X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১
সাহিত্যতত্ত্ব : একটি সংক্ষিপ্ত পরিক্রমা

মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব

মুহম্মদ মুহসিন
১৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্বের মৌলিক ভিত্তি হলো এই নীতি ও বিশ্বাস যে, কোনো সাহিত্যকর্ম আলোচনার ক্ষেত্রে উক্ত সাহিত্যকর্মের লেখক, পাঠক বা লেখার বিষয় নিয়ে ভাবিত হওয়ার খুব প্রয়োজন নেই; বরং ভাবতে হবে সাহিত্যকর্মটিতে বিবৃত ও বিধৃত সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে। মার্কসীয় সমালাচনাতত্ত্বে কেন এমনটা ভাবতে হয় তার উত্তর রয়েছে মার্কসের উচ্চারিত বিখ্যাত এক আপ্তবাক্যে যেখানে মার্কস বলেছেন—‘মানুষের চেতনা তার অস্তিত্বকে নিরূপণ করে না, বরং তার সামাজিক অস্তিত্বই তার চেতনাকে নিয়ন্ত্রিত করে’ (It is not the consciousness of men that determines their being, but, on the contrary, their social being that determines their consciousness)। সাহিত্য যেহেতু চেতনা থেকে উদ্ভূত এবং সেই চেতনা যেহেতু সামাজিক অস্তিত্ব অর্থাৎ আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত সেহেতু সাহিত্য বিশ্লেষণের আবশ্যিক দায় হলো আখ্যানের সাথে সংশ্লিষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার বিচার। এই তত্ত্ব অনুযায়ী আখ্যানটি বড় নয়, বরং আখ্যানটির সাথে সংশ্লিষ্ট আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাই বড়।

মার্কস উপরের বাক্যটিতে ‘সামাজিক’ (social) শব্দ ব্যবহার করলেও, তাঁর তত্ত্বমতে সামাজিক সকল বাস্তবতা নির্মিত ও নিরূপিত হয় অর্থনীতি দ্বারা। ফলে তাঁর তত্ত্ব অনুযায়ী সাহিত্যকর্ম বিচারের কাজে সামাজিক বাস্তবতা বিশ্লেষণ মূলত সম্ভব হবে অর্থনৈতিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক কাঠামো বিশ্লেষণের মধ্য দিয়েই। আর এ কথা তো আমরা জানিই যে, ফ্রয়েড যেমন জীবন ও জগৎকে একমাত্র যৌনতা দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন, মার্কস তেমনই জীবন ও জগৎকে একমাত্র উৎপাদনব্যবস্থা বা অর্থনীতি দিয়েই বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি কীভাবে অর্থনীতি দিয়ে জীবন ও জগতের সবকিছু বিশ্লেষণের প্রয়াস পেলেন তা বোঝার জন্য আমাদেরকে প্রথমেই বুঝতে হবে দুটি অতি পরিচিত শব্দ—বেইজ স্ট্রাকচার (base structure) ও সুপার স্ট্রাকচার (super structure)।  

জীবন ও জগতের পূর্ণ কাঠামোটিকে মার্কসীয় ধারণায় বেইজ স্ট্রাকচার ও সুপার স্ট্রাকচার নামে দুইভাগে ভাগ করা হয়। দুইভাগেরই কেন্দ্রে রয়েছে উৎপাদন ব্যবস্থা। মূলত মার্কসীয় সব ধারণার মূলেই রয়েছে উৎপাদন ব্যবস্থা। বেইজ স্ট্রাকচার বা ভিত কাঠামো রচিত হয় উৎপাদনের সাহায্যকারী উপাদান এবং উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট জনতার মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক দ্বারা। উৎপাদনের সাহায্যকারী উপাদানের মধ্যে রয়েছে যন্ত্রপাতি, কারখানা, ভূমি, কাঁচামাল ইত্যাদি। উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট জনতার পারস্পরিক সম্পর্ক বাৎলে দেয় সংশ্লিষ্ট জনতার মধ্যে কারা প্রলেতারিয়েত, কারা উঁচু জাতের কর্মী বা লেবার অ্যারিস্টোক্রেসি, কারা বুর্জোয়া, বা কারা পেটি বুর্জোয়া, কারা ভূমিদাস, কারা ভূস্বামী ইত্যাদি; এবং একই সাথে বাৎলে দেয় এই প্রলেতারিয়েত, লেবার অ্যারিস্টোক্রেসি, বুর্জোয়া, পেটি বুর্জোয়া, ভূমিদাস, ভূস্বামী প্রমুখের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্কটি কেমন। উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট এই দুটি দিক অর্থাৎ উৎপাদনের সাহায্যকারী উপাদান (means of production) এবং উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট জনতার পারস্পরিক সম্পর্ক (relations of production) নির্ণয় ও নির্ধারণ করে দেয় সংশ্লিষ্ট সমাজব্যবস্থাটি কোন ধরনের—সেটি পুঁজিবাদী, নাকি সমাজতান্ত্রিক, নাকি সামন্ততান্ত্রিক, নাকি কমিউনিস্টপন্থী। এক কথায় উৎপাদনের সাহায্যকারী উপাদান (means of production) এবং উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট জনতার পারস্পরিক সম্পর্ক (relations of production) গঠন করে সমাজব্যবস্থার বেইজ স্ট্রাকচার এবং বেইজ স্ট্রাকচার নির্দিষ্ট করে বলে দেয় সংশ্লিষ্ট সমাজব্যবস্থাটি কোন ধরনের—সেটি পুঁজিবাদী, নাকি সমাজতান্ত্রিক, নাকি সামন্ততান্ত্রিক, নাকি কমিউনিস্টপন্থী।

একটি সমাজব্যবস্থায় যা কিছু থাকে তা থেকে উপরে উল্লিখিত বেইজ স্ট্রাকচারের উপাদানটুকু বাদ দিলে অবশিষ্ট যা থাকে তা সবই সেই সমাজব্যবস্থার সুপারস্ট্রাকচারের অংশ। উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে পরিবার, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ধর্ম, প্রচার মাধ্যম, পুলিশ, বিচারপদ্ধতি, প্রশাসন ইত্যাদি সবই একটি সমাজব্যবস্থার সুপারস্ট্রাকচার। মার্কসীয় ধারণামতে সমাজের সুপারস্ট্রাকচার কী হবে এবং কেমন হবে তা নির্ধারিত হবে তার বেইজ স্ট্রাকচার দ্বারা। আমরা খুব সহজেই বুঝি যে, উৎপাদন ব্যবস্থার বেইজ স্ট্রাকচারের ভিত্তিতে যে সমাজটি পুঁজিবাদী রূপে প্রতিষ্ঠিত সে সমাজটির শিক্ষা, সাহিত্য, ধর্মচর্চা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার পদ্ধতি স্বাভাবিকভাবেই সেই সমাজব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নরকম হবে যে সমাজব্যবস্থাটি তার উৎপাদন ব্যবস্থার বেইজ স্ট্রাকচারের ভিত্তিতে সমাজতান্ত্রিক বা সামন্ততান্ত্রিক রূপে প্রতিষ্ঠিত। মার্কসীয় বেইজ স্ট্রাকচার ও সুপারস্ট্রাকচারের ধারণা এভাবে প্রতিষ্ঠা করে যে, সমাজব্যবস্থার সুপারস্ট্রাকচার নিয়ন্ত্রিত হয় এর বেইজ স্ট্রাকচার দ্বারা। বেইজ স্ট্রাকচারটি যেহেতু সম্পূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থার স্ট্রাকচার, আর সেই উৎপাদন ব্যবস্থার স্ট্রাকচারটিই যেহেতু সমাজের সুপারস্ট্রাকচার নিয়ন্ত্রণ করে সেহেতু বলা যায় পুরো সমাজটিই নিয়ন্ত্রিত হয় তার উৎপাদন ব্যবস্থা দ্বারা। তবে এ নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ একমুখী বা একতরফা নয়। বেইজ স্ট্রাকচার কর্তৃক সুপারস্ট্রাকচার নিরূপিত হওয়ার পরে এই সুপারস্ট্রাকচারই আবার কঠিন বর্ম হয়ে দাঁড়ায় তার বেইজ স্ট্রাকচারকে রক্ষার জন্য। সুপারস্ট্রাকচার তখন বেইজ স্ট্রাকচারের পক্ষে নিয়মিত ওকালতি করে এবং বেইজ স্ট্রাকচারের পক্ষে সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বুনিয়াদ গড়ে তোলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বেইজ স্ট্রাকচারের মাধ্যমে কোনো সমাজ সমাজতান্ত্রিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে সেই সমাজের সুপারস্ট্রাকচারে যে পুলিশ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে তাদের ব্রত হবে উক্ত সমাজতন্ত্রের পক্ষে কাজ করা, যে ধর্মব্যবস্থা চর্চিত হবে তার কাজ হবে উক্ত সমাজতন্ত্রের পক্ষে ফতোয়া দেয়া, যে সাহিত্য রচিত হবে তার কাজ হবে উক্ত সমাজতন্ত্রের পক্ষে তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি করা। মার্কসীয় ধারণায় বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচার এভাবে একে অপরের পরিপূরক হয়ে জীবন ও জগতের পূর্ণ কাঠামোটি রচনা করে। 

বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচারের এই ধারণার মধ্যেই লুকায়িত রয়েছে সাহিত্য সম্বন্ধীয় মার্কসীয় ধারণার বীজ। বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচারের ধারণা বলে দিচ্ছে যে, সাহিত্য সুপারস্ট্রাকচারের অংশ বিধায় কোনো সমাজের সাহিত্যের রূপ নির্ণীত হয় সেই সমাজের বেইজ স্ট্রাকচার দ্বারা। বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচার উভয়ই উৎপাদন ব্যবস্থার তথা অর্থনৈতিক বাস্তবতার (economic conditions) দ্বিবিধ প্রকাশরূপ বিধায় বিষয়টি আরো একটু সরল করে এভাবে বলা যায় যে, মার্কসীয় ধারণামতে কোনো সমাজের সাহিত্য তার উৎপাদন ব্যবস্থা তথা অর্থনৈতিক বাস্তবতার সাথে সম্পর্কহীনরূপে অস্তিত্বশীল হতে পারে না। সদর্থক বাক্যে বলা যেতে পারে, সকল সাহিত্যকর্ম আবশ্যিকভাবে সংশ্লিষ্ট সমাজের অর্থনৈতিক বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাহিত্য সম্পর্কে মার্কসীয় ভাবনা এ পর্যন্ত যথেষ্ট নির্দোষ ও স্বাভাবিক। কিন্তু সে ভাবনা এ পর্যন্ত সীমায়িত থাকেনি। মার্কসীয় ভাবনামতে সুপারস্ট্রাকচার যেহেতু বেইজ স্ট্রাকচারের রক্ষাকবচ হিসেবে ভূমিকা পালন করে মর্মে ইতোমধ্যেই প্রমাণিত, সেই প্রমাণের আলোকে বলা হয় যে, সুপারস্ট্রাকচারের অংশ হিসেবে সাহিত্য কোনো সমাজের প্রতিষ্ঠিত উৎপাদন ব্যবস্থা তথা বেইজ স্ট্রাকচারের পক্ষে ‘প্রোপাগান্ডা’ হিসেবে কাজ করে। সাহিত্য প্রোপাগান্ডা হিসেবে কাজ করে সুপারস্ট্রাকচারের অন্য অংশ যেমন সরকার, প্রশাসন ও রাজনীতির পক্ষে। সাহিত্যকে এভাবে সরাসরি প্রোপাগান্ডা আখ্যা দিয়ে মার্কস সাহিত্যের প্রতি কিছুটা ঘৃণাই ব্যক্ত করলেন। 

সাহিত্য সম্পর্কিত মার্কসীয় এই ভাবনা একেবারেই কাজ করে না যখন আমরা দেখি যে পৃথিবীতে অনেক সাহিত্যকর্ম আছে যেগুলো প্রতিষ্ঠিত উৎপাদন ব্যবস্থার কিংবা শাসক শ্রেণীর পক্ষে তো বলেই না, বরং প্রতিষ্ঠিত বেইজ স্ট্রাকচার ও সুপারস্ট্রাকচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জনগণকে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখায়। আবার বেইজ স্ট্রাকচার আর সুপারস্ট্রাকচার পরস্পরের রক্ষায় নিবেদিত হয়ে মার্কসীয় ভাবনা অনুযায়ী কাজ করতে থাকলে সময়ের পরিবর্তনে কোনো একটি সমাজের বেইজ ও সুপরস্ট্রাকচারের পরিবর্তন আসাও তত্ত্বগতভাবে অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু বাস্তবে তো আমরা দেখি ইতিহাসের একসময়কার পশুপালনভিত্তিক যাযাবর সমাজ পরিবর্তিত হয়ে কৃষিভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার তারপরে শিল্পভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সকল ঐতিহাসিক পরিবর্তনে বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচার সমূলেই পরিবর্তিত হয়েছে। বেইজ ও সুপারস্ট্রাকচারের এই পরিবর্তন হেগেলিয় ডায়ালেকটিকস দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব হলেও, সাহিত্যকর্ম কর্তৃক বেইজস্ট্রাকচারকে চ্যালেঞ্জ করার ঘটনা ব্যাখ্যার বিষয়ে মার্কসীয় সাহিত্যভাবনা বিপন্ন বোধ করে। এই বিপন্নতা থেকে মার্কসীয় সাহিত্যভাবনাকে কিছুটা উদ্ধার করেছেন মার্কসিস্ট তাত্ত্বিক রেমন্ড উইলিয়ামস।

রেমন্ড উইলিয়ামস এজন্য আন্তোনিও গ্রামসির নিকট থেকে হেজিমনি (hegemony) সংক্রান্ত ধারণা ধার করেছেন। হেজিমনি হলো বিভিন্নমুখী সংস্কৃতি ও আইডিওলজির কোনো সমাজে শাসক শ্রেণি কর্তৃক চর্চিত এমন আধিপত্য যার সুবাদে শাসক শ্রেণির পছন্দের সংস্কৃতি বা আইডিওলজি সকলের নিকট পছন্দের হয়ে ওঠে। হেজিমনি ও আইডিওলজি মার্কস কথিত সুপারস্ট্রাকচারেরই অংশ। গ্রামসির হেজিমনি সংক্রান্ত ধারণাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে রেমন্ড উইলিয়ামস বললেন যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই বেইজ স্ট্রাকচারের ওপর দাঁড়ানো সুপারস্ট্রাকচারে হেজিমনির তিনটি রূপ থাকে—রেসিডিউয়াল হেজিমনি (residual hegemony), ডমিন্যান্ট হেজিমনি (dominant hegemony) এবং এমারজেন্ট হেজিমনি (emergent hegemony)। রেসিডিউয়াল হেজিমনি হলো ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট ধাপে যে বেইজ স্ট্রাকচারটি বিদ্যমান রয়েছে তার পূর্ববর্তী ধাপের বেইজ স্ট্রাকচারের ওপর ক্রিয়াশীল হেজিমনি যার রেশ পরের ধাপেও ক্রিয়াশীল থাকে। নিচের ডায়াগ্রামটি দ্বারা বিষয়টি স্পষ্ট করা যেতে পারে।

ডায়াগ্রাম

উপরের ডায়াগ্রামে দ্বিতীয় ধাপে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সুপারস্ট্রাকচারে হেজিমনির তিনটি রূপ রয়েছে—রেসিডিউয়াল হেজিমনি, ডমিন্যান্ট হেজিমনি ও এমারজেন্ট হেজিমনি। মূলত দ্বিতীয় ধাপে নয়, বরং সকল ধাপেই এমন তিনটি রূপ রয়েছে। এখানে আলোচনার সুবিধার্থে শুধু একটি ধাপের উপরে এগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। হেজিমনির এই তিন রূপের প্রথম রূপ অর্থাৎ রেসিডিউয়াল হেজিমনি আসে পূর্ববর্তী ধাপ থেকে। উপরের ডায়াগ্রামে ক্যাপিটালিজম নামক বেইজ স্ট্রাকচারের ধাপে এই হেজিমনি এসেছে ফিউডালিজম ধাপ থেকে। ডমিন্যান্ট হেজিমনি হলো সংশ্লিষ্ট ধাপের মূল হেজিমনি বা আইডিওলজির মূল স্রোত যা শাসক শ্রেণি লালন, পরিপালন ও কার্যকর করে থাকে তাদের হাতের আইডিওলজিকাল স্টেট অ্যাপারেটাস (আইএসএ) এবং রিপ্রেসিভ স্টেট অ্যাপারেটাস (আরএসএ) দ্বারা। এমারজেন্ট হেজিমনি হলো ধীরে ধীরে ডমিন্যান্ট হেজিমনির বিরুদ্ধে জেগে ওঠা চিন্তা ও স্বর। এই হেজিমনিই মূলত সূচনা করে বিপ্লবের এবং উৎপাদন তথা অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে চালিত করে পরবর্তী ধাপের দিকে, অর্থাৎ ফিউডালিজমকে চালিত করে ক্যাপিটালিজমের দিকে এবং ক্যাপিটালিজমকে চালিত করে সোশালিজমের দিকে। এই এমারজেন্ট হেজিমনিই সম্ভব করে তোলে ডমিন্যান্ট হেজিমনির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সাহিত্যের উদ্ভব। মার্কসিস্ট মতবাদের এই ব্যাখ্যা বলে দেয় কীভাবে সৃষ্টি হয় সেইসকল সাহিত্যকর্ম যারা প্রতিষ্ঠিত উৎপাদন ব্যবস্থার কিংবা শাসক শ্রেণীর পক্ষে তো বলেই না, বরং প্রতিষ্ঠিত বেইজ স্ট্রাকচার ও সুপারস্ট্রাকচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জনগণকে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখায়।

এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা সাহিত্য বিষয়ে মার্কসীয় ভাবনা সংক্রান্ত তিনটি অনুসিদ্ধান্ত টানতে পারি : ১) সাহিত্য যেহেতু চেতনা থেকে উদ্ভূত এবং চেতনা সম্পর্কে যেহেতু মার্কস বলেছেন ‘মানুষের চেতনা তার অস্তিত্বকে নিরূপণ করে না, বরং তার সামাজিক অস্তিত্বই তার চেতনাকে নিয়ন্ত্রিত করে’, সেহেতু সাহিত্য বিশ্লেষণের আবশ্যিক দায় হলো সংশ্লিষ্ট সাহিত্যকর্ম বা আখ্যানের সাথে সংশ্লিষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার বিচার ও বিশ্লেষণ; ২) সাহিত্য সুপারস্ট্রাকচারের অংশ বিধায় তার কাজ হলো বেইজ স্ট্রাকচারের পক্ষে ওকালতি করা বা ডমিন্যান্ট হেজিমনির প্রোপাগান্ডা হিসেবে কাজ করা; এবং ৩) এমারজেন্ট হেজিমনির প্রকাশ স্বরূপ সাহিত্যের কাজ হলো ডমিন্যান্ট হেজিমনির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বেইজ স্ট্রাকচারের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখানো। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই তিনটি অনুসিদ্ধান্তের পারস্পরিক সম্পর্ক একমুখো নয়। বিশেষ করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অনুসিদ্ধান্তের সম্পর্ক সম্পূর্ণ বিরোধাত্মক। একটিতে বলা হয়েছে সাহিত্যের কাজ ডমিন্যান্ট হেজিমনির পক্ষে কথা বলা, আর অপরটিতে বলা হয়েছে সাহিত্যের কাজ হলো ডমিন্যান্ট হেজিমনির বিরুদ্ধে কথা বলা। আবার প্রথম অনুসিদ্ধান্তের সাথে দ্বিতীয় ও চতুর্থ অনুসিদ্ধান্তের সম্পর্কও দ্বিমুখো। প্রথম অনুসিদ্ধান্ত অনুসারে মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব সাহিত্যকর্মের বিশ্লেষণের সাথে সম্পর্কিত, কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় অনুসিদ্ধান্ত অনুসারে মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব সাহিত্যকর্মের উদ্ভব ও সৃজনের সাথে সম্পর্কিত।

প্রথম অনুসিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্বের যা কাজ সে বিষয়ে মার্কসিস্টদের মধ্যে মতভেদ বিরল। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অনুসিদ্ধান্ত অনুসারে সাহিত্য সম্পর্কিত ভাবনায় মার্কসিস্টদের মধ্যেই প্রবল মতভেদ বা মতদ্বৈততা বিদ্যমান। সাহিত্যকে প্রোপাগান্ডা আখ্যা দিয়ে মার্কস নিজেই সাহিত্যকে প্লেটোর মতো অনেকটা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেছেন। মার্কসের এই নেতিবাচক মনোভঙ্গি অনুসরণ করে অনেক মার্কসিস্টই সাহিত্যকে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে ত্যাজ্য হিসেবে দেখেছেন, বিশেষ করে আধুনিক সাহিত্যকে  যেখানে তন্ময়তার (objectivity) চেয়ে মন্ময়তার (subjectivity) জোর অনেক বেশি। লেনিন নিজেই এই ভাবনার একজন গোঁড়া সমর্থক ছিলেন। এই ভাবনার অনুবর্তী হয়েই ১৯৩৪ সালে রাশিয়ার লেখক কংগ্রেসে ঘোষণা করা হয়েছিল যে, মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বের বিচারে জেমস জয়েসের ‘ইউলিসিস’ উপন্যাসের স্বরূপ হলো ‘পোকায় কিলবিল করা কতখানি গোবর’ (a heap of dung crawling with worms)। মার্কসবাদী তাত্ত্বিক কার্ল রাডেক (Karl Radek) বলেছিলেন—‘জয়েসের জগৎ অবস্থিত একটি মধ্যযুগীয় বইয়ে ঠাসা আলমারি, একটি বেশ্যালয় এবং একটি মদের দোকানের মাঝখানে’।

তবে এই গোঁড়া মতের সমর্থকরাই আবার সাহিত্যের জয়ধ্বনি গাইতে চাইলেন যদি সে সাহিত্য হয় সোশালিজম বা কমিউনিজমের প্রোপাগান্ডা, যদি সে সাহিত্য তুলে ধরে শ্রেণিসংগ্রামের বয়ান আর যদি তাতে থাকে প্রলেতারিয়েতের পক্ষে লেখকের শক্ত অবস্থান। লেনিন খুব রাখঢাক ছাড়াই ১৯০৫ সালে বললেন ‘সাহিত্যকে হতে হবে পার্টির হাতিয়ার’। সাহিত্যকে হতে হবে পার্টি-আচরিত শ্রমিকশ্রেণির কল্যাণে আত্মনিবেদিত। ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পরে শিল্পসাহিত্য বিষয়ে বিপ্লবীরা তাঁদের নতুন নীতির নাম দিলেন ‘নারদনস্ত’ (narodnost)। এ নীতি অনুযায়ী শিল্পকে হতে হবে ‘জনতার আর্ট’। যে কোনো শিল্প বা সাহিত্যকর্মকে তার যুগের মেহনতি জনতার কাছে বোধগম্য ও উপভোগ্য হতে হবে, তাতে থাকতে হবে সমাজচেতনার সংহত রূপ এবং বর্তমানের নিরিখে ভবিষ্যতের সমাজবিকাশের সম্ভাবনাকে দেখার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি। সহজ কথায় তাকে হতে হবে সোশালিজমের প্রোপাগান্ডা। ব্যাপারটাকে সরলীকরণ করলে এই দাঁড়ায় যে, বেইজ স্ট্রাকচার যদি ফিউডালিজমের হয়, আর তখন যদি ফিউডালিজমের পক্ষের আইডিওলজি বা ডমিন্যান্ট হেজিমনি ধারণ করে সাহিত্য রচিত হয়, তাহলে লেনিনপন্থী মার্কসিস্টদের আপত্তি আছে; একইভাবে   বেইজ স্ট্রাকচার যদি ক্যাপিটালিজমের হয়, আর তখন যদি ক্যাপিটালিজমের পক্ষের আইডিওলজি বা ডমিন্যান্ট হেজিমনি ধারণ করে সাহিত্য রচিত হয়, তাহলে লেনিনপন্থী মার্কসিস্টদের আপত্তি আছে; কিন্তু বেইজ স্ট্রাকচার যদি সোশালিজমের হয়, আর তখন যদি সোশালিজমের পক্ষের আইডিওলজি বা ডমিন্যান্ট হেজিমনি ধারণ করে সাহিত্য রচিত হয়, তাহলে আর লেনিনপন্থী মার্কসিস্টদের আপত্তি তো নাই-ই, বরং তাঁরা তখন জোর গলায় ‘মারহাবা, মারহাবা’ বলে লেখককে সাধুবাদ জানাতে আগ্রহী।

এঙ্গেলস অবশ্য মার্কসের মতো মনে করতেন না যে, সাহিত্য প্রোপাগান্ডা গোছের কিছু। ১৮৯০ সালের লেখা পত্রাবলিতে এঙ্গেলস বলেছেন—যদিও তিনি মনে করেন যে, জীবনের অর্থনৈতিক দিক অন্য সকল দিককে নিয়ন্ত্রণ করে, তবে তিনি এটাও স্বীকার করেন যে, আর্ট, দর্শন এবং চেতনার অন্যান্য আঙ্গিক তুলনামূলক স্বাধীনভাবে কার্যক্ষম এবং মানুষের চেতনা পাল্টে দেয়ার শক্তি তাদের রয়েছে। এঙ্গেলস এভাবে বললেও তা একধরনের আকস্মিক বলা এবং তাদের তত্ত্বের সাথে এই বলা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই ভিন্নরূপ বক্তব্যকে তাত্ত্বিকভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো চেষ্টাও তিনি করেননি। কিন্তু এই বক্তব্য তত্ত্বভুক্ত করা প্রয়োজন মর্মে মার্কসিস্টরা অনুভব করতে লাগলেন। নচেৎ মার্কসিস্টদের পক্ষ থেকে সাহিত্য বিষয়ে লেনিনের মতো গোঁড়া অভিমত আরো বেশি মাত্রায় উচ্চারিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিলো। এই উদারপন্থী এঙ্গেলসীয় অভিমতই রেমন্ড উইলিয়ামসের এমারজেন্ট হেজিমনি নামক ধারণা দ্বারা তাত্ত্বিকভাবে বৈধতা পেলো। এই তত্ত্ব অনুযায়ী বেইজ স্ট্রাকচারের প্রতি ধাপেই সুপারস্ট্রাকচারে ডমিন্যান্ট হেজিমনির বিরুদ্ধে একটি বিপরীত শক্তির স্রোত তৈরি হয় যা এমারজেন্ট হেজিমনি রূপে বেইজ স্ট্রাকচারকে পরবর্তী ধাপের দিকে চালিত করে, অর্থাৎ সোশালিজমের পথে বিপ্লবকে ক্রিয়াশীল রাখে। একথার মধ্যে সাহিত্য দ্বারা চেতনার পরিবর্তন সম্ভব মর্মে এঙ্গেলসের প্রদত্ত অভিমতের অনুরণন আছে। উইলিয়ামসের এই তত্ত্বের মধ্য দিয়ে একথা বলা সহজ হলো যে, বেইজ স্ট্রাকচারের প্রতিধাপের সাহিত্যই মার্কসিস্টদের কাছে মূল্যবান। কারণ, তাঁরা অনুসন্ধান করলে দেখতে পাবেন যে, ট্রাইবালিজম, ফিউডালিজম, ক্যাপটিালিজম—বেইজ স্ট্রাকচারের ইত্যাকার প্রতি ধাপেই তাদের সুপারস্ট্রাকচারে সাহিত্যের মাঝে রয়েছে এমারজেন্ট হেজিমনির প্রভাব ও উচ্চারণ, আর তার ফলস্বরূপ রয়েছে সংশ্লিষ্ট বেইজ স্ট্রাকচারকে অতিক্রম করে সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন। তবে উইলিয়ামসের এই তত্ত্বের পরেও ফিউডালিজম ও ক্যাপিটালিজমের সময়কার ডমিন্যান্ট হেজিমনি বা ডমিন্যান্ট আইডিওলজি দ্বারা অনুপ্রাণিত সাহিত্যের বিরুদ্ধে মার্কসিস্টদের অবস্থান পূর্ববৎ কঠোর ও কট্টরই থেকে যায়।

সাহিত্য সম্বন্ধে মার্কসিস্ট ভাবনার এই সকল বিষয়কে একত্র করে মার্কসিস্ট সাহিত্য সমালোচনায় কী কী কাজ করা হয় তার একটি নিম্নরূপ তালিকা প্রণয়ন করা যেতে পারে।

ক) সাহিত্যকর্মটিতে যে সমাজ ধৃত আছে তার বেইজ স্ট্রাকচার তথা উৎপাদন কাঠামোটি কেমন তার স্বরূপ অন্বেষণ করা।

খ) সমাজের উৎপাদন কাঠামোতে উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন স্তরের জনতার মাঝে সম্পর্ক কেমন তথা শ্রেণি-সংগ্রামের চিত্রটি কেমন তা নির্ণয়ের চেষ্টা করা।

গ) সাহিত্যকর্মটিতে ধৃত উৎপাদন কাঠামোর ভিত্তিতে সমাজটি যদি ফিউডালিস্ট, ক্যাপিটালিস্ট, ইমপেরিয়ালিস্ট ইত্যাদি হয় তাহলে বিশ্লেষণ করে দেখা যে, ডমিন্যান্ট হেজিমনির সমর্থনে সাহিত্যকর্মটি ফিউডালিজম, ক্যাপিটালিজম ইত্যাদির পক্ষে বলছে কিনা। যদি পক্ষে বলে তাহলে সাহিত্যকর্মটিকে বিচারের মাধ্যমে তুলোধুনো করা।

গ) ডমিন্যান্ট হেজিমনির সমর্থনে সাহিত্যকর্মটি ফিউডালিজম, ক্যাপিটালিজম ইত্যাদির পক্ষে না বলে যদি এমারজেন্ট হেজিমনি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সাহিত্যকর্মটি নিপীড়নমূলক আইডিওলজির বিপক্ষে বলে, যদি সাহিত্যকর্মটি ধরিয়ে দেয় কীভাবে আইডওলজি ও হেজিমনির চিনির প্রলেপযুক্ত তিতা বড়ি খাইয়ে শাসক শ্রেণি শোষণ-নিপীড়নকে জায়েজ করে নিচ্ছে, তাহলে মার্কসিস্ট সমালোচকের কাজ হলো সাহিত্যকর্মটি পরতে পরতে খুলে দেখিয়ে দেয়া যে কী শক্তিশালীভাবে এটি নিপীড়িতের ও শোষিতের পক্ষে কথা বলছে এবং এসব দেখিয়ে দেয়ার সাথে সাথে সাহিত্যকর্মটির ভূয়সী প্রশংসা করা।

ঘ) সাহিত্যকর্মটিতে ডমিন্যান্ট হেজিমনি এবং এমারজেন্ট হেজিমনি উভয়ের পক্ষেই যদি বক্তব্য পাওয়া যায় তাহলে মার্কসিস্ট সমালোচকের কাজ হলো দেখিয়ে দেয়া সাহিত্যকর্মটি আইডিওলজিগতভাবে কতটা পরস্পরবিরোধী বা সাংঘর্ষিক।

ঙ) সাহিত্যকর্মটিতে ধর্ম কীভাবে চিত্রিত হয়েছে সেটিও মার্কসিস্টদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আগ্রহের বিষয়। ধর্ম বিষয়ে মার্কসিস্ট সমালোচকদের তিনটি কাজ : (১) সাহিত্যকর্মটিতে আর্থসামাজিক নিপীড়ন ও শোষণের বাস্তবতায় ধর্ম শাসকশ্রেণির পক্ষে ব্যবহৃত হলে তার স্বরূপ উদ্ঘাটন ও ধর্মকে এভাবে ব্যবহারের কাজটিকে নিন্দা করা; (২) ধর্মকে আইডিওলজির অংশরূপে শাসকগোষ্ঠির নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে দেখানো হলে লেখক কীভাবে তেমনটা দেখিয়েছেন তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা; এবং (৩) সাহিত্যকর্মটির লেখক কর্তৃক ধর্মকে এভাবে নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে দেখানোর কাজটিকে ভূয়সী প্রশংসা করা।

মার্কসবাদ একটি গ্রান্ড ন্যারেটিভ যা দ্বারা জীবন ও জগতের সবকিছু ব্যাখ্যা করা হয়। সে প্রেক্ষিতে সাহিত্য বিষয়ে মার্কসবাদের বয়ান এবং ব্যাখ্যাও বিশাল ও ব্যাপক। সেই ব্যাপকতার কিঞ্চিৎমাত্র এখানে এতক্ষণ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে যা দ্বারা মার্কসবাদী সাহিত্যসমালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত প্রাথমিক ধারণা প্রদানই ছিল লক্ষ্য। এই সংক্ষেপণের ফলে অনেক মার্কসবাদী ধারণাকে অতি সরলীকরণ ও অতি সার্বিকীকরণ করা হয়েছে যা মার্কসবাদী অনেকের কাছে হয়তো আপত্তিকরই মনে হবে। তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে আমরা সাহিত্যতত্ত্বের এ আলোচনার পরবর্তী ধাপে উপস্থাপন করতে চাই মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব বা সাইকোঅ্যানালিটিকাল থিয়রি। চলবে

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ড্রোন হামলার কথা অস্বীকার করলো ইরান, তদন্ত চলছে
ড্রোন হামলার কথা অস্বীকার করলো ইরান, তদন্ত চলছে
শিল্পী সমিতির নির্বাচন, মিশা-ডিপজলে কুপোকাত কলি-নিপুণ
শিল্পী সমিতির নির্বাচন, মিশা-ডিপজলে কুপোকাত কলি-নিপুণ
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া