এতিমখানায় মাসে একবেলা খাবার পরিবেশন, তৃষ্ণার্তদের পানি পান করানো ও শিশুদের সময় দেওয়াসহ বিভিন্ন শর্তে মাদক মামলার দুই আসামিকে প্রবেশনে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার (১০ অক্টোবর) যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এ রায় ঘোষণা করেন।
মদ ও ফেনসিডিল সংক্রান্ত পৃথক দুই মাদক মামলায় কারাদণ্ডের পরিবর্তে প্রবেশনে মুক্তি পাওয়া দুই আসামি হলেন- মো. কামরুজ্জামান ও জায়েদা খাতুন কুটি। মো. কামরুজ্জামান যশোরের শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বারোপোতার আশরাফ আলী মোড়লের ছেলে এবং জায়েদা খাতুন কুটি একই উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মক্কেল মোল্লার মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি লতিফা ইয়াসমিন।
আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২ আগস্ট বিকাল সোয়া ৪টার দিকে শার্শা থানার এসআই মিজানুর রহমান উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামে অভিযান চালান। সেখান থেকে ২৫ বোতল ভারতীয় মদসহ কামরুজ্জামানকে আটক করেন। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে আসামি কামরুজ্জামান দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে তাকে কারাদণ্ডের পরিবর্তে প্রবেশন আইনে ৮ শর্তে দুই বছরের জন্য মুক্তির আদেশ দেন আদালতের বিচারক।
উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো, প্রবেশনকালে উপার্জিত অর্থ থেকে বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকায় নিজের পছন্দ মতো যেকোনও এতিমখানার বাসিন্দাদের প্রতি মাসে একবার সামর্থ্য অনুযায়ী একবেলা বিশুদ্ধ খাবার পরিবেশন করতে হবে।
অপর আসামি জায়েদা খাতুন কুটিকে ২০০৯ সালের ৩ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শার্শা উপজেলার বটতলা কাশিপুর থেকে ১৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেন গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মোমরেজ আলী। এ ঘটনায়ও শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন আসামি জায়েদা খাতুন।
তার মুক্তির শর্তে উল্লেখযোগ্য হলো, আসামি বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ শেখের মাজারে ঝাড়ুদার পদে কর্মরত থাকায় প্রবেশনকালে প্রতি সপ্তাহে ওই স্থানে আসা দর্শনার্থীদের বিভিন্ন সেবা (তৃষ্ণার্তদের পানি পান করানো, দর্শনার্থীদের সঙ্গে থাকা শিশুদের সময় দেওয়া ইত্যাদি) দিতে হবে।