মসজিদে বিস্ফোরণ: যেভাবে কাজ করছে সিআইডি

মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিআইডি’র কর্মকর্তারানারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির ডিআইজি মাইনুল হাসান। তদন্তের প্রকৃতি সম্পর্কেও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি এসব কথা বলেন। মামলাটি পেশাগত সর্বোচ্চ দক্ষতা দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সিআইডি’র ডিআইজি মাইনুল হাসান বলেন, ‘গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মসজিদে দুটি বিদ্যুতের লাইন ছিল। তার মধ্যে একটি বৈধ এবং একটি অবৈধ। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া মসজিদটি যেখানে নির্মাণ করা হয়, সেখানে কোনও ত্রুটি আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় গঠিত পাঁচটি সংস্থার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে সিআইডি চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করবে। যারা যারা এই ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হবে তাদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’সিআইডি’র ডিআইজি মাইনুল হাসান

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই সিআইডি পুলিশ ছায়া তদন্ত করেছে। অনেক আলামত সংগ্রহ করেছে। সেসব আলামত ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষা করে এবং স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব বিস্ফোরণের কারণ চিহ্নিত করে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যাদের গাফিলতি পাওয়া যাবে তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিআইডি’র কর্মকর্তারা

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন, সিআইডি পুলিশ নারায়ণগঞ্জের এসপি নাসির উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশিদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর বাবুল হোসেনসহ সিআইডি পুলিশের কর্মকর্তারা।

গত ৪ সেপ্টেম্বর এশার নামাজ চলাকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ছয়টি এসি বিস্ফোরিত হয়। এই দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৩৭ জনকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে এ পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচজনকে এখনও সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজনকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিআইডি’র কর্মকর্তারা

বিস্ফোরণের ঘটনার একদিন পর ফতুল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার এর তদন্তভার সিআইডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকে গঠিত পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

আরও পড়ুন-

মসজিদে বিস্ফোরণ: চিকিৎসাধীন পাঁচ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক

মসজিদে বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯

পরিবার প্রতি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চাইলেন মসজিদে নিহতদের স্বজনরা

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: গণশুনানি শুরু

মসজিদে বিস্ফোরণ: তিতাসের লাইনে মিলেছে লিকেজ

গ্যাস পাইপলাইনে ৬টি ছিদ্র, মসজিদ কমিটির ওপর দায় চাপালো তিতাসের তদন্ত কমিটি