ফাঁড়িতে রায়হানকে হত্যা: আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

রায়হান আহমদ

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে রায়হান আহমদ নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার  (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) মহানগর পুলিশ তাদের প্রত্যাহার করে নেয়।

তারা হলেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সৌমেন মৈত্র এবং এসআই আব্দুল বাতেন। এরমধ্যে রায়হান হত্যার মামলাটি প্রথমে তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন এস আই আব্দুল বাতেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার  আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে এ দুজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে গাফিলতি, এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়ার পলায়ন, সব মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।’

তিনি জানান, সৌমেন মৈত্রকে রংপুর জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। আব্দুল বাতেন আপাতত এসএমপিতেই আছেন।

এ নিয়ে রায়হান হত্যার ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও পাঁচ জনকে প্রত্যাহার করা হলো। এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে চার পুলিশ সদস্যকে।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর অফিস থেকে বের হয়ে বন্দরবাজার এলাকায় যাওয়ার পর হুট করেই এএসআই আশেক এলাহীর খপ্পরে পড়েন রায়হান আহমদ। আশেক তাকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যান। সেখানে টাকার দাবিতে পুলিশের পৈশাচিক নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রায়হান। এজন্য রাতে পুলিশের ফোন দিয়ে তার সৎবাবাকে ফোনও করেন রায়হান। ১০ হাজার টাকা নিয়ে পরিবার সদস্যরা রাতে ওই ফাঁড়িতে এলেও ততক্ষণে গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে পরিবারের কাছে ফেরত না দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেক এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করে। বরখাস্ত বাকি তিন জন হচ্ছেন– কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ ও টিটু দাস। প্রত্যাহার হওয়া অপর তিন জন হলেন−এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন। আর এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর। গত ৯ নভেম্বর এস আইন আকবরকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন:  

এসআই আকবরের মোবাইলফোন ও সিম কার্ড উদ্ধার 

সবাই মিলে রায়হানকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন এসআই আকবর 

এসআই আকবর ৭ দিনের রিমান্ডে 

রায়হান হত্যা মামলা র‌্যাবের কাছে হস্তান্তরের দাবি স্ত্রীর 

‘সিনিয়র অফিসারের পরামর্শে পালিয়েছিলাম’ (ভিডিও) 

অবশেষে এসআই আকবর গ্রেফতার 

আকবরকে পালাতে সহযোগিতা করায় আরেক এসআই বরখাস্ত

রায়হান হত্যার সুষ্ঠু বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এসআই আকবর কোথায়?

আলোচনায় এসআই আকবরের বাড়ি 

এসআই আকবরের টর্চার সেলের নাম ‘ভিআইপি রুম’!

রায়হানের লাশ তুলে ফের ময়নাতদন্ত করবে পিবিআই

পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যু: ৪ পুলিশ বরখাস্ত, ৩ জনকে প্রত্যাহার

মোবাইল নম্বরটি কার?

গণপিটুনির প্রমাণ মেলেনি সিসিটিভি ফুটেজে, দাবি কাউন্সিলরের

পুলিশ হেফাজতে যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ