে ততদিনে কয়েকটি ব্রাকেট-বন্দি হয়ে পড়েছিল। ঠিক সেই সময় দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আবির্ভাব ঘটে শেখ হাসিনার। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার সাড়ে তিন মাসের মাথায় দেশে ফেরেন তিনি। অবশ্য ওই সময়কার সরকারের নানা বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই তাকে দেশে ফিরতে হয়।

দেশে মাটিতে পা রাখার পর শুরু হয় শেখ হাসিনার লড়াই-সংগ্রাম। বাবা-মায়ের স্নেহে যে বাড়িতে বড় হয়েছেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সেই বাড়িতেই প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার কণ্টকাকীর্ণ পথ চলা শুরু হয়। নিজ দলের মাঝেও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ নানা বাধার মুখে পড়েন তিনি। তবে, বঙ্গবন্ধুকন্যা হয়ে তিনি হালছাড়ার পাত্র নন। উজানেই নাও ঠেলে এগিয়েছেন। ওই সময় বিভক্ত আওয়ামী লীগকে সংঘবদ্ধ করার পাশাপাশি শুরু করেন গণতন্ত্রের লড়াই। ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিতের সংগ্রাম। আর এই সংগ্রামের পথে তাকে পার হতে হয় নানা প্রতিবন্ধকতা। কারাবরণ করতে হয় একাধিকবার। জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেমে বার বার মৃত্যুর মুখে পড়েছেন তিনি। অনন্ত ২০ বার তার ওপর হামলা হয়েছে। প্রত্যোকটি হামলার লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা।  তবুও পিছপা হননি, লড়াই সংগ্রাম ছেড়ে দেননি শেখ হাসিনা। জেল-জুলুম, অত্যাচার কোনও কিছুই তাকে টলাতে পারেনি একবিন্দুও। বরং সাহসের সঙ্গে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে।

১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশকে বদলে দেওয়ার প্রয়াসে সিদ্ধহস্ত হন শেখ হাসিনা। ৫ বছরের মেয়াদ শেষে তৎকালীন  তত্ত্বাবধায়ক সরকারে হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিনা রক্তপাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের নজির স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ। শুরু হয় নতুন করে লড়াই-সংগ্রাম। সারা দেশে দমন-পীড়নের মুখে পড়ে তার ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। সেই সংগ্রামে দলের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হারাতে হয়। শেখ হাসিনার জীবন থামিয়ে দিতে ২০০৪ সালে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা করা হয়। তবে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। পিছপা না হয়ে আবারও দুঃশাসন ও ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলন শুরু করেন। সেই লড়াইয়ে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতা ছাড়লেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে নানা চক্রান্ত শুরু হয়। সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোচ্চার  হয়ে উঠে আওয়ামী লীগ। দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। সেনাবাহিনীর সমর্থনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে  ফখরুদ্দীন আহমদের সরকার। ‘ওয়ান-ইলেভেনের সরকার’ নামে পরিচিত সেনা সমর্থিত সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র নীলনকশা। সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে ২০০৭ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন সরকার কথিত দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করে শেখ হাসিনাকে। প্রায় এক বছর জেল জীবন শেষে  নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন সেনাসমর্থিত সরকারের কাছ থেকে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের  নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সরকার পরিচালনা শুরু করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি প্রকল্প, ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেওয়া, দরিদ্র্যের হার নিচে নামিয়ে আনা, কৃষি বিপ্লব, শিক্ষার হার বাড়ানো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সমাপ্ত, যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন, গৃহহীনদের ঘর উপহার— এসব অর্জন করে বাংলাদেশ।

দেশকে সেক্টরভিত্তিক এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি পিতা মুজিবের হাতে গড়া দলকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপরে দাঁড় করিয়েছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ বর্তমানে অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। নিজের যোগ্যতায় দলে একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। দলীয় কাউন্সিলরা তাকে ৯ বার দলের সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। তিনি টানা ৪০ বছর দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ তো বটেই দলের নেতৃত্বের দিক থেকে বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী নেতাদেরও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের পাশাপাশি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ঝুলিতে জমেছে অনেকগুলো অর্জন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা ও পদক। এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক পুরস্কারের সংখ্যাও অনেক। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতার জন্য ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দেয় গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। এর আগেও তিনি অসংখ্য আন্তর্জাতিক পদক ও বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেছেন সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি।

/এপিএইচ/আপ-এনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (২ জুলাই, ২০২৫)
ক্লাব বিশ্বকাপে এমবাপ্পের অভিষেক, জুভেন্টাসকে হারিয়ে শেষ আটে রিয়াল
ক্লাব বিশ্বকাপে এমবাপ্পের অভিষেক, জুভেন্টাসকে হারিয়ে শেষ আটে রিয়াল
জুলাই নিয়ে পুলিশ সদস্যের ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
জুলাই নিয়ে পুলিশ সদস্যের ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
রংপুরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির বিশাল পদযাত্রা
রংপুরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির বিশাল পদযাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক