গত জুলাইতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে সেঞ্চুরি করেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সতীর্থদের এ ব্যাপারে জানালেও গণমাধ্যম ও বিসিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি। এতদিন বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন। তবে বুধবার রাতে বিসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, টেস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিয়ে ফেলেছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।
বিবৃতিতে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘অনেক দিন ধরে খেলা আসা ফরম্যাটকে বিদায় বলা সহজ কাজ নয়। আমি সবসময় উন্নতি করার চেষ্টা করেছি এবং বিশ্বাস করি টেস্টকে বিদায় জানানোর জন্য এটাই সঠিক সময়।’
এসময় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানান তিনি, ‘টেস্ট দলে ফিরতে সমর্থন দেওয়ার জন্য বিসিবি সভাপতিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাকে উৎসাহ দেওয়া ও সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস রাখার জন্য সতীর্থ ও সাপোর্ট স্টাফদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারাটা পরম সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয় এবং অনেক স্মৃতি আমি রোমন্থন করবো।’
টেস্ট ছাড়লেও সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলে যাবেন বলে জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘যদিও আমি টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছি, আমি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে যাবো এবং সাদা বলে খেলার সময় দেশের জন্য সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
অফ ফর্মে টেস্ট ফরম্যাট থেকে আগেই বাদ পড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৬ মাস পর গত জুলাইতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দারুণ এক ইনিংসও খেলেছেন। উপহার দেন ১৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস। কিন্তু এমন ইনিংস খেলার পরদিনই অভিমানে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিতে চেয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। পরে বিসিবির মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত আর ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতায় যাননি। তবে পাক্কা চার মাস পর মাহমুদউল্লাহ বিসিবির মাধ্যমে অবসরের ঘোষণা দিয়েই দিলেন।
তবে হারারে টেস্টের পঞ্চম দিনে মাঠে নামার আগেই মাহমুদউল্লাহকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন সতীর্থরা। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে টেস্ট ক্রিকেটে আর ফিরছেন না তিনি।
মূলত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর গুঞ্জন ওঠে মাহমুদউল্লাহ টেস্ট থেকে বাদ পড়ছেন। সেই গুঞ্জন সত্যিও হয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঠিক তার পরের একমাত্র টেস্টে বাদ পড়ে। এমনকি গত বছরের মার্চে বিসিবি ঘোষিত কেন্দ্রীয় টেস্ট চুক্তিতেও ছিলেন না।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। এরপর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ দলে থিতু হতে হয় তাকে। ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের হয়ে ৫০টি টেস্ট খেলেছেন। ৫টি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৩.৪৯ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রান করেছেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ১৫০ রানে। বল হাতে তার নামের পাশে আছে ৪৩টি উইকেটও।