ঠিক যেন আগের ম্যাচের চিত্রনাট্য। পিছিয়ে পড়ে হারের শঙ্কায় জাগা এবং দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে জয়ের আনন্দে ভেসে যাওয়া। তবে এই জয়টা তো যেনতেন জয় নয়, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মেতে ওঠার উপলক্ষ। নেশনস লিগে আরেকটি ঘুরে দাঁড়ানোর দৃশ্যপট এঁকে সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করলো ফ্রান্স। রবিবার রাতের ফাইনালে স্পেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে উয়েফা নেশনস লিগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ফরাসিরা।
মিলানের সান সিরোর ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল ফ্রান্স। লিড নিলেও অবশ্য বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেনি স্পেন। দুই মিনিটের মধ্যে ফরাসিরা খেলায় ফেরে করিম বেনজেমার গোলে। আর শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দশেক আগে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মাতে ফ্রান্স।
এই নেশনস লিগের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে হারতে বসা ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতে নেয় ফ্রান্স। ওই ম্যাচে ফরাসিরা পিছিয়ে পড়েছিল ২-০ গোলে। সেখান থেকে সমতায় ফেরা এবং একেবারে শেষ মুহূর্তের লক্ষ্যভেদে ফাইনাল নিশ্চিত করা। ফাইনালেও তারা পিছিয়ে পড়ে এবং এবারও জয়ের সঙ্গে সোনার পদক গলায় তুললেন বেনজেমা-এমবাপ্পে-আতোঁয়া গ্রিজমানরা।
ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে বিদায় করে ফাইনালের টিকিট কেটেছিল স্পেন। যে ইতালি টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিল, সেই তাদের হারিয়ে দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়! বোঝাই যাচ্ছিল ফাইনালে ফ্রান্সকে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। সান সিরোর ম্যাচে লড়াই হয়েছে সমানে সমান। বল পজেশনে স্পেন অনেক এগিয়ে ছিল। তবে আক্রমণ বা সুযোগ তৈরিতে দুই দলের পরিসংখ্যান প্রায় একই রকম।
যদিও প্রথমার্ধে কেউই জাল খুঁজে পায়নি। বিরতি থেকে ঘুরে আসার পর সব উত্তেজনা বুঝি জমা ছিল। ৬৪ মিনিটে ফরাসিদের স্তব্ধ করে স্পেনকে এগিয়ে নেন মিকেল ওয়ারজাবাল। ক্ষীপ্রগতিতে ডান প্রান্ত দিয়ে ঢুকে গিয়ে বাঁ পায়ের আড়াআড়ি নিচু শটে এই ফরোয়ার্ড বল জড়িয়ে দেন জালে। গোলকিপার উগো লরি কিছুই করতে পারেননি। দুই মিনিট পরই বেনজেমার ম্যাজিক। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে বসন্ত চলা এই স্ট্রাইকার ডান প্রান্ত থেকে আড়াআড়ি শটে খুঁজে নেন জাল। গোলকিপার উনাই সিমনের হাতে লাগলেও শেষরক্ষা হয়নি।
১-১ সমতায় ম্যাচে ফেরে উত্তেজনা। আক্রমণ-পাল্ট আক্রমণ চলেছে। তবে ৮০ মিনিটে সফল হয় ফ্রান্স। বাঁ পায়ে এমবাপ্পের নেওয়া নিচু শট জালে জড়ালে আনন্দে মাতে ফরাসিরা। ওই গোলেই নেশনস লিগের শিরোপা জিতে নেয় ফ্রান্স।