বাঁশের লাঠি হাতে খিস্তি-খেউড় করছেন এক বৃদ্ধ। একবার কারও দিকে তেড়ে যাচ্ছেন, আবার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছেন। এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা পরিষদে। আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত।
বৃদ্ধের নাম আকরাম হোসেন (৬০)। তিনি মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের হানুয়ার এলাকার বাসিন্দা। আকরাম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার বাড়িতে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোর জন্য দুই বছর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমকে ১১ হাজার টাকা দিই। টাকা দেওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার তার কাছে যাই। কিন্তু আজকাল বলে টালবাহানা করতে থাকেন। আমি বৃদ্ধ এবং দরিদ্র মানুষ। রাজগঞ্জ থেকে উপজেলা পরিষদে যেতে ৭০-৮০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমার টিউবওয়েল দিচ্ছেন না।
তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে আমি তার কার্যালয়ে যাই। সেখানে টিউবওয়েলের কথা জানাই। কোনও সাড়া না পেয়ে জোরে কথা বললে চেয়ারম্যানের স্বামীসহ কয়েকজন যুবক আমাকে মারধর শুরু করেন। তাদের হাত থেকে বাঁচতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলে আমাকে ঘিরে ধরেন। বাঁশের লাঠি দিয়ে মারতে চাইলে কেড়ে নিয়ে তাদের মারতে উদ্যত হই। পরে সেখান থেকে চলে আসি। তবে তারা আমাকে চড়, ঘুসি ও লাথি মেরেছে।
তিনি বলেন, টিউবওয়েলের বিষয়টি আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জানিয়েছি। তারাও নাজমা খানমকে অনুরোধ করেছেন, কিন্তু কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, আমি লোকটাকে চিনি না। সোমবার দুপুরে পরিষদে হঠাৎ হাজির হন। এসেই উল্টাপাল্টা কথা বলতে থাকেন। তার কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে ভিডিও ছাড়া হয়েছে। এটি সঠিক নয়। তবে নলকূপ নিতে ১০ হাজার ২০০ টাকা সরকারি খরচ দিতে হয়। উপজেলা পরিষদে ১০০ মানুষ নলকূপের আবেদন করেছেন। সেগুলো তো একবারেই দেওয়া সম্ভব নয়। একেকটি করে দিতে হবে।
সোমবারের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি পুলিশকে বলেছি। ওসি জানিয়েছেন তিনি প্রতিমন্ত্রীর প্রটোকলে রয়েছেন; ফিরে আমার সঙ্গে কথা বলবেন।